আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবন যখন থমকে দাঁড়ায়

কিচ্ছু বুঝি না

জীবনে সম্পর্কের টানপোড়নে পড়েনি এমন মানুষ পৃথিবীতে খুব কম আছে। হয়তো আমরা কেউ স্বীকার করবো কেউ করবোনা। কিন্ত এই সময়টা আমরা তেমন কারো সহানুভূতি পাইনা। বরং ছেকু, দেবদাশ এইসব উপহাস করি। কম দুঃখে আমার জেমস দাদা আর গায়নি, পৃথিবীকে এই টকু অনুরোধ হায়! উপহাস কররো না নিয়ে হৃদয়, দেবদাশ বলোনা আমায়।

যারা এমন একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যায় তাদের এই সময়ের থেকে বের হয়ে আসার জন্য কয়েটি টিপস। ১। প্রথমে চিন্তা করুন সম্পর্কটা কেমন করে ভেঙ্গে গেল এবং কেন ভেঙ্গে গেল। আপনাকে একটা বিষয়ে খুব ভাল ভাবে পরিস্কার হতে হবে যে, এটা আপনার একার কোন দোষ না অথবা এখানে আপনার কোন দোষই ছিল না। আপনি যখন এটা চিন্তা করবেন তখন এটা আপনার কাছে সবকিছু পরিস্কার হয়ে যাবে যে একটি সম্পর্ক তৈরী করতে দুইজন মানুষের দরকার হয় কিন্তু এটা ভেঙ্গে ফেলতে একজন নীতিহীন মানুষই যথেষ্ট।

এই চিন্তা গুলি হয়তো ভবিষ্যতে আপনাকে আবার ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া থেকে বাঁচাবে। ২। আপনার কষ্টগুলোকে উপেক্ষা করবেন না। যদি আপনার কাঁদতে ইচ্ছে করে তবে মন খুলে কাঁদুন। কষ্ট পাওয়া, নিজেকে একদম একা মনে করা, জীবনের সব কিছু ওলট পালট হয়ে যাওয়া, এসব আপনার মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক।

তবে এখানে যে আপনার নিজেরও একটু হাত ছিলো সেটা ভাবা কিন্ত অন্যায় নয়। তবে এটা আপনাকে অবশ্যই মানতে হবে যে, এপনি আসলেই একজন ভাল মানুষ এবং আপনার সাথে যা করা হয়েছে সেখানে আপনার করার তেমন কিছুই ছিল না। তবে এটুকু যদি স্বীকার করেন যে আপনিও এর কিছুটা হলেও দায়ী তাহলে সব কিছু ভুলে যেতে আপনারই সুবিধা হবে। ৩। তার সাথে সব যোগাযোগ একেবারে বন্ধ করেদিন।

অবশ্যই দেখা করবেন না। ফোন, ম্যাসেন্জার সবকিছু থেকে তাকে মুছেদিন। অনেক সময় আমরা বলি যে, আমরা ভাল বন্ধু হয়ে থেকে যাবো। এই কাজটি কখনো করতে যাবেন না। যতদিন পর্যন্ত না তাকে আর দশটা মানুষের মত ভাবতে পারবেনা ততদিন কোন যোগাযোগ করবেন না।

৪। সবকিছু মাথা দিয়ে চিন্তা করুন। যতবার খুশি যুক্তি দিয়ে এটা চিন্তা করুন ঠিক কোন কোন কারনে এই সম্পর্কটা টিকেনি। চিন্তা করলে দেখবেন এর পিছনে নিশ্চয় কোন একটা কারন আছে যেটা অদৌ ভাল কিছু না। আপনি হয়তো তার সাথে কিছু ভাল সময় কাটিয়েছেন কিন্তু শুধু এটাই একটা সম্পর্ক টেনে নিয়ে যাবার জন্য যথেষ্ট না।

সত্যিকার ভাবেই এই সম্পর্ক আপনার জন্য ভাল কিছুই বয়ে নিয়ে আসতো না। ৫। আপনার রাগ ও ঘৃনা গুলোকে মোকাবেলা করুন। এই সময়টা আপনি রাগে অন্ধ হয়ে থাকবেন। এটাই স্বাভাবিক।

আপনার এই রাগ বা ঘৃণা কতটা তীব্র হবে এবং কতদিন এটা আপনাকে ভোগাবে তা নির্ভর করে কখন, কোথায় এবং কিভাবে আপনাদের ছাড়াছাড়িটা হয়েছে তার উপড়। আপনার জীবনের এই সময় গুলো নষ্ট করে দেবার জন্য তাকে শাস্তি দিতে ইচ্ছা করবে। মনে হবে আপনি এটা কোন মতেই মেনে নিতে পারছেন না। নিজেকে ঘৃনা করতে ইচ্ছা হবে। প্রথমে আপানর এই অনুভূতি গুলোকে ঝেটিয়ে বিদায় করুন।

যাকে আপনি কোন ভাবেই ঠিক করতে পারেনি তার উপড় রাগ করে নিজেকে ছিন্নভিন্ন করার কোন মানে হয়না। ৬। ভাল বন্ধুদের সাথে কথা বলুন। একজন ভাল বন্ধু সব সময়ই আপনাকে বুঝবে। সব সময় তাদের আশেপাশে থাকুন যারা আপনাকে ভালবাসে, যারা আপননাকে বুঝতে পারে।

