আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারীর সমঅধকিার বনাম পুরুষরে প্রসব বদেনা (২য় কস্তি)ি



১ম র্পব Click This Link আসলে নারী পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়, প্রয়োজন নেই এবং উচিৎও নয়। যেমন একজন পুরুষ ৪জন স্ত্রী গ্রহন করতে পারে। নারীও ৪জন স্বামী গ্রহন করতে পারে। কিন্তু সেটা একত্রে নয়। একজনের সাথে বিচ্ছেদের পর অন্যজন, এভাবে।

নারী যদি ৪জন স্বামী একসাথে নিতে পারতেন তাহলে সন্তানটির পিতা কে হবেন! কি বিশৃ অবস্থা বলুনতো। আসলে কোন নারীই তার একাদিক বিবাহ কামনা করেনা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে তারা মূলত নারীর একটি মর্যাদাকর অবস্থাকে মর্যাদাহীন করারই প্রয়াস পাচ্ছেন। মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ এবং তাদের কল্যানকর জীবন পদ্ধতিও তিনি দিয়েছেন। এই মানব সমাজের জন্য উত্তরাধিকারের কোন পদ্ধতিটি সবছে ভারসাম্যপূর্ণ, ন্যায্য, ইনসাফ ভিত্তিক এবং বৈজ্ঞানিক তা পৃথিবীর স্রষ্টাই সবছে ভাল বুঝেন।

এবং সেই মোতাবেকই তিনি বন্টন নীতি ঘোষনা করেছেন। যারা ইসলামকে নিজেদের ধর্ম বলে বিশ্বাস করেন, দাবী করেন এবং কুরআনকে ধর্মগ্রন্থ হিসাবে মানেন, কোন প্রকারেই কুরআন বর্ণিত উত্তরাধিকার নীতির বিরোধিতা করার তাদের কোন সুযোগ নেই যতক্ষন নিজেদেরকে মুসলিম দাবী করেন। অবশ্য গুটি কয়েক প্রগতিবাদী ছাড়া ইসলামের উত্তরাধিকার নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ নারীরা নেই। আল্লাহ প্রদত্ব নীতিকেই এদেশ সহ সারা বিশ্বের মুসলিম নারীরা সবছে ভারসাম্যপূর্ণ এবং ইনসাফপূর্ণ মনে করেন। উত্তরাধিকারের সমঅধিকার দিলেই নারীর পিছিয়ে পড়ার সমস্যার সমাধান হবেনা।

পিছিয়ে পড়ার কারন উত্তরাধিকার সম্পত্তি কম বলে নয় বরং সমস্যা হল অন্যান্য সামাজিক কারন। যেমন নারী যৌতুকের নির্যাতনের শিকার হয় তার স্বামীর সম্পদের প্রতি লোভের কারনে। চাকুরীতে সমস্যা হল সহকর্মীদের লোলুপ দৃষ্টি। শিক্ষার ক্ষেত্রে কখনো কখনো সহশিক্ষা সমস্যা অথবা চলাচলের অনিরাপদ পথ ইত্যাদি। এখন জি¹াসা হল নারী পিতার সম্পদে সমান ভাগ পেলেই কি এই লোভ, লোলুপ দৃষ্টি আর অসৎ চরিত্রের সমস্যার সমাধান হবে? নারী কি পাবে সমস্যা মুক্ত এগিয়ে যাওয়ার একটি সুন্দর সমাজ? আসলে পিতার সম্পদে সমান ভাগই নারী সমস্যার মুক্তির পথ নয়।

প্রয়োজন লোভ, হিংসা, লোলুপ দৃষ্টি আর অসৎ চরিত্রমুক্ত একটি সুন্দর সমাজ গড়ে তোলা। প্রয়োজন নারীকে সকল ক্ষেত্রে কাজ করা এবং শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ দিতে হবে, সম্মান দেখাতে হবে, সহযোগিতা করতে হবে, সাহস যোগাতে হবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। তা যেন অশালীন বা দৃষ্টিকটু না হয়। আমাদের সামাজিক ঐতিহ্য আর পারিবারিক বন্ধনকে অবহেলা করে নয়। সে জন্য নারীর সমঅধিকার নয় ইনসাফ ভিত্তিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

