আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাহেলা হত্যা মামলার নিখোঁজ আলামত ও অন্যান্য দলিল

.

অবশেষে আদালত পাড়ার তুমুল পেজগীমারা সব আদম শন্তানদের ততোধিক পেজগীমেরে চাঞ্চল্যকর রাহেলা হত্যামামলার নথি-পত্রের কপি হাতে আনতে পারলাম। পরম আগ্রহে গত কয়েক দিন দফায় দফায় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কাগজগুলো পড়ে দেখেছি। অনেকে আগ্রহী হবেন এই ভেবে মামলার কপি,চার্জশিট,জব্দ তালিকাসহ কিছু ডকুমেন্ট স্ক্যান করে দিলাম। অবশ্য, যদি পুলিশের হাতের লেখা পড়তে পারেন। ওদের হাতের লেখা দেখছি আমার চেয়েও খারাপ! কাগজ-পত্র দেখলে নিশ্চিতই আপনি এই দেখে আশ্চর্য হবেন যে, মামলাটিতে পুলিশ কতো দায়সারাভাবে কাজ করেছে! যেমন ধরুন,পুলিশ বাদী এই মামলায় ঘটনার তারিখটিই ভুল উল্লেখ করা হয়েছে।

সাভার থানায় ২০০৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর এস আই মদন মোহন বণিক বাদী হয়ে দায়ের করা মামলা ঘটনার তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১ সেপ্টেম্বর। এই তারিখে তিনি বেতার মারফত সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে এম এইচ হলের পূর্বপার্শ্বের কাঁঠাল গাছের নিচে জঙ্গলের ভিতর গলাকাটা মুমূর্ষু অবস্থায় ২২ বছরের একজন যুবতী পরে আছে দেখে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন বলে এজাহারে জানান। কিন্তু সবাই জানেন,একজন মালী রাহেলার আর্তচিৎকার শুনে রাহেলাকে উদ্ধারের জন্য লোকজন ও পুলিশকে ডাকে। এবং ১৯ আগস্ট রাহেলাকে ধর্ষণ শেষে গলা কেটে ফেলে যায়। তাকে উদ্ধার করা হয় ২২ আগস্ট।

পত্র-পত্রিকার রেফারেন্স তাই বলছে। মনে আছে সবার আগে এই রিপোর্টটি ২৩ আগস্ট প্রথম আলোয় ছাপা হয়েছিল। পত্রিকাটির জাবি সংবাদ দাতার পাঠানো খুবই মর্মস্পর্শী এই রিপোর্টটি প্রথম পাতায় সিঙ্গেল কলাম ছাপা হয়েছিল। শিরোনাম ছিল ,আমি মরি নাই-আমাকে বাঁচান! যাই হোক ,একটা বিষয় আছে ভরসার। তা হলো,পুলিশ একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে রাহেলার মৃত্যুকালিন জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করে রেখেছে।

এবার যে আলামতগুলো হারিয়ে গেছে বলে মামলার ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়েছে সেগুলোর তালিকা দিয়ে লেখাটি শেষ করতে চাই। ২০০৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা হয়ঃ ক.১টি পুরাতন রক্তমাখা পাতলা টাইপের আকাশি রঙের ওড়না খ.১টি পুরাতন রক্ত মাখা পাতলা টাইপের আকাশি রঙের ছেঁড়া কামিজ গ.১টি পুরাতন সাদা রঙের রক্ত মাখা সুতি টেপ,যাহা কামিজের নিচে পরে। ঘ.১টি পুরাতন রক্ত মাখা ব্রেসিয়ার ঙ.১টি ব্লু রঙের জিন্স কাপুড়ের ইলাস্টিক যুক্ত পায়জামা ধরনের মেয়েদের প্যান্ট। ২০০৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মীর মোশাররফ হলের দক্ষিণ -পুর্ব কোনা থেকে সংগ্রহ করা হয়ঃ ক.১টি পুরাতন ব্যবহৃত টিয়া রঙের কামিজ খ.১টি টিয়া রঙের ছাপানো ওড়না গ.১টি টিয়া রঙের টেপ ঘ.১টি সাদা পুরাতন ব্রেসিয়ার ঙ.১টি কমলা রঙের শ্যালোয়ার চ.১টি কালো রঙের মহিলাদের ভ্যানিটি ব্যাগ ২০০৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আলামত হিসেবে ধানমন্ডির অনন্যা ভিডিওর দোকান থেকে জব্দ করা হয়ঃ ১টি ভিডিও ক্যাসেট। যাতে আসামী আকাশের বড় ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে লিটন,দেলোয়ার,কবিরের যোগদেয়ার ছবি ছিল।

আলামত হারিয়ে যাওয়া বা কোথায় ওগুলো রাখা হয়েছে এনিয়ে বিভ্রান্তির কারণ মনে হয় কয়েক দফা মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা বদল হওয়া। এর আগে জানা গিয়েছিল ,তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটির স্বাভাবিক কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করছেন না। পুলিশ চার্জশিটেই উল্লেখ করেছিল মামলাটি চাঞ্চল্যকর,এটি নিয়ে পত্র-পত্রিকায় ব্যপক লেখালেখি হয়েছে। যদিও মামলাটি নিয়ে এক পর্যায়ে দায়িত্বহীন আচড়ন করে পুলিশ। রাহেলা হত্যামামলার স্থবির অবস্থায় যারা মনঃকষ্টে ভুগছেন,তাদের জন্য একটা সংবাদ ভালো লাগার আছে।

তা হলো,হঠাৎ করেই সাভার থানা পুলিশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। মনে হয় লিটনকে এরেস্ট করার উদ্যোগ নেবে তারা। এতোদিন কোন খোঁজখবর না নিলেও আদালত থেকে মামলার কাগজ পত্র নিয়েছে আজ। ধারণা করছি,জাফর স্যারের লেখাটি প্রকাশের পর পুলিশের কানে পানি গেছে। এই লেখার তথ্য-উপাত্ত,মামলার নথি-পত্র যে কেউ ইচ্ছে করলেই ব্যবহার করতে পারেন।

আমাকে জিজ্ঞাসা করার দরকার নেই রাহেলাকে নিয়ে মানবীর প্রথম লেখাটির লিংক দিলাম Click This Link রাহেলা হত্যা নিয়ে ওর স্বামী চান মিয়ার পরিবার ও প্রাসঙ্গিক কিছু প্রশ্ন নিয়ে আগে প্রকাশিত একটি লিংক Click This Link কেউ ইচ্ছে করলে দেখবেন ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.