আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাটের বেদন: কখন আসবে দমকল?

হাঁটা পথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে হে সভ্যতা। আমরা সাত ভাই চম্পা মাতৃকাচিহ্ন কপালে দঁড়িয়েছি এসে _এই বিপাকে, পরিণামে। আমরা কথা বলি আর আমাদের মা আজো লতাপাতা খায়।

সোনার বাংলা কখনো ছিল কি না সন্দেহ, কিন্তু এমন দিন ছিল যখন সোনার বাংলার স্বপ্ন জাগ্রত ছিল। আর ছিল পাটের গরব।

সেটা ষাট দশকের কথা। পাটের সোনালি আঁশকে ঘিরে সোনার বাংলার স্বপ্ন উড়াল মেলেছে কেবল। জাতীয়তাবাদ তথা জাতীয় উন্নতির খুঁটি হয়ে উঠেছিল পাট ও পাটকল। সেসব দিন কর্পূরের মতো উবে গেছে। পাট এখন এক জাতীয় ট্র্যাজেডির নাম।

রাষ্ট্রীয় লুণ্ঠন আর ধ্বংসাÍক কায়কারবারের এত বড় শিকার বোধ হয় অর্থনীতির আর কোনো খাতে হয়নি। পাটের বেদন তাই জাতীয় বেদন। পাটের কাহিনী তাই আমাদের দুর্নীতি, অবয় ও আÍঘাতী খাসলতের নিরেট কাহিনী। এবং কাহিনীটি চাপা দেওয়া হয়েছিল। তারপরও বারবারই পাটশ্রমিকদের ক্ষোভের আগুন আর হাহাকারের অশ্র“তে সেই কাহিনী সরব হয়েছে।

আবারও খুলনার ২৭ শ্রমিকনেতা গায়ে কেরোসিন ঢেলে মরতে গিয়ে পাট খাতের শ্রমিকদের বেশুমার দুর্দশার দিকে দৃষ্টি কেড়েছেন। ফাঁস করে দিয়েছেন পাটকল নিয়ে চলতে থাকা অনাচারের গুমর। বাংলাদেশের রাজনৈতিক জন্মপ্রক্রিয়া যদি অর্থনীতির কোনো একক খাতের কাছে ঋণী থাকে, তবে তা পাট ও পাটকল। পাটের বিকাশ আর বাংলার বিকাশ একসময় সমার্থক ছিল। গত শতাব্দীর প্রথমদিকের কথা।

কি রাজনীতি, কি অর্থনীতি, কোথাও পূর্ববাংলার কৃষকদের কোনো ঠাঁই নাই। তা হলে কী হবে, ইতিহাস তাদের জন্য একটা সুযোগ হাজির করেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বিশ্ববাজারে পাটের দাম অনেক বাড়ে এবং কোরিয়ার যুদ্ধ পর্যন্ত একনাগাড়ে তা বহাল থাকে। এর পূর্ণ সুযোগ নেয় বাংলার পাটচাষিরা। পাটের ফলন চাষির সামর্থ্য বাড়ায়।

পাটের বাণিজ্য গ্রামগঞ্জের একটা ব্যাপারিগোষ্ঠীকে সবল করে। এই নতুন গ্রামীণ চাষি-জোতদার আর ব্যবসায়ীরা দুটি ক্ষেত্রে তাদের নতুন অবস্থানকে কাজে লাগায়: শিক্ষা ও রাজনীতি। কৃষকের সন্তান প্রথমবারের মতো আধুনিক শিক্ষা নিতে যায় মফস্বলে, সেখান থেকে উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায়। তালে তালে ঢাকা প্রাদেশিক রাজধানী হওয়ায় আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পাওয়ায় তাদের বিকাশ হয় অপ্রতিরোধ্য। তারা সরাসরি মাথার ওপর চেপে বসা জমিদারদের রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ জানায়।

এরা কত বলবান ছিল তার প্রমাণ শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টির উত্থান। এই উদিত রাজনৈতিক শক্তি তাঁর নেতৃত্বে ১৯৩৫ সালের নির্বাচনে হিন্দু জমিদার আর মুসলিম নবাব-নাইটদের হটিয়ে প্রাদেশিক সরকার পর্যন্ত গঠন করে ফেলে। তাঁর হাত ধরেই পূর্ববাংলা রাজনৈতিকভাবে একদিকে কংগ্রেস আরেকদিকে মুসলিম লীগÑএই দুই অভিজাত বৃত্তের বাইরে এসে দাঁড়ায়। পূর্ববাংলায় আধুনিক গণতান্ত্রিক রাজনীতির সূচনালগ্নও সেটি। অন্য অনেক কিছুর সঙ্গে পাটের ভালো ফলন আর বর্ধিত দাম এই জয়যাত্রা সম্ভব করেছিল।

