আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদেশী ইউনিভার্সিটি (বার্মিংহাম - ৫)

ইচ্ছেমতো লেখার স্বাধীন খাতা....

বাংলাদেশের পাবলিক ইউনিভার্সিটির সাবেক ছাত্র আমি। সেখানকার প্রশাসনিক ব্যবস্থার সঙ্গে এখানকার প্রশাসনিক ব্যবস্থা অনেকখানি আলাদা। বাংলাদেশে ভর্তির সময় অনেকগুলো স্টেপ অনুসরণ করতে হয়। ফর্ম নিয়ে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে দৌড়াতে হয়। প্রথম স্টেপ ছিল ভর্তি পরীক্ষায় নিজের নাম আছে কিনা।

ভাইবা-টাইবা ইত্যাদি বিভিন্ন স্টেপের পরও যদি ডিপার্টমেন্টের লিস্টে নাম থাকে তখন ফর্ম দেয়া হতো। পরে তা পূরণ করে ব্যাংকে গিয়ে ভর্তি ফি জমা দিয়ে ব্যাংক স্লিপ সহ অসংখ্য সত্যায়িত ছবি, গার্জিয়ানের স্বাক্ষর, সকল প্রকার সত্যায়িত সার্টিফিকেট ইত্যাদি সহ তা ডিপার্টমেন্টে জমা দিতে হতো। এছাড়াও মাঝখানে অ্যাকাউন্ট ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন কারিশমা ছিল (এ মুহূর্তে ভালো মনে নাই)। কিন্তু এখানে তা না। ভর্তির সময় দেখলাম বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধি এক রুমেই বসে আছে।

বিভিন্ন টেবিলে তাদের কাছে যেয়ে যেয়ে সাইন নিতে হচ্ছে। কোনো সত্যায়িত ডকুমেন্টস দিতে হয় নাই, অরিজিনাল কাগজগুলো দিতে হয়েছিল সেগুলো তারাই ফটোকপি করে রেখেছে। কোনো ছবিও জমা দিতে হয় নাই। আর কাজগুলো খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছিলো। আমার এনরোলমেন্টের দিন লাইনটা একটু লম্বা ছিল।

লাল গেঞ্জি পরা বেশ কয়েকজন কর্মী নতুন আসা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলো। ইউনিভার্সিটির অফিসার অবশ্য লাইনটা লম্বা দেখে খুব দুঃখ প্রকাশ করেছিল। আমার পালা আসলে লাল গেঞ্জি পরা একজন আমাকে একটা রুমে নিয়ে গেল। সেখানে একটা ফর্ম দিয়ে তা ফিলআপ করার জন্য একটা চেয়ারে বসিয়ে দিল। আমি সহ আরো কয়েকজন ফর্মটা ফিলআপ করার সময় দুজন কর্মী সেখানে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত ছিল।

কোনো সাহায্য না চাইতেও তারা দুইবার জিজ্ঞাসা করে গেল, কোনো সাহায্য লাগবে কিনা। ফর্ম ফিলআপ শেষ হলে তাদের একজনকে তা দেখালাম। ফর্ম দেখে সে আমাকে হাতে ধরে পাশের এক রুমে নিয়ে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে গেল। সামনে গম্ভীর চেহারার এক লোক ক্যালকুলেটর নিয়ে বসে আছে। কথাবার্তায় বুঝলাম তিনি একাউন্টস ডিপার্টমেন্টের লোক।

আমার টাকাপয়সা যে খুব কম দেওয়া আছে এবং খুব শিঘ্রই বাকি টাকাগুলো দিতে হবে তা তিনি জানিয়ে দিলেন। এরপর ফর্মের নিচে স্বাক্ষর করে পাশের টেবিলের লোকের সাথে দেখা করতে বললেন। পাশের টেবিলের লোক ঠিক কোন ডিপার্টমেন্টের তা বুঝতে পারলাম না। তিনি কাগজপত্র দেখে ফর্মের নিচে স্বাক্ষর দিয়ে দিলেন। এর পর আর এক টেবিলে যেতে হলো।

সেখানেও স্বাক্ষর পেয়ে গেলাম। এর পরে আমাকে জানানো হলো যে, এখন আইডি কার্ডের জন্য আমার ছবি তোলা হবে। ছবি তোলার পর বলা হলো একটু অপেক্ষা করুন। পাশের মেশিনে তাকিয়ে দেখি খসখস শব্দ করে ছবি সহ আমার আইডি কার্ডটা তৈরি হয়ে গেছে। সেটাতে একটা ক্লিপ লাগিয়ে তা আমার হাতে তুলে দেয়া হলো।

(ছবি ইউনিভার্সিটির বারান্দা থেকে মোবাইল ক্যামেরায় তোলা)


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।