আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকার কি বিশ্বাসঘাতকতা করলো? নাকি আওয়ামীলীগ?

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কাদের মোল্লা কে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন! আর এই রায় নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচিত ও সমালোচিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া। কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধের এই বিচার বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার-ই নয় বরং বাংলার মানুষের বহু প্রতীক্ষিত একটি আন্দোলন। যা বিগত ৪০ বৎসর যাবৎ ফেরী করে আসছে এই দেশের জনগণ। আর তাই তো এই রায় কে ঘিরে সাধারণ মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই উন্নত আর এইসব সাইটে বিভিন্ন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন পেশার শেয়ার করছেন এই রায়কে ঘিরে তাদের মন্তব্য আর তার কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ আমার এই পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধারলাম।

সাংবাদিক জ ই মামুন ফেসবুকে লিখেছেন, “কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড! যুদ্ধাপরাধের মামলায় গো আযম ছাড়া আর কারো মৃত্যদন্ড হবে বলে মনে হচ্ছে না”! ক্রাইম রির্পোটার ও ব্লগার আবু সুফিয়ান লিখেছেন, “রাজাকারদের সাথে গোপন চুক্তি করে জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো সরকার। শেইম অন শেখ হাসিনা। ছি...! চিহ্নিত রাজাকারের কাছে মাথানত করলেন শেখ হাসিনা”! চ্যানেল আইয়ের পরিচালক শাইক সিরাজ লিখেছেন, “পৃথিবীতে সত্য-মিথ্যার জয়-পরাজয় সবসময়ই ছিল। মিথ্যার জয় মানেই মানবতার অবক্ষয়। ক্ষয়িষ্ণু এই গোলক-ধাঁধায় আমরা।

যুগ যুগ ধরে এমনিভাবে চলে আসা অনাচারগুলো দৃঢ় রুপ ধারণ করছে। আজকের এই রায় আমাকে আবারও মনে করিয়ে দিল কতটা দুর্বল আমরা। কতটা অসহায় মানবজাতি। কতটা অসহায় বাংলাদেশ”! ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্র্সিটির প্রফেসর আহমেদ মোস্তফা কামাল লিখেছেন, “কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগেরর মধ্যে পাঁচটিই 'সন্দেহাতীত ভাবে' প্রমাণিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে ট্রাইব্যুনালের রায়ে। অভিযোগ গুলো প্রথম মন্তব্যে উল্লেখ করবো।

আপনারা যে-কোনো পাঁচটির কথা ভাবুন। এর একটিও যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে শাস্তি কী হওয়া উচিত? মৃত্যুদণ্ড? যাবজ্জীবন কারাদণ্ড? ১০/৫/৩ বছর কারাদণ্ড? বেকসুর খালাস? প্রাক্তন শিক্ষক আঞ্জন রায় বলেছেন, “মানি না- পারলে আরেকবার আমাকে আদালত অবমাননার আভিযোগে আভিযুক্ত করো। তবু বলবো এই রায় মানি না- আদালত মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে- আমার শহীদ স্বজন নিয়ে তামাশা করেছে। মিরপুরের কসাই বলে খ্যাত কাদের মল্লার যাবতজীবন কারাদন্ড মানিনা .... ধর্ষণ ও ৩৩৪জনকে একসাথে খুন করাসহ পাচটি প্রমানিত হত্যাকান্ডের শাস্তি যাবতজীবন হয় কিভাবে”? কল্যাণ রায় নামক একজন আওয়ামীলীগ’কে ভোট দিয়েছিলেন উল্লেখ করে আক্ষেপ করে বলেন, “আমি অপরাধ করেছি..... আমার শাস্তি দেওয়া হোক!!!জাতি সত্যিই কলংকমুক্ত হলো না। এই কুত্তাগুলো যতদিন এদেশে থাকবে ততদিন আমি আমার জাতীয় সংগীত গাইব না”! আবু ফায়সাল জিহাদ লিখেছেন, “কোন গোপন সমঝোতার রায় হলো , বুজলাম না |একই অপরাধ এ একজনের ফাসি হলো আর একজনের যাবজ্জীবন.....”! মামুন নামের একজন লিখেছেন, ফেসবুক জাগ্রত জনতার অভয়াশ্রম . আসুন হাঁক তুলি এই বিচার মানিনা মানবো না . ওই দিকে প্রতিপক্ষরা রাজপথ কাঁপাচ্ছে .. কি বুঝলেন ? আবুল কালাম আজাদ পলাতক তাই ফাঁসির রায় আর কাদের সাহেব কে !!!! .... দুজন এর তো একৈ অপরাধে অপরাধী তাহলে রায় অভিন্ন হৈলনা কেন? কারন এটা এক্টা রাজনৈতিক মেরুকরন যার ফলাফল খুব শিগ্রৈ আমাদের সামনে উম্মোচিত হবে. খালেদা হাসিনারা পালাক্রমে আমাদের মাথার উপর কাঁঠাল ভাংবে আর আম্রা ফেসবুকে ইস্টেটাস দেওয়ার বিষয় খুজে পাব . তাসাউফ এ বাকী বিল্লাহ ব্যাঙ্গ করে বলেছেন, বাকিদের (যুদ্ধাপরাধীদের) সম্ভব্য রায়ঃ গোলাম আজমের সম্ভাব্য রায় : একাত্তরে দুষ্টুমি করার জন্য আদালত হালকা বকে দেবেন।