পরের কালে পাট রপ্তানির হিস্যা নিয়ে শেরেবাংলার উত্তরসূরিদের সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানি পুঁজিপতিদের বিরোধই ঠিক করে দেয় পাকিস্তানের ভাগ্য। পূর্ব-পশ্চিমের এই বৈষম্য থেকেই স্লোগান ওঠে, ‘সোনার বাংলা শ্মশান কেন?’। পাটচাষিদের জেদ আর পাটশ্রমিকদের লড়াকু মনোভাবের তাকদ পূর্ববাংলার মধ্যবিত্ত সমাজের স্বাধিকার আন্দোলনকে গণভিত দেয়। ঢাকার আদমজী-বাওয়ানি আর খুলনা-যশোরের শ্রমিক আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া কৃষক-সন্তানেরাই ছিল সে সময়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বর্শাফলক। বাঙালি জাতীয়তাবাদের নির্মাণ, সোনার বাংলার মিথ তৈরির শিরোপা আর সমৃদ্ধির সোনালি বলয় তাই পাটচাষি ও পাটশ্রমিকের মস্তকেই শোভা পাওয়ার কথা।

কিন্তু যা হওয়ার কথা এই পোড়ার দেশে তার বিপরীতটাই যে ঘটে! একাত্তরের পর আর সবকিছুর মতো পাট খাতেও শুরু হয় অধঃপতন। দেশভাগের পর পূর্ববাংলায় বেশ কটি পাটকল বসে। আদমজী এর প্রধানতম। তখন আদমজী কেবল জাতীয় শিল্পের মেরুদণ্ডই ছিল না, তা হয়ে উঠেছিল আইয়ুব-ইয়াহিয়াশাহি-বিরোধী আন্দোলনেরও ঘাঁটি। পাটশ্রমিকদের এই অবদান কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ তো দূরের কথা, বিশ্বাসঘাতকতা করা হলো তাদের সঙ্গে।

স্বাধীন বাংলাদেশ অনেকেই হঠাৎ রাজা বনে গেল আর দিনকে দিন রুগ্ণ ও আহত হলো পাট চাষ ও পাটশিল্প। পাটের সেই মরণযাত্রার চিত্রটি এ রকম: ১৯৭২ সালে ৬৯টি পাটকলে শ্রমিক ছিল এক লাখ ৬২ হাজার স্থায়ী এবং বদলি ৮০ হাজার। ১৯৮২ সালে এর ৩৫টি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিলে স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় দেড় লাখে। ১৯৯৪ সালে বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের ৩০ হাজার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পর স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৫ হাজার। বিজেএমসি ৩২ হাজার বললেও বর্তমানে ওই সংখ্যা ২৬ হাজারে ঠেকেছে।

১৯৭২-এ উৎপাদিত হতো প্রায় এক কোটি বেল পাট, এখন হয় ৪০ থেকে ৫০ লাখ বেল। যে দেশে একদা বৈশ্বিক পাট রপ্তানির ৭০ শতাংশ উৎপাদিত হতো, সে দেশে এখন ১০ শতাংশও হয় কি না সন্দেহ। পাটশিল্পের এই রুগ্ণতা শুরু হয় সত্তরের দশকে। মৃত্যুযাত্রা দেখা যায় আশির দশকের সংস্কার কর্মসূচির সুবাদে। বিশ্বব্যাংক ১৯৯২ সালে ‘দ্য জুট ম্যানুফ্যাকচারিং স্টাডি’ এবং ‘বাংলাদেশ রিস্ট্রাকচারিং অপশনস ফর দ্য জুট ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি’ শীর্ষক দুটি সমীা চালিয়ে তাদেরই অর্থায়নে পাট খাত সমন্বয় ঋণ কর্মসূচি (জেএসএসি) হাতে নেয়।

এই কর্মসূচি মোতাবেক ১৯৯৪ সালেই বাংলাদেশকে ২৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার কথা। কিন্তু মাঝপথেই প্রতিশ্র“ত অর্থ আসা বন্ধ হয় এবং পাটশিল্পেরও মৃত্যুঘণ্টা বাজে। বন্ধ হয়ে যায় এশিয়ার বৃহত্তম পাটকল আদমজী। আদমজীর বন্ধ হওয়ার এক বছর পর এক শ্রমিক সংবাদপত্রে বলেছিল, যেদিন কারখানার ভেঁপু বন্ধ হলো সেদিনই আমাদের ভাগ্যের কবর হলো। আদমজী বন্ধের বছরই ঘোষণা করা হয় জাতীয় পাটনীতি।