তাদের ভালবাসায় আপনি আবার বুঝবেন আপনি একা নন। আপনাকে সবাই ভালবাসে এবং আপনি ভালবাসা পাওয়ার মত একজন মানুষ। ৭। আপনার অনুভূতি গুলোকে লিখুন। গল্প, কবিতা, নিজের ভাবনা, অনুভূতি যা ইছে করে তাই লিখুন কিন্তু নিজের অনুভূতি গুলোর সাথে সৎ থাকবেন।

কে কি মনে করলো তাতে কিছু আসে যায় না। এক সময় আপনি অবাক হয়ে লক্ষ করবেন আপনি আপনার নিজের জীবন থেকেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছু শিখছেন। জীবনে একটা সম্পর্ক টিকেনি তার মানে এই না যে, আপনি জীবনে যা হতে চান সেটার রাস্তায় এটা বাধা হয়ে দাঁড়াবে। জীবনের ভুল থেকে শেখার রাস্তা কখনো বন্ধ করবেন না। ৮।

সব কিছু একদম পরিস্কার করে ফেলুন। একটার শেষ মানেই আর একটা নতুন জীবনের শুরু। নিজের সব কিছু পরিস্কার করে নতুন কিছু আসবার জায়গা করে দিন। উপহার, চিঠি, ছবি সহ যা কিছু আছে সবকিছু একেবারে নষ্ট করে ফেলুন। এগুলো আপনাকে শুধু একই জায়গার বন্দি করে রাখার চেষ্টা করবে।

আপনি আপনার মুক্ত চলার পথে এগুলোকে কখনো বাধা হয়ে আসতে দিবেন না। ৯। সময় কে উপভোগ করুন। অনেক সময় কিছু জিনিষ আছে যেমন কিছু গান বা কোন জায়গা বা কোন ছবি যা আপনাকে আপনার পুরোনো সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দেবে যা আপনাকে অনেক মনকে আরও খারাপ করে দেবে। সেগুলোকে পাত্তা না দিয়ে সময়টাকে উপভোগ করুন।

সেই খারাপ স্মৃতির গুলোকে বদলে ফেলে নতুন স্মৃতি তৈরী করুন ভবিষ্যতের জন্য। ১০। জীবনের সবখানে আনন্দ খুজে নিন। সেটা হতে পারে বন্ধুদের সথে আড্ডা দেয়া, পরিবারের সাথে সময় কাটানো, কোথাও ঘুরতে যাওয়া কিংবা ভাল কোন বই পড়া বা সিনেমা দেখা। যে কোন কিছুই হতে পারে।

আপনার সব চেয়ে ভাল প্রতিশোধ নেয়া হবে নিজে সবচেয়ে ভাল থাকা। ১১। কখনো নিজেকে নিষ্ক্রিয় রাখবেন না। নিজেকে ব্যাস্ত রাখুন। নিয়মিত শরীর চর্চা করুন।

প্রতিদিন সময় করে কিছু সময় দৌড়ান অথবা খেলাধুলা করুন। এগুলো আপনার মনকে একদম ফ্রেস রাখবে আর আপনার রাগ ঘৃণা গুলোকেও আস্তে আস্তে কমিয়ে দেবে। ১২। যেতে দিতে শিখুন। যে চলে গেছে তাকে নিয়ে মন খারাপ করে থাকার কোন মানে হয় না।

হয়তো তার সাথে আপানার অনেক কিছু মিল ছিল বা তার অনেক কিছু আপনার ভাল লাগতো। নিজেকে অভিনন্দিত করেন যে আপনি তাকে ভালবেসে ছিলেন কিন্তু সেটা সে ধরে রাখতে পারেনি। এটা তার ব্যার্থতা। আপনি ভালবেসে যে কোন জনকেই সুখী করতে পারবেন। হয়তো এইবার আপনার ভালবাসা আপনাকে কিছু দেয়নি কিন্তু হয়তো পরের বার আপনি আপানার সত্যিকার ভালবাসা খুজে পাবেন।

১৩। সময় নিন। এমন একজনকে খুজুন যাকে আপনি বিশ্বাস করতে পারেন এবং যার কাছে গেলে মনটা ভাল হয়ে যায়। এতে যত সময় লাগে লাগুক। একজন ভুল মানুষের সাথে থাকার চেয়ে একা থাকা অনেক ভাল।

হয়তো একদিন আপনি আপনার জন্য সঠিক মানুষটি খুজে পাবেন। ১৪। সব কিছু ইতিবাচক ভাবে চিন্তা করুন। আপনি এখন স্বাধীন, অতএব আপনি যে কারো সাথে ঘুরতে পারেন। নিজের ইচ্ছা মত মজা করতে পারেন, আপনাকে কেউ কোন কথা শুনাতে পারবে না।

নিজেকে পরিবর্তন করুন যা আপানর চিন্তাধারা কেও পরিবর্তন করবে। নিজেকে নতুন করে সাজান। অন্যের মতামতকে সন্মান করুন এনং নিজের প্রতি সৎ থাকুন সব সময়। ১৫। এই শেষ কথাটি আমি বিশেষ ভাবে বলবো সে কখনো আর তাকে ফিরে নেবার চিন্তা মাথায় রাখবেন না।

আপনি যদি মনে করে থাকেন যে, সে তার ভুল বুঝতে পারবে এবং ফিরে আসবে তারপর আপনি তাকে আবার ফিরে নিবেন তাহলে এটা থেকে আপনি কোন দিন বের হয়ে আসতে পারবেন না। যে একবার যেতে পারে সে বারবার চলে যাবে। যা চলে গেছে তা গেছে, সেটা একদম মাথা থেকে বের করে দিবেন। পোষ্টটা দোস্ত প্রিয়তিকে উৎসর্গ করলাম।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.