আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যালেন্ডারের পাতায় আজ শীতের প্রথম দিন.........



ক্যালেন্ডারের পাতায় আজ শীত এলো...... অথচ শীত শুরু হয়েছে সেই সেপ্টেম্বরে। ডিসেম্বর এলেই এখানে হলিডের আমেজ.....ক্রিসমাস আর নতুন বছরের আনন্দ নিয়ে স্বপ্ন আর আনন্দ। ছেলেদের স্কুল বন্ধ হলো শুক্রবার স্কুল শেষ করেই। রাইয়ান স্কুল থেকে ক্যান্ডি নিয়ে ফিরলো আর এখন সারাদিন গুন গুন করে জিংগেল বেল জিংগেল বেল গান গায়। ভিন্ন দেশ ,ভিন্ন পরিবেশ এ জন্ম নেয়া আমাদের সন্তানের এভাবেই বড় হচ্ছে।

নিজেরা বাংলা বলি। বাংলায় টিভি দেখি। বাংলা খাবার খাই। নামাজ পড়ি। ঈদ করি।

ওরাও সব করে। তবু কোথায় ওরা জেনো অন্য রকম করে ভাবছে। অন্য রকম করে বড় হচ্ছে। এই যে স্কুল এবং বাসা এই রকম জীবন এই নিয়ে ওদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। রাশীক পড়ালেখার ফাঁকে পি এস ৩ গেইম নিয়ে ব্যস্ত।

রাইয়ান wii গেইম খেলছে। মাঝে মাঝে ইচ্ছা হলে বাইরে গিয়ে বরফে গড়াগড়ি খেয়ে খেলে আসছে। প্রত্যেক মানুষের জীবনে শৈশব বিশাল ভূমিকা রাখে। ওদের জীবন এখানে এই সব কিছুর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এখানকার প্রকৃতিতে ওরা বড় হচ্ছে।

এখানকার স্মৃতিগুলোই ওদের মনে জমা হচ্ছে। মন খারাপ করি না আর। আসলে শিকড় ছেড়ে চলে আসার পর নিজেদের নিয়ে ভাবাভাবিটা কমে গেছে। এখন মনে হয় ওরা বড় হোক। ভালো মানুষ হোক।

ওদের জীবনের সে স্বাচ্ছন্দ্যবোধগুলো এগুলোর জন্য দেশে থাকলে হয়তোবা বিশাল একটা প্রতিযোগীতার মধ্যে দিয়ে যেতে হতো। এখন তা নেই। একটা সাধারন জীবনে চাওয়া পাওয়াগুলোকে নিয়ে স্বস্তিতে থাকা যায়। কাল বিকালে ছেলেদের নিয়ে ঘুরতে বের হলাম। সন্ধ্যার পর বাড়ীগুলোর সামনে লাইটগুলো দেখতে ভালোই লাগে।

কত সুন্দর করে লাইট দিয়ে বাড়ীগুলো সাজায়। শপিং মল গুলোতে মানুষ আর মানুষ। কাল রাত থেকে অনেক বরফ পড়লো। সকাল বেলা চারিদিক সাদা মাঠের মত লাগছিলো। দুপুরের পর পরেই বের হলাম.......ঝিরঝির করে বরফ পড়ছিলো তখনো।

যে পথগুলোতে হাঁটছিলাম.....। তখনো বরফ পরিস্কার করা গাড়ী আসেনি। বাসার কাছের পার্কটায় গেলাম। ময়েকমাস আগেই পার্কটা ভরে থাকতো ছোট বাচ্চাদের কোলাহলে। একজন গাড়ী পরিষ্কার করছিলো।

আমি ছবি তুলছি দেখে বললো ভাবতে পারো আজ শীতের প্রথমদিন.....। বললাম ভাবতে পারিনা। তবু এটাই সত্যি। কত কিছু ই ভাবতে পারি না। সবুজ দেশের মেয়ে আমি।

কেমন অবলীলায় এমন বৈরী আবহাওয়ার দিনগুলো পার করছি। এখন মাঝে মাঝে মনে হয় ভালোই তো লাগে। এই যে আকাশ থেকে তুলার মত বরফগুলো যখন পড়তে থাকে। ভালোই লাগে। আগে ছবিতে দেখলে কেমন ছুঁতে ইচ্ছা করতো।

মনে হতো কোনদিন যদি তুষারের কোন দেশে বেড়াতে যাওয়া যেতো। বই পড়তে পড়তে আনমনা হয়ে ভাবতাম কখনো যদি ওভারকোট পড়ে ,কানটুপী লাগিয়ে গলায় স্কার্ফ দিয়ে বুট পড়ে হাঁটতে পারতাম......তুষার পড়তো আর আমি হেঁটে যেতাম অনেকদুর পথ..........। মানুষের সব ইচ্ছে পূরন না হলেও কিছু ইচ্ছে পূরন তো হয় ই....। যখন মন খারাপ থাকে। সবার জন্য মন কেমন করে।

দেশের জন্য। দেশের প্রিয় মানুষদের জন্য। মনে হয় হয়তো অবচেতনে এমন জীবনটাই চেয়েছিলাম........। নাহলে কি করে এতগুলো বছর কেমন কাটিয়ে দিলাম। এখানেই হয়তো কেটে যাবে আগামী দিন গুলো।

পথের গাছগুলো, আকাশ থেকে পড়া বরফগুলো এদের জন্য ও মন কেমন করে...... এভাবেই মেনে নিয়ে জীবন এগোয়......মানলেই সুখ। না মানলে দুঃখ বেদনা !

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.