নিজামীর সম্ভাব্য রায় : মুক্তিযুদ্ধের সময় বেশি নখরামি করার জন্য ৬ মাসের জেল। মুজাহিদের সম্ভাব্য রায় : ছয় মাসের জেল ও মৃদু বেত্রাঘাত। সাঈদীর সম্ভাব্য রায় : একগুচ্ছ রজনীগন্ধা ও এক গন্ডা লাল গোলাপ। সাথে এক লিটার মেশিন অয়েল। সাকা চৌধুরীর সম্ভাব্য রায় : আদালতে বেয়াদবি করার জন্য ও মুক্তিযুদ্ধে রাজাকারি করার জন্য ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড।

বিচারপ্রার্থীদের সম্ভাব্য রায় : একাত্তরে তোদের স্বজন মরে পঁচে গেছে। তোরা বেঁচে আছিস কেন? ফাজিল বদমাশের দল দুইটাকার বিষ কিনে আত্মহত্যা কর। যত্তসব নির্লজ্জ বেহায়া বরাহ কীটপতঙ্গ!! . রিয়াদ নামের আরও একজন কবিতা করে লিখেছেন, “রায় দিয়েছে|যে রায়ের প্রতি সম্মতি আছে কার?কেনো মানবো আমরা এ রায়?মৃত্যুদণ্ডে ¬ দাণ্ডিত করতে হবে|এ রায় ছল_কৌশল, বেঁচে থাকার|ভয়,ক্ষমতা ¬ হারাবার,ইস্যু হারাবার| মানি না,মানা উচিৎ না কাদের মোল্লার যাবতজীবন কারাদণ্ড____মৃত্যু চাই,ফাঁসি চাই! এম আলম ডানা লিখেছেন, “৩৪৪ জন হত্যা করেও যাবজ্জীবন ............!!! আওয়মিলীগ জনগনের জন্য রাজনীতি করেনা ,করে ভোটের জন্য ক্ষমতায় থাকার জন্য। স্বাধীনতা ব্যবসায়ী আওয়ামিলীগের মুখোশ উন্মচিত হয়েছে.........। স্বাধীনতা ব্যবসায়ী আওয়ামিলীগের... বিচার চাই”! “আমি কোন আগন্তুক নই” নামের একজন বলেছেন, “ বর্তমান সরকারের জনপ্রিয়তার যে আকাল তাতে সামনের নির্বাচনে জেতা অনেক কঠিন হবে।

বিশেষত ভোটারদের একটা বড় অংশ হতাশ হয়ে ভোটকেন্দ্রেই যাবে না। সেক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে সুন্দরমত একে একে সব যুদ্ধাপরাধীদের জেল থেকে ফুলের মালা পড়িয়ে বের করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে,তারা বড় গলায় বলবে মুক্তিযুদ্ধ বলে কোনকালে কিছু হয় নাই,ওটা ছিল ভাই-ভাই গৃহযুদ্ধ,মুক্তিযোদ্ধারা সুন্দরী নারীর লোভে,ভারতের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য যুদ্ধ করেছিল। ভেবেছিলাম নির্বাচনের আগে কয়েকটা ঘাতকের ফাসী হয়ে গেলে অন্তত কিছুটা শান্তি পাবো। এখন কি হবে বোঝাই যাচ্ছে,যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামীরা বের হয়ে আসবে, বিএনপি হয়তো ট্রাইবুনাল ভেঙ্গে দিবে,শুরু হবে নতুন ইতিহাস,মধ্যযুগে ফেরার ইতিহাস,পূর্ব পাকিস্তানে ফেরার ইতিহাস”। জিসাদ সেলিম সুজল নামের একজন লিখেছেন, “এত বড় খুনী কে যাবজ্জীবন? এর চেয়ে ঠাট্টা আর কি হতে পারে? গতকালের গণঢেউ দেখে....ট্রাইব্যুনাল কি রায় দিল আজ! রাজিব শাকিল নামের একজন লিখেছেন, ফাঁসি ছাড়া আর কিছু চাই না ফাঁসি ছাড়া আর কিছু চাই না ফাঁসি ছাড়া আর কিছু চাই না ফাঁসি ছাড়া আর কিছু চাই না না না না না না না না না না না না! প্রবাসী মুনির আহমেদ লিখেছেন, “সত্যের অবক্ষয় হয়েছে না সত্যের জয় হয়েছে সেটা ত কিছুই বুঝতে পারি নাই।