বলা হয়, মোট রপ্তানি আয়ের ৮ থেকে ১২ শতাংশ আসছে পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০৩-০৪ সালে এই হার চার শতাংশে নামে। মনে করিয়ে দিই, ১৯৭২-৭৩ সালে রপ্তানি-আয়ের ৯০ শতাংশই আসত এই খাত থেকে। যে দেশের আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূল এবং চাষিরাও বিশেষভাবে দ, যে দেশের সেরা জাতের পাটের চাহিদাও বিশ্বে বর্ধিষ্ণু, সেখানে এমন হওয়ার কারণ কী? বিপরীতে, ২০০৫ সালে ঘোষিত ভারতের পাটনীতিতে রপ্তানি-আয় এক হাজার কোটি রুপি থেকে ২০১০ সালে পাঁচ হাজার কোটি রুপিতে তোলার ল্য ঠিক করা হয়। যে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে পাটকল বন্ধ এবং পাটচাষিদের ভর্তুকি রদ করার কথা বলে, তারাই আবার ভারতকে পাট খাত চাঙা করায় ঋণ দেয়।

ভারত ৫১৪ কোটি রুপি বকেয়া ঋণ এবং সুদ মওকুফ করে, এর পাশাপাশি ৩০২ কোটি রুপি ভর্তুকিও অব্যাহত রাখে। আমাদের শাসকদের আর তাদের শাসকদের এই ভিন্ন আচরণের মধ্যেই বাংলাদেশের শিল্প ধ্বংস আর ভারতের শিল্প-বিকাশের রহস্য নিহিত বললে ভুল বলা হয় কি? এমনও উদহারণ রয়েছে, পাটজাত পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে বিজেএমসি দর দিয়েছে ৪০ ডলার আর ভারত দিয়েছে ৩৯ ডলার। পরে বাংলাদেশের কাছ থেকে ৩৫ ডলারে কিনে, সেই পাট ৩৯ ডলারে বিক্রি করে কইয়ের তেলে কই ভাজা হয়েছে। বিশ্ববাজারে কাঁচা পাট রপ্তানিতে ভারত বাংলাদেশকে পরাস্ত করেছে বাংলাদেশেরই পাট কিনে বিক্রি করার মাধ্যমে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সচিব, পাট মন্ত্রণালয়ের সাবেক পরিচালক মো. সিরাজুল হক খান খেদের সঙ্গেই বলেন, ‘ভারতকে হটিয়ে বিশ্ববাজার দখলের ল্য ছিল আমাদের।

এখন তারাই আমাদের হটাতে উদ্যত হয়েছে। ’ কোন পথে কাদের কারণে তা হয়েছে, তা নিয়ে অজস্র তথ্য ও যুক্তি দেওয়া যায়। কিন্তু এখানে এতটুকুই বলা যথেষ্ট যে পাট খাতের দম বন্ধ করার জন্য দায়ী আমাদের শাসক-কর্মকর্তাদের সাগরসমান দুর্নীতি, অদতা ও স্বার্থপরতা। অথচ বিস্ময়, দুর্নীতি নিয়ে গাজির কিসসা চলল, কিন্তু অর্থনীতির একটি স্তম্ভকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার অপরাধটি আলোচনাতেই এল না! আলোচনায় এল না, শিল্পবিরোধিতা আর রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনার ‘দুজনে দুজনার’ সম্পর্কটি। পাটের কাহিনী তাই বাংলাদেশের সার্বিক অবয়েরই কাহিনী।

সর্বদাই পাট সরকারের কুনজরে ছিল। বিজেএমসি সময়মতো পাট কেনার টাকা পায়নি। প্রথম আওয়ামী আমলে পাটকল সংষ্কারের জন্য মাত্র ১৭ কোটি টাকা যোগানো যায়নি। তারওপর দলীয় পাণ্ডারা জাতীয়করণের নামে কারখানাগুলোর বারোটা বাজায়। সরকারি নির্দেশে পাটের মৌসুমে বিজেএমসিকে পাট কেনা থেকে বিরত রাখা হয়, যাতে দলীয় ব্যাপারিরা একচেটিয়া ব্যবসা করতে পারে।

কৃষক বাধ্য হয় কম দামে ফড়িয়াদের কাছে পাট বেচতে। সেই পাটই আবার সরকার কেনে চড়া দামে। এভাবে লাভের গুড় পিঁপড়ায় খাওয়ায় পাটচাষি ও পাটকল উভয়ই সর্বস্বান্ত হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত এই ধারাই ঘটে চলেছে। আর পথে বসে লাখ লাখ পাটশ্রমিক।