উত্তরাধিকারের বাহিরের দিক নয় ভিতরের কল্যানকর ব্যবস্থা নারীর জন্য উপকারী। এ ব্যাপারে একটা গল্প বলি। এক গ্রামের দুই জন লোক মেনুমিয়া ও কামু সর্দার। তাদের মধ্যে খুবই বন্ধুত্ব। মূর্খ্য কিন্তু মোড়ল টাইপের লোক মেনুমিয়া শহরে এসেছে কোন এককাজে।

শহরে এসে এক শপিং মলে গিয়ে সে একটা বিষয় দেখে খুবই অবাক হল। সে দেখলো যে একজন বয়স্কা, মোটাসোটা টাইপের কুৎসিত মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। হটাৎ কি একটা যন্ত্র এলো এবং দরজা খুলে গেলে ঐ মহিলা ঢুকে গেল। দরজা বন্ধ হয়ে গেল এবং উপরে উঠে গেল। কিছুক্ষন পর দেখা গেল ঐ যন্ত্রটি আবাও এলো এবং ভিতর থেকে বেরিয়ে পড়লো একজন সুন্দরী, স্মার্ট যুবতী।

গ্রামের মূর্খ্য লোকটি মনে করলো এটা বুঝি মানুষকে সুন্দর করার যন্ত্র। যাই হোক সে বাড়ী গিয়ে বউকে বললো,বউ শোন পরেরবার ঢাকা গেলে তোমাকে নিয়ে যাব। তুমি আর কালো থাকবেনা। যন্ত্রের মাধ্যমে তোমাকে সুন্দরী যুবতী করে নিয়ে আসবো। মেনুমিয়ার কথা তার কালো বউ খুব খুশি হল এবং গ্রামে ব্যাপক ভাবে প্রচার করতে লাগলো।

এইদিকে কামু সর্দারের বউও কালো হওয়ায় সেও তার কাছে আব্দার করলো যে তাকেও যেন ঢাকায় নিয়ে সুন্দরী অপরুপা করে আনা হয়। এবং বিষয়টি এমন পর্যায়ে চলে গেল যে এখন আর না বলার সুযোগ নেই। কিন্তু কিছুটা শিক্ষিত কামু সর্দার খবর নিয়ে জানলো যে ঢাকা শহরে মেনুমিয়া যা দেখে এসেছে তা পিছিয়ে পড়া কুৎসিত মহিলাদের মুক্তির যন্ত্র নয় আসলে তা হল উপরে ওঠার লিফ্ট। এদিকে বিষয়টা এতবেশী প্রচার হলযে আসল ঘটনা জানার পরও কামুসর্দার তার মোড়ল বন্ধু মেনুমিয়া অপমান হবে, অজ্ঞতা ফাঁস হয়ে যাবে এইকারনে চুপ থাকলো। এবং তাদের স্ত্রীদেরকে কালো থেকে মুক্তির আশ্বাস দিয়েই গেল।

এখানে মেনুমিয়া মূর্খ্য হওয়ায় সে লিফ্কে পরিবর্তনের উপায় মনে করে আর কামৃসর্দার হল জ্ঞানপাপী সে জানার পরও বন্ধুর গোমর ফাঁস হবার ভয়ে আসল কথা নারীদেরকে না বলে শুধু মুক্তির বার্তাই শুনায়। তেমনি ইসলামের বিধান সম্পর্কে কিছু লোক মূর্খ্য আর কিছু লোক জ্ঞানপাপী। উভয়েই বাহ্যিক দিক দেখেই নারী সমঅধিকারের কথা বলে। এই সমঅধিকার নারী, সমাজ বা পরিবার কারও জন্যই কল্যানকর নয়। সুতরাং আল্লাহ প্রদত্ব এই নীতির বাইরে যদি কিছু করা হয় তা বাহ্যিক দিক থেকে নারীদের জন্য উপকারী দেখা গেলেও পরিবার ও সমাজের সুন্দর বিকাশের ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই তা অন্তরায়।

একজন নারীকে পরিবার পরিচালনা করতে হয়না। সন্তানের ভরনপোষন দিতে হয়না। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান সহ স্ত্রী ও সন্তানের লেখাপড়া, শিক্ষা, চিকিৎসা , জামা কাপড় সহ অন্যান্য কিছুই করতে হয়না। এটা একটা স্বাভাবিক নিয়ম। অবশ্য এই সমাজে অনেক মহিলা পরিবার পরিচালনায় যথেষ্ট ভূমিকা পালন করেন।