এ ট্রাইবুনাল নিয়ে অনেক প্রশ্নের জম্ম হয়েছে। এবং এ ট্রাইবুনালের সচ্ছতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। ট্রাইবুনালের পক্ষের সাক্ষীদেরকে নিয়ে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। আব্দুল কাদের মোল্লা ১৯৭২ হইতে ১৯৭৩ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা হলে ছিলাম তখন তার বিরুদ্ধে এসব বিচার করা হয় নাই কেন? সব মিলিয়ে কিছুই বুঝতে পারতেছি না”। শরিফ সিপন সন্দেহ প্রকাশ করে লিখেছেন, “কসাই এর রায় যদি হয় যাবজ্জীবন তাইলে বাকিরা যে বেকসুর খালাস হবে তাতে কোন সন্দেহ নাই.....কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজা মানি না।

ফাঁসি চাই এই রাজাকারের । সে যে অপরাধ করছে তা যাবজ্জীবন দিয়ে বিচার হয় না”। পার্থ তালুকদার কবিতায় লিখেছেন, “হাসছে রাজাকারের প্রেতাত্মা , কাঁদছে শহীদের আত্মা”! রিয়াজুল শরিফ এই রায়কে মানা যায় না উল্লেখ করে লিখেছেন, “এটা জাতীর জন্য অপমানজনক, দুর্বল আমরা, মিথ্যার জয় হল, আমরা এখনও পরাধীন”! টিং টং নামের আইডি থেকে লিখেছেন, “কাদের মোল্লারে ফাঁসিতে না ঝুলায় যাবজ্জীবন দিসে এর মানে ২ দিন পর সহজেই বের হয়ে আসবে জেল থেকে। এর থেকে বেকসুর খালাস দিলেও একই কথা ছিল। যে পলাতক তারে ফাঁসি দেয় আর যে হাতের কাছে আছে তারে এইভাবে ছাইড়া দেয়”! তিনি এইসব রায় লোক দেখানো কাজকাম না করলেও চলত বলে উল্লেখ করেন।

মোহাম্মদ রহমান মাহিন লিখেন, “বাংলাদেশের রাজনীতির পট পরিবর্তনের ইতিহাসে অাজকের দিনটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে! বিএনপি যুদ্ধাপরাধবিরোধী অবস্থানে আর আওয়ামীলীগ জামায়াতের সাথে জোটবদ্ধ বলেও মনে করেন তিনি। হৃদি মোতালেব নামক একজন নারী উস্মা প্রকাশ করে লিখেছেন লিখেছেন, “যুদ্ধাপরাধের এই ইস্যুটির সমাধান হয়ে গেলে আওয়ামীলীগ রাজনীতি করবে কি নিয়ে? নির্মূলের নামে পূর্নবাসনের এ রাজনীতির আবর্তে ভালোই আছে ওরা! তাছাড়া, লাইলা খালেদা নামক এক নারী লিখেছেন, জাতিগত ভাবে আশা ভঙ্গ আর কত? সাংবাদিক আদিত্তিয়া শাহিন লিখেছিলেন, বিয়াল্লিশ বছর পর কেবলমাত্র মুক্তিকামী মানুষ যুথবদ্ধ হয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। যা একাত্তরে দেশ স্বাধীনের পর থেকে মানুষ রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রনেতার কাছে, আইন ও বিচারের কাছে, নেতা ও রাজনীবিদের কাছে, প্রগতির কান্ডারের কাছে, ক্ষমতাপ্রাপ্ত শাসকের কাছে যা চেয়ে এসেছে তার কিছুই পায়নি। আজও পেল না। রাজনৈতিক স্বার্থ ও সময়ের প্রয়োজনেই যুদ্ধাপরাধ ইস্যু বেশ ক’বছর ধরে যেভাবে দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে, এটি হতেই থাকবে।

ধন্যবাদ পাঠক আমার এই পোস্টটি দীর্ঘ সময় মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য। আগামীকাল সকালেই হইত পত্রিকার শিরোনাম হবে ‘দেশের সবচেয়ে সফল রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী’! আওয়ামী লীগের মিছিল বের হবে, এই রায় মানি না! কাদেরের ফাঁসি চাই (সাজানো নাটকের অংশ)! সম্প্রতি বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছে। হইত অদূর ভবিষ্যতে বিএনপিই যুদ্ধাপরাধবিরোধী শ্লোগান তুলবে তা নয় কি? রাজনৈতিক স্বার্থ ও সময়ের প্রয়োজনেই যুদ্ধাপরাধ ইস্যু বেশ ক’বছর ধরে দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে এবং হইত এভাবেই চলতে থাকবে আরও দীর্ঘ সময়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.