আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"বৃষ্টি" তোকে আমি খুব মিস করি । আমার এই দিনটি তোকে উৎসর্গ করলাম ।

তুমি সাদা ক্যানভাস, আমি রং মাখা তুলি।

পৃরান ঢাকার ঠাকুর দাস লেন এ একজন আপু ও আমরা ৩ বান্ধবী মিলে ২ রুমের একটা ফ্লাট নিয়ে থাকতাম । আমি জগন্নাথে পড়তাম । একদিন সকালে প্রাইভেট পড়ে ফিরে এসে বারান্দায় বসে চা খাচ্ছি । এমন সময় একটি মেয়ে আসলো ।

আমি আমার রুমে বসতে দিলাম । এবং চা বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়ন করলাম । পরে মেয়েটি জানাল সে আমাদের এখানে থাকতে চায় । ও ওর ফ্যামিলির কথা জানালো । ওর বড় ভাই আর ভাবী ছাড়া সংসারে আর কেউ নেই ।

ভাবীর সাথে বনিবনা নেই বলে মিরপুর ছেড়ে এখানে খাকতে এসেছে । ও পড়ত কবি নজরুল কলেজে । ওর প্রতি আমি একটা টান অনুভব করলাম । আমি এক বাক্যে রাজী হয়ে গেলাম । বাগড়া বাজাল সিনিয়র আপু ।

আমি তখন বললাম "আমি মামার বাসায় চলে যাব বৃষ্টিকে আমার বেডে থাকবে " আপু আমাকে খুব স্নেহ করতেন । তাই রাজি হয়ে গেলেন এবং আমাকেও যেতে দিলেন না । সেইদিন বৃষ্টি চলে গেলো । কিন্তু বৃষ্টির আর দেখা নাই । প্রায় একমাস পরে সকালে প্রাইভেট পরে এসে বারান্দায় একটা চিরকুট পাই ।

তাতে লিখা ছিল "মিতু আমাকে ক্ষমা করো । আমি তখন আসতে পারি নাই কারন আমার ভাই তার পরদিন মারা গেছেন । আমি আগামী পরশু আসব " চিঠিটা পরে আমিও এক পশলা কাদঁলাম । ও আসল । সেই থেকে বৃষ্টির আর আমার বন্ধুত্ব শুরু হয় ।

আমার ফ্যামিলির সবাইকে ওর কথা বললে ওরা সবাই ওকে নিজের মতো করে নিয়েছেন । আমার বাবা মা-মনি, আপুরা, ভাইয়া সবাই ওকে খুব স্নেহ করত । খুব মজার কাটত সেইসব দিনগুলি । প্রতি শুক্র বারে রেড়াতে যেতাম । বর্ষার মধ্যে রিক্সার হুড ফেলে দিয়ে চিৎকার করে ও আর আমি গান গাইতাম ।

সারারাত জেগে একই গল্পের বই দুজন মিলে পড়তাম । মারামারি করতাম । আমি ওকে একাউন্টিং, পরিসংখ্যানের অংক করাতাম । একবারে না বুঝলে চুল ধরে টান দিতাম । এত গাধা হবে কেন ? পরীক্ষা শেষ ।

আমি মতিঝিলে চাকরী পেলাম । ও চাকরী নিয়ে বেইলী রোডের বি পি ডব্লিউ ক্লাব হোস্টেলে উঠে যায় । আমি খুব কেদেছিলাম । আমার মনে হত আমি আমার বোন কে হারিয়েছি । ও প্রতি বৃহস্পতি বারে অফিস ছুটি হলে আমার কাছে চলে আসত ।

ও ভাল রাধতে জানত । শুক্রবারে খুব মজার মজার রান্না হত । ওর একবার টাইপয়েড জ্বর হল । ছুটি নিয়ে আমার কাছে চলে আসল । আমি ওর মাথায় পানি ঢালতাম আর কাদঁতাম ।

আল্লাহর কাছে বলতাম "আল্লাহ তুমি ওকে সুস্থ করে আমাকে অসুস্থ করে দাও" । আস্তে আস্তে ওর জ্বর ভাল হয়ে গেল । ৬ মাস পরে আমি চাকরী চেন্জ করে বাংলামটর আসলাম এবং একই হোস্টেলে উঠলাম ভাগ্যক্রমে ৩ মাস পরে একই রুমে সিট পেলাম । ওর সাথে একটা ছেলের সাথে প্রেম হয় । তাই প্রতি শুক্র বারে ও বেড়াতে চলে যেত সেই ছেলের সাথে ।

আমি রুমে বসে বসে বই পড়তাম । এমনি এক দিন রাত ১২.০১ মিনিটে আমার মোবাইলে এস এম এস আসে । পাশের বেড থেকে ও পাঠায় । ফ্রেন্ডশিপ এসএমএস । মেসেজ পড়ে আমিও থেঙ্কস দিয়ে মেসেজ দেই ।

সকালে উঠে দেখি আমার বালিশের নিচে ফ্রেন্ডশীপ ব্রেসলেট । আজ সেই দিন । কিন্তু আজ আর ওর এসএমএস পাই নাই । আজ ও অনেক দূরে । আমাকে ভুলে গেছে ।

ওর সাথে আমার দীর্ঘ ২ বছর কোন সম্পর্ক নাই । যেই ছেলের সাথে প্রেম ছিল তার সাথে বিয়ে না হওয়া নিয়ে ওর সাথে আমার দ্বন্দ্ব বাঁধে । আমি গোপনে খোঁজ নিয়েছি । ওর বাবু হয়েছে । আজ ওকে আমি খুব মিস করছি ।

আল্লাহ বৃষ্টিকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখি করুন । আমিন ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.