দেশের সুপার মলগুলো ঠিকই বিদ্যুৎ পায় কিন্তু পাটকলে পৌঁছতে পৌঁছতেই তার দম ফুরায়। সরকারি দলের লেজুড়-পাণ্ডবেরা শ্রমিকনেতা সেজেও কম খেয়োখেয়ি করেনি। কিন্তু সব দোষ শ্রমিকের ঘাড়ে চাপানো হক কথা নয়, সত্যভাষণ নয়। পাট মন্ত্রণালয়ের এক সমীক্ষা অনুযায়ী ২০০৬ সালে লোকসান হওয়া ৪২১ কোটি টাকার মধ্যে শ্রমিক আন্দোলনের দায় মাত্র ৩০ কোটি টাকা। অন্যদিকে পাট কিনতে দেরির তি ১৪০ কোটি টাকা এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটসহ বিবিধ অশ্রমিক কারণে লোকসানি ১৩০ কোটি টাকা।

গত ৩৫ বছরে এ রকমটাই চলেছে। অথচ এর জন্য আজ অবধি কোনো মন্ত্রী, আমলা, রাজনীতিবিদদের শাস্তি হয়নি, মা চায়নি বিশ্বব্যাংকের রাশভারী আমলারা। ক্ষমতা ও দণ্ড সব সময় নিম্নগামী। তাই যারা পাটের সর্বনাশ ঘটিয়ে গর্দান মোটা করে তারাই আবার সর্বসম্মতভাবে সবার পাপের শাস্তি শ্রমিকের ঘাড়ে চাপায়। যুগ যুগ ধরে অর্জিত শিল্পদ শ্রমিক সব ভুলে পরিণত হয় রিকশাওয়ালায়, শ্রমিকের স্ত্রী-কন্যারা চলে যায় আদিম পেশায়, সন্তানদের লেখাপড়ার পাট চুকে যায়।

না খেয়ে মরে অনেকে। কিন্তু জানতে সাধ হয়, এই খাতের সম্ভাবনা, অর্জিত অভিজ্ঞতা, শ্রমিকের মেহনতের গরব, পাটের সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক ঐতিহ্য; সব ভাসিয়ে দেওয়ার সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মাশুল কি এসবের হোতাদের শোধ করতে হবে না? অর্থনীতির এই সোনার হাঁসকে যারা গোষ্ঠীস্বার্থের আগুনে ভাজা ভাজা করে খেল, হবে না তাদের বিচার? এই অভিজ্ঞতা, এই দতা এই প্রাযুক্তিক জ্ঞান কি মতাবানদের হামবড়া আর বিশ্বব্যাংকের কানপড়ায় অপচয়ের খাতে বিলীন হবে? নাকি অনন্ত দায়মুক্তির এই দেশে, সব অপরাধ জনগণের, খেটে খাওয়া মানুষের। তাদের ছাড়া আর সবারই থাকবে দেশের সম্পদ ও স্বাধীনতা উপভোগের অধিকার সবার, কেবল শ্রমিক হবে বঞ্চিত! একেই বলে মগের মুল্লুক। আমাদের ইতিহাস ও অর্থনীতিতে পাটশ্রমিক ও চাষীদের স্থান পিতৃতুল্য। তাই পাট ধ্বংস পিতৃঘাততুল্য অপরাধ।

তাই, কদিন আগে খুলনার ২৭ জন শ্রমিকনেতা যখন কাফনের কাপড় পরা শরীর কেরোসিনে ভিজিয়ে, সন্তানদের বুক চাপড়ানো কান্না সরিয়ে আত্মাহুতির আগুন জ্বালান, যখন ক্ষুধার্ত-নিঃস্ব শ্রমিকদের বাঁচাতে ব্যর্থ হয়ে নিজেদের পুড়িয়ে সবার অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করতে নামেন, তখন পাট খাতের শতবর্ষের বঞ্চনার ছাপই যেন তাঁদের চেহারায় ধরা পড়ে। ধরা পড়ে সত্যিকার শ্রমিকনেতার নৈতিক বল ও সৎ সংকল্প। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা তাঁদের কাছ থেকে শিখতে পারতেন নিষ্ঠার ব্যাকরণ, দেশপ্রেমের আচরণবিধি। পুলিশ তাঁদের আটকিয়েছে। দমকল বাহিনী পানি ছিটিয়ে তাঁদের হাতের আগুন নিভিয়েছে, গায়ের কেরোসিনকে ধুইয়ে দাহিকাশক্তি নাশ করেছে।

কিন্তু কে নেভাবে তাঁদের ক্ষুধার আগুন, তাঁদের প্রিয় পাটকল ধ্বংসের ফরিয়াদের জবাব দেবে কে? যে দুর্নীতির দাবানলে একটি জাতীয় শিল্পের অপমৃত্যু ঘটছে, তা নেভাবে কোন দমকল? কখন আসবে তারা?

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.