আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চলুন ঘুরে আসি সিউল গ্র্যান্ড পার্ক-পর্ব ১

গলাবাজ আর সত্যিকারের লেখক এই ব্লগে টিকে থাকে, আমি কোনটাই না

কোরিয়ান মানুষগুলোর মতো কোরিয়ান আবহাওয়াও বেজায় ফাজিল। সারা সপ্তাহ যদিও কোনমতে ঠিক থাকে কিভাবে যেন শনি বা রবিবারে একটা ঝামেলা করবেই। হয় পুরো মেঘলা, নাহয় বরফ আর না হয় কড়কড়ে রোদ। বরফের সিজনে বাইরে ঘোরার কথা ভাবাই যায়না। আর পুরো গরমেও না, সেই সাথে প্রায়ই থাকে বৃষ্টি।

সামার সিজনে পুরো ঝরঝরে একটা ছুটির দিন পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপারই বটে। আগেই ইন্টারনেটে দেখেছিলাম শনিবার পুরো দিন আকাশ ফকফকা থাকবে, রবিবার আকাশের মন খারাপ হবার সম্ভাবনা। তাই আমরা শনিবার কেই টার্গেট করলাম। সবার কাছে শুনেছি মোটামুটি সকালে না গেলে পুরোটা ঘোরা মুশকিল, তাই ঠিক করলাম সকাল ৯ টার দিকেই বাসা থেকে বেরিয়ে যাবো। শনিবার সকালে ঘুম বিসর্জন দিতে কোনভাবেই মন চায়না, ভেবেছিলাম সকাল ৭.৩০ বা ৮ টার দিকে উঠবো, কিনতু এক বেরসিক বেলজিয়াম থেকে সকাল ৬ টায় ফোন দিয়ে ঘুম ভান্গালো।

যাই হোক রেডি হয়ে ৯ টার দিকে সাবওয়েতে চেপে বসলাম। একটা চেন্জ সহ সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ টা স্টেশন বাসা থেকে। পুরো এক ঘন্টার জার্নি। শুক্রবার রাতে সোজু খেয়ে শনিবার সকালে প্রায় সব কোরিয়ান ঝিমায়। পুরো ট্রেনের মানুষগুলো মুরগির মতো ঝিমাচ্ছে।

তবে সঠিক স্টেশনে নামতে সচারচর কেউ ভুল করেনা। স্টেশনের নাম সিউল গ্র্যান্ড পার্ক স্টেশন। এক্সিট নং ২ দিয়ে বের হয়েই একদম অন্যরকম দৃশ্য। সামনে পিছনে ইয়া বড় বড় পাহাড়। অনেক লম্বা একটা রাস্তা চলে গেছে সোজা সামনের দিকে।

পার্কটা ঠিক কোনদিকে বুঝতে পারছিলাম না, তবুও সামনে যেতে লাগলাম। দেখি বেশ বড় একটা বিল্ডিং তার সামনে একটা ফোয়ারা, মনে হলো ওখান থেকেই পার্কে প্রবেশের পথ। এতবড় কোন লোকেশনে আসলে আবার আমার মাথা কাজ করেনা। কোনদিকে যাবো কোনটা বাদ দিয়ে কোনটার ছবি তুলবো এটা ভেবেই অনেক ছবি তোলা মিস হয়ে যায়। এই সাবওয়ে এক্সিট দিয়ে বের হয়ে পার্কে যাওয়ার পথ, পিছনে পাহাড় সাবওয়ে থেকে বের হয়ে সামনে লম্বা রাস্তা চলে গেছে কোথাও ইংরেজীতে কিছু লেখা নেই।

খুব অল্প দুএক জায়গায় লেখা। দুই জায়গায় দেখি কাউন্টার, বুঝতে পারছিলাম না কি করবো। এক মহিলা দেখি হাত ইশারায় ডাকলো। অনেকটা সিনেমা হলের দালালদের মতো। গেলাম, সে আমাকে বুঝালো এইটা প্যাকেজ টিকিট, চিড়িয়াখানা, ট্রাম কার আর কেবল কারের মোট সাড়ে সাত ডলার একজন।

আমি বল্লাম আর ঐ যে একটা ডলফিন শো আছে ওটা? উনি এমন ভাবে মাথা নেড়ে কি বুঝালেন মনে হলো সব ঐ টিকিটেই হবে। পরে বুঝেছি ফাঁকিবাজিটা কোথায়। এটাই পার্কে প্রবেশের মেইন বিল্ডিং, সামনে ফোয়ারা যাইহোক দুটো টিকেট কিনে সবার পিছু পিছু গেলাম, একটু সামনেই ট্রাম কারে ওঠার জায়গা। একটু পর পর গাড়ী আসে, লাইনে দাড়িয়ে উঠে পড়লাম। মিনিট পাঁচ সাতের পথ পাড়ি দিয়ে ওটা এক জায়গায় থামলো।

প্রায় সবাই নামলো, আমরাও তাদের পিছু পিছু নেমে গেলাম। বুঝলাম এটা চিড়িয়াখানার গেট। ইয়া বড় এক রয়েল বেন্গলের মাথার মূর্তি সামনে। রোদের উত্তাপ অতোটা না থাকলেও আতিরিক্ত আলোটা বেশ বিরক্ত করছিলো। এই বাহন কে ওরা নাম দিয়েছে ট্রাম কার চিড়িয়াখানার গেটের সামনে রয়েল বেঙ্গলের মূর্তি এই সিউল গ্র্যান্ড পার্ক টুরে চিড়িয়াখানার নানা রকম জীবজন্তু ছাড়াও আর যা যা দেখেছি সেগুলো পরের পর্বগুলোয় আসবে... -ডলফিন শো -স্নেক হাউজ -বেবী এনিম্যাল হাউজ -কেবল কারে করে পুরো চিড়িয়াখানার উপরে ঘোরা -রোজ গার্ডেন চলবে...



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।