যারা করে তারা দায়িত্ব থেকে নয় আন্তরিকতা থেকে সহযোগিতা করেন। নারী পিতার সম্পদে অধিকার পায় আবার স্বামীর সম্পদেও পায়, এভাবে ভাই, সন্তান, মা সহ আরও কিছু ক্ষেত্রে পায়। তার এই সম্পদ বিবাহ বিচ্ছেদ বা বড়ধরনের কোন বিপদ না হলে দরকারও হয়না। তাই সে যতটুকু সম্পত্তি পিতার নিকট থেকে পায় ব্যয় করার জন্য নয় বরং নিজের নিরাপত্তার জন্য। প্রয়োজনের সময় নিজের পায়ে দাঁড়ানো জন্য।

বিবাহের ক্ষেত্রে আর্থিক এবং সামাজিক মর্যাদা মোটামুটি সমপর্যায়ের দেখে বিবাহ দেয়ার জন্য ইসলামের দৃষ্টিভংগী। তাই বিয়ের ক্ষেত্রে দুই পরিবারে সম্পদের পরিমান সমান হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। যদি কেউ আর্থিক অসম পরিবারে বিয়ে করে বা দেয় তা হলে তার ফলে তারা উচ্চ বংশ বা ছেলের শিক্ষা বা মেয়ের সৌন্দর্যের কারনে দেয় এবং তারা তা পায়। যাই হোক একটি দৃষ্টান্ত লক্ষ্য করুন। কোন ব্যক্তি যদি ৩লক্ষ টাকা, ১ছেলে আলী এবং ১মেয়ে ফাতিমাকে রেখে মারা যায় তাহলে ফাতিমা পাবে ১লক্ষ টাকা এবং আলী পাবে ২লক্ষ টাকা ।

আবার সমমর্যাদাপূর্ণ পরিবারে ছেলে মেয়ে উভয়ের বিয়ে হলে ফাতিমার স্বামীও তার পিতার থেকে ২লক্ষ টাকা পাবে আবার আলীর বউ তার বাবার সম্পদ থেকে ১লক্ষ টাকা পাবে। তাহলে দেখা যায় আলীর নিজের পিতার ২লক্ষ টাকা এবং তার স্ত্রীর আনা ১লক্ষ টাকা নিয়ে তাদের সংসারের মোট পূঁজি ৩লক্ষ। অপরদিকে ফাতিমার নিজের ১লক্ষ টাকা এবং তার স্বামীর পাওয়া ২লক্ষ টাকা নিয়ে তার পরিবারের মোট পুঁজিও ৩লক্ষ। এখানে আলী এবং ফাতিমা তথা দুই ভাই বোন সমান সম্পদ নিয়েই তাদের সংসার করেন। মেয়ে বলে ফাতিমা পিছিয়ে পড়েনি।

এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। যাইহোক বর্তমানে দেশে নারী সমঅধিকার নিয়ে আন্দোলন বা প্রতিরোধের যে অবস্থা দেখা যাচেছ তা কোন ভাবেই কাম্য নয়। মনে হয় এদেশের আলেম সমাজ নারীদের বিরুদ্ধে। আসলে তা নয়। যারা নারী নীতি বাস্তবায়ন করতে চান তারা কি বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে চান নাকি কোন মহল কতৃক বিক্রিত তা আমার জানা নেই তবে একটি অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে এতবড় এজেন্ডা হাতে নেয়া ঠিক হয়নি।

এমনকি ধর্মীয় বিষয়ে পৃথিবীর কোন সংসদও কোন আইন পাশ করার অধিকার রাখেনা। পাশ করলেও তা কোন মুসলিম ধর্মীয় কারনে মানবে বলে মনে হয়না। সরকার আলেমদের দাবীর প্রেক্ষিতে বিষয়টি সংশোধনের জন্য কিছু উদ্যোগ নিলেও মহিলা উপদেষ্টার উস্কানী মূলক অশালীন বক্তব্যই পরবর্তীতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। মহিলা উপদেষ্টা ঐ উস্কানী মুলক বক্তব্য বিশৃংখলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কোন মহলের কাছে বিক্রিত হয়ে দিয়েছেন কিনা তা তদন্ত সাপেক্ষ। এছাড়া সেদিন আলেমরা মিছিল করলেইবা কি হত।

