আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ট্রুথ কমিশন অধ্যাদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট



ট্রুথ কমিশন অধ্যাদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিটঃ সত্য ও জবাবদিহিতা কমিশনের (ট্রুথ কমিশন) প্রতিষ্ঠার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মাশুক হোসেন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে গতকাল এ রিট আবেদন দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আদিলুর রহমান খান, উন্নয়ন বিষয়ক নীতিনির্ধারণী গবেষণার (উবিনীগ) নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার, আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ডা· দীপুমণি এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলান এ রিট আবেদনটি দায়ের করেন। আবেদনকারীদের আইনজীবী এডভোকেট এম আসাদুজ্জামান এ ব্যাপারে বলেছেন, বর্তমান সরকারের ট্রুথ কমিশন আইন করার কোন এখতিয়ার নেই। তিনি বলেন, ট্রুথ কমিশন আইন অনুযায়ী দোষ স্বীকার করা ব্যক্তি পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।

এটা এক ধরনের সাজা। এ সাজা দেয়ার এখতিয়ার আদালত ছাড়া অন্য কারও নেই। আজ এ রিট আবেদনের শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। গত ৮ই জুন প্রেসিডেন্ট 'স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ অধ্যাদেশ' জারি করেন। এই অধ্যাদেশের আওতায় প্রতিষ্ঠা করা হয় পাঁচ মাস মেয়াদি 'সত্য ও জবাবদিহিতা কমিশন' যা ট্রুথ কমিশন হিসেবে পরিচিতি পায়।

দুর্নীতির মামলায় অনধিক দুই বছর সাজাপ্রাপ্ত কেউ সত্য ও জবাবদিহিতা কমিশনে আবেদন করে সাজা মওকুফ পেতে পারবেন। রিট আবেদনে বলা হয়, ট্রুথ কমিশন অধ্যাদেশের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কলামে দুর্নীতি সংক্রান্ত অপরাধের বিচার নিষ্পত্তির জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে এই অধ্যাদেশ প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে। এই বিধান সংবিধান পরিপন্থি। কারণ, সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যথাযথ আদালত ছাড়া ফৌজদারি অপরাধের বিচার ও সাজা দেয়ার ক্ষমতা অন্য কোন কর্তৃপক্ষের নেই। আবেদনে আরও বলা হয়, ট্রুথ কমিশনকে মানুষের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তসহ অন্যান্য অধিকার ক্ষুন্ন করার যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তা-ও সংবিধান পরিপন্থি।

রিটে বলা হয়েছে, ট্রুথ কমিশন অধ্যাদেশের ২৯ ধারায় বলা আছে, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিচার বিভাগের কাছে সহায়তা চাইলে বিচার বিভাগ ট্রুথ কমিশনকে সহায়তা করতে বাধ্য। এই বিধান সংবিধানের মূল কাঠামো পরিপন্থি। কারণ, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট কোন বিষয় রেফার করলে সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট পরামর্শ দিতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে সরকার কেবল বিচারক নিয়োগ করতে পারে। ট্রুথ কমিশন অধ্যাদেশের বিধান স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করবে।

আবেদনে আরও বলা হয়, সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রত্যেকটি অধ্যাদেশ সংসদ অধিবেশন শুরু থেকে ৩০ দিনের মধ্যে সংসদে উপস্থাপন করতে হবে। তবে ট্রুথ কমিশন অধ্যাদেশ এমনভাবে করা হয়েছে যাতে এটি সংসদে উপস্থাপন না করা হয়। তাই সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদের প্রয়োগ এক্ষেত্রে যথাযথভাবে হয়নি। সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় জরুরি প্রয়োজন ও নির্বাচন সংক্রান্ত ছাড়া কোন অধ্যাদেশ জারি করতে পারে না দাবি করে রিটকারীদের আবেদনে বলা হয়, ট্রুথ কমিশন অধ্যাদেশ জরুরি প্রয়োজন ও নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ের মধ্যে পড়ে না। তাই এই অধ্যাদেশ জারি প্রেসিডেন্টের এখতিয়ার বহির্ভূত।

রিটে প্রেসিডেন্টের সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও ট্রুথ কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.