আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অঙ্গীকার রাখল না দিল্লি

কংগ্রেস সরকার পার্লামেন্টের বর্ষাকালীন অধিবেশনে বিলটি তুলতে ব্যর্থ হওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল ভারত-বাংলাদেশ স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের পথ।   
রোববার শেষ হওয়া ভারতীয় পার্লামেন্টের বর্ষকালীন অধিবেশনে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা বিল, ভূমি অধিগ্রহণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার একটি প্রস্তাব এবং ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন বিলের মতো বেশ কিছু আলোচিত প্রস্তাব পাস হয়েছে। কিন্তু ৫ অগাস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলা এই অধিবেশনে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবটি তোলারই সুযোগ পায়নি কংগ্রেস সরকার।      
ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি নামে পরিচিত ১৯৭৪ সালের স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফরে এসে প্রটোকলে স্বাক্ষর করেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। এর আওতায় দুই দেশের মধ্যে ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় এবং ছয় দশমিক এক কিলোমিটার অমীমাংসিত সীমানা চিহ্নিত হওয়ার কথা।


এই চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হলে ভারতের সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন। কিন্তু এর জন্য পার্লামেন্টে বিল পাস করতে হলে রাজ্যসভা ও লোকসভায় দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন দরকার, যা কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সরকারের নেই।
কেন্দ্রীয় সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ তিন দফা পার্লামেন্টে বিল তোলার উদ্যোগ নিলেও দুইবার বিজেপি ও আসাম গণ পরিষদ এবং একবার পশ্চিমবেঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী  মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধিকায় তা আটকে যায়।
দুই দেশেই নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় ভারতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বর্ষা অধিবেশনেই বিলটি পাসের জন্য বিজেপি ও তৃণমূলের সঙ্গে আলোচনা চালানো হয়। ভারতীয় বিরোধী দলকে বোঝাতে দিল্লি উড়ে যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি।

    
জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে দীপু মনির ওই সফরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং আশ্বাস দেন, বিলটি পাস করানোর জন্য তার সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।    
রোববার পার্লামেন্টে অধিবেশন শেষ হয়ে গেলেও অপূর্ণই থেকে গেল ভারত সরকারের সেই অঙ্গীকার।
অধিবেশন চলাকালেই বিজেপি নেতা এল কে আদভানি, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলি ও রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন মনমোহন। কিন্তু বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়, এ্ চুক্তির বাস্তবায়ন হলে দশ হাজার একর জমি বাংলাদেশের হাতে চলে যাবে, যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের আপত্তি রয়েছে। আর মনমোহন যেহেতু চুক্তি করার আগে বিজেপির মতামত নেননি, সেহেতু এই পর্যায়ে এসে বিরোধী দলের সমর্থন তিনি আশা করতে পারনে না।

  
একসময় স্থল সীমান্ত চুক্তির পক্ষে থাকা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাও স্থল সীমান্ত চুক্তির প্রবল বিরোধিতা করেন। কেন্দ্রীয় সরকার কেন এই চুক্তি বাস্তবায়নে ‘এতো আগ্রহী’ সে প্রশ্নও তিনি তোলেন।     
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান, অধিবেশন শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগেও সংগ্রেসের পক্ষ থেকে মমতাকে রাজি করানোর চেষ্টা চলে। কিন্তু আলোচনার কোনো আগ্রহ তৃণমূল দেখায়নি।    
এই মমতার বিরোধিতার কারণেই মনমোহনের ঢাকা সফরে আটকে যায় বহু প্রত্যাশিত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি।

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধিতায় ওই চুক্তি নিয়ে আর এগোতে পারেননি মনমোহন।  
গত চার বছরে নয়া দিল্লির দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত ২৮ অগাস্ট ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনারের সামনেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “ভারতকে মনে রাখতে হবে, আমাদেরকেও আমাদের জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। বন্ধুত্ব ওয়ান সাইডেড (একপাক্ষিক) হয় না। ”


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।