তাদের উপর এমন ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার কি দরকার ছিল। পুলিশ ইচ্ছাকৃত হামলা করেছে নাকি কোন মহলের ইন্ধনে পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেছে তা দেখার বিষয়। কারন তার আগের শুক্রবার আলেমদের মিছিল পল্টন মোড়ের দিকে যাওয়ার পথে একটি বাম দলের অফিস থেকে পুলিশের উপর ইট মারলে পুলিশ প্রথমে আলেমদের উপর হামলা করতে চাইলেও পরে প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ অফিসারের হস্তক্ষেপে তা সমাধা হয়। বামরা পুলিশ ও আলেমদের মাঝে হাঙ্গামা বেঁধে কি চায়? যাইহোক নৈরাজ্য সমস্যা সমাধান করেনা। কোন নৈরাজ্য দাবী আদায়ের জন্য পন্থা নয় এবং তা কাম্য নয়।

নৈরাজ্যের অবসানের জন্য আগত এই সরকারের আমলে কোন নৈরাজ্য আমরা চাইনা। নৈরাজ্যের দিন শেষ। আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক উপায়ে সমস্যার সমাধান করতে হবে। নারীরা আলেমদের প্রতিপক্ষ নয়। ।

সবার মা ই সবার কাছে প্রিয়। সন্তানের নিকট সবছে শ্রদ্ধার ব্যক্তি কে? এই প্রশ্নের জবাবে রাসুল (সঃ) বলেছেন ‘মা’। তারপর কে ? একই উত্তর ‘মা’, তারপর কে? একই উত্তর ‘মা’। তারপর কে? বাবা। অথ্যাৎ ইসলাম নারীকে পুরুষের চেয়ে অনেক বেশী মর্যাদা দিয়েছে।

পৃথিবীতে সকল মানুষের নিকট সবছে প্রিয় মানুষটি হল ‘মা’। আর পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সেই ‘মা’ও একজন নারী। তেমনি সবছে আদরের লোকটি হল ‘বোন’। আরেকটি ভাইয়ের চেয়ে বোনটাকেই বেশী আদর করা হয়। বোনের আব্দারকেই আগে রক্ষা করা হয়।

আবার সবছে ভালবাসা আর জীবন সঙ্গী হল ‘স্ত্রী’। যাকে বেশী সময় দেয়া হয়। যার কাছে সুখ দুঃখ সবকিছুই বিনিময় করা হয়। যার ভাল গুনকে নিয়ে গৌরববোধ হয়। আবার বাবার স্নেহ মায়া মমতা যার জন্য বেশী সে হল ‘কন্যা’।

এভাবে শ্রদ্ধেয় মা, আদরের বোন, ভালবাসার স্ত্রী, আর স্নেহের কন্যা এরা সবাই কিন্তু নারী। কিন্তু পিতার স্নেহ, ভাইয়ের আদর, স্বামীর সোহাগ আর মা হিসাবে সন্তানের প্রাণপ্রিয় ভালবাসা ও শ্রদ্ধার মত মর্যাদাকর অবস্থা থাকার পরও কেন যে কিছু নারী নিজেদেরকে ভোগের পণ্য হিসাবে উপস্থাপন করে। তাদের বেপরোয়া চাল চলন, সংক্ষিপ্ত পোষাক, বেসামাল মাখামাখি, অশালীন অঙ্গভঙ্গী ইত্যাদি তার মর্যাদা বাড়ায় নাকি কমায়? ধর্ষণ, নির্যাতন, পিছিয়ে পড়া’র কারন অনেকাংশে তারা নয়কি? তাদের শালীন চলাফেরা এবং আমরা নারীকে যথাযথ মর্যাদা দিতে পারলে বোধহয় নারী পুরুষের আর কোন মর্যাদার বেধাবেদ থাকবে না। থাকবেনা কোন রেষারেষি, দাম্পত্য কলহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, চরম অশান্তি আর মানসিক যন্ত্রনা। যেই সমাজ ধর্মীয় জীবন বিধান মেনে চলছে তাদের মাঝে নারী পুরুষের পারষ্পরিক ঝামেলা খুবই কম।

আসুন সবাই নারীদেরকে সন্মান করি, আদর করি, ভালবাসি আর মমতায় ভরিয়ে দেই, তাহলে আমাদের পরিবার, আমাদের সমাজ, আমাদের দেশ, আমাদের পৃথিবী হয়ে উঠবে শান্তির লীলাভূমি। ১ম র্পব Click This Link


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।