আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শীতের পিঠার আচার-রীতি

হরবর করে কথা বলি, মনে যা আসে, পরে ভাবি কেন বললাম . . .

শীত এলেই গ্রামে গ্রামে পড়ে নানান পিঠা বানানোর ধুম, রস জ্বাল দিয়ে পায়েশ তৈরী। নিজেরা হৈ-হুল্লোড় করে খাওয়া আবার সেসব কুটুম বাড়ি পৌছানো। যেন এটা অলিখিত রীতিই এসব। মজাই হয় এই সব আচার-রীতিতে। কিন্তু এইসমস্ত উপঢৌকন কুটুমবাড়ি পৌছে দেবার দায়িত্ব পড়ে যার উপর তাকে যে মাঝে মাঝে দুরবস্হায় পড়তে হয় সেটা আর কারো আলোচনায় আসে না, যার ভোগান্তি থাকে তারই।

কিছু মানুষ দুই কুড়ি বছর যাবত শহুরে হয়েও যে কেন এইসব আচার-রীতি আকঁড়ে থাকে বুঝিনা। কাল যে ঝুম কুয়াশা (ঘন কুয়াশার চেয়ে এটাই বলতে মন চাইছে) পড়লো তাতে সকাল আটটার সময় ঘুম থেকে তুলে যদি বাক্স-প্যাটঁরা হাতে ধরানো হয় বেয়াই বাড়ি পৌছে দিতে, মেজাজ সপ্তমের যমজ ভাই চৌদ্দতে উঠাই স্বাভাবিক। ক্ষ্ট করলে কেষ্টরে পাবো ভবিষ্যতে , নইলে মায়ের ঝাড়ি বর্তমানে, ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তৈরী হলাম। আপুর শ্বশুড়বাড়ি মোটামুটি কাছেই, রিক্সায় উঠতেই হাতে দু'টা করে চারটা বড় বড় বক্স ধরায়ে দিলো, আবার পায়ের কাছেও দেখি ৩/৪ কেজি খাবার ধরার মতো পাতিল!!!!! আগের রাত থেকেই চলছিলো আয়োজন, কিন্তু নেয়ার ভার যে পড়বে আমার উপর বুঝিনি। অদ্ভুত ব্যালান্স রেখে রিক্সায় বসে ধুকে ধুকে কিছুদূর পথ চলতেই শুনি আশপাশের মানুষরা ডেকে বলছে - "এ্যাই যে, সবতো পড়ে গেলো।

পিঠার রস পড়ছে!!!!" রিক্সা থামিয়ে দেখি দুধ-চিতই-এর পাতিল কাত হয়ে দুধ পড়ে একাকার আমার পা। এতেক্ষন খেয়ালই করিনি, হাতের বক্সগুলো সামলাতে সামলাতে। কোন গল্পে যেন পড়ে ছিলাম, কোলে নিয়ে বসা রসগোল্লার হাড়ি ভেঙে রসে গা মাখামাকি, চটচটে অনুভূতি, পড়ে মজাই লেগেছিল, হাসিও। এতোক্ষনে সেই অবস্হা অনুধাবন করলাম, হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া একেই বলে আরকি। শেষমেষ ওই বাড়ি পৌছে সবার হি হি হাসির মাঝে হাত-পা-জুতা ধুয়ে শুকানো, আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফেরা।

আর সারপ্রাইজ শীতের পিঠা পেয়ে ওই বাড়ির মানুষদের প্রতিক্রিয়া? প্রচলিত একটা কথার মতোনই - "মন মতো আয়েশি খাওয়াইলে, দঈনবাড়ির জ্যেডীও বালা" ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।