আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার যেভাবে লেখালেখির শুরু........

জ্বলে উঠার অপেক্ষায় নিভু নিভু প্রদীপ।

আমি কবি, লেখক, গবেষক, বিশারদ কোন কিছুই নই। তারপরও টুকটাক লিখতে ইচ্ছে করে। মুলত মন খারাপ কিংবা ভালোর অনুভূতিটাকে ধরে রাখার জন্য কলমের কালি দিয়ে আমার ডায়েরীতে অনেক আকিবুকি করেছি। আমার লেখালেখির স্থান ড্রয়ার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ।

তবে, এদের মধ্য থেকে বেশ কিছু কবিতা কিছু গল্প 'ভোরের কাগজ', 'প্রথম আলো'তে স্থান পেয়েছিল। মাঝখানে 'ডেইলী স্টার' এবং 'নিউ এজ' এ টুকিটাকি লিখেছি। এখন 'সামহোয়্যারইন' এ মাঝে মাঝে ছাইপাশ লিখি। আমার এক বন্ধু বলে গায়তে গায়তে গায়েন লিখতে লিখতে.....। যাইহোক,এটা কতটুকু সত্য সেটা আমার মনেই থাক।

তবে লেখালেখির ব্যাপারটা অনেকটা জন্মগত। সবাই কম বেশী লিখতে পারে কিন্তু সবাই মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের মত পাঠক ধরে রাখতে পারেনা। এবার মূল কথায় আসি। আমার লেখালেখির শুরু হয়েছিল মূলত ক্লাস সেভেন থেকে। তখন ভোরের কাগজের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে।

ভোরের কাগজ শুধু পড়তামই না বলা যায় গিলতাম। সব ক্রোড়পত্রগুলো ভালো লাগত। তারপর প্রতিদিন শব্দজট সমাধান করতে কমপক্ষে ঘন্টাখানেক ব্যয় করতাম। সবচেয়ে প্রিয় ছিল 'অবসর'। ছোট একটা ক্রোড়পত্র অথচ কি একটা টান অনুভব করতাম।

বাসায় সব অবসরগুলো জমিয়ে রেখেছিলাম। মার কাছে এসব নিয়ে কত বকা খেয়েছি তার কোন হিসেব নেই। অথচ সেই আমি গতবার দেশে গিয়ে সব ফেলে দিয়েছি। আমার সেই 'মা' আমাকে ফেলতে দিচ্ছিল না। আসলে আমি দেশে না থাকাতে আমার মা আমার রুমে এসব দেখেই চোখের পানি ফেলত, রুমের সব কিছুর সাথেই মার ভালবাসা জমে গিয়েছিল।

সেই গীটার, ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে যখন গীটার কিনেছি তখন মা আমাকে কত কথা শুনিয়েছিল তার কোন ইয়ত্তা নেই, অথচ দেশে গিয়ে যখন গীটারটা বন্ধুকে দিয়ে দিচ্ছিলাম সেই মার কি রাগ। মা বলে আমি থাকিনা তো কি হয়েছে আমার বোন তো আছে। সেদিন আমি না হেসে পারিনি কিন্তু পরে বুঝতে পেরেছি গীটারটা দিয়ে দেয়াটা আমার মোটেও ঠিক হয়নি। বোনের কাছে শুনেছি এই গীটার নিয়েই মা কতরাত কেঁদেছে। ধূর আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে কেন।

আবারও মূল কথায় আসি। তখন ভোরের কাগজে ডাক্তারের পরামর্শ বিষয়ক একটা কলাম ছাপা হত। একদিন মাথা ব্যাথার সমস্যার কথা বলে ডাক্তারের কাছে সমাধান চেয়ে চিঠি পাঠালাম। দু সপ্তাহ অধীর অপেক্ষায় থাকার পরে নিজের নাম ছাপার অক্ষরে দেখে অবাক হয়েছিলাম। তারপর স্কুলে নিয়ে সব বন্ধুদের দেখালাম।

সেটা কেটে তখন পকেটে রাখতাম। নিজের নাম(ঠিকানাসহ) পত্রিকায় ছাপার অক্ষরে এসেছে বলে কথা। এরপর থেকে লেখালেখির শুরু। 'অবসরে' লেখা পাঠাতাম। সেসব নিয়ে স্কুলে গর্ববোধ করতাম।

পরে ক্লাস নাইনে উঠার পর শুরু হল আমার গল্প,কবিতা লেখালেখি। স্কুলের প্রিয় বন্ধুদের নিয়ে কত গল্প লিখেছি। সবাই খুব আগ্রহ নিয়েই পড়ত, উৎসাহ দিত। এমনকি বাংলা সিনেমাও লিখেছি। এসব মনে পড়লে এখন না হেসে পারিনা।

এস.এস.সি'তে স্কুলের সবচেয়ে ভালো রেজাল্ট করে সবার মধ্যমণিতে পরিণত হলাম। সবাই বলাবলি করা শুরু করল...ছেলেটা একটা প্রতিভা। আসল কথা হল কিছুই না। কলেজে গিয়ে কবিতা লেখা চরম অভ্যাসে পরিণত হয়। সব বন্ধুদের নিয়ে কবিতা লিখতাম।

সবাই পড়ে উৎসাহ দিত(যদিও ওসব কবিতা ছাইপাশ ছাড়া কিছুইনা, এসব এখন দেখলে হাসি পায়)। একটা কথা না বললে হয়না। আমি মেয়েদের সাথে খুব একটা কথা বলতাম না তখন এসব ছাইপাশ কবিতা লিখেই কিন্তু আমি রাতারাতি মেয়েদের কাছাকাছি চলে আসি। রীতিমত তারকা। তারপর 'প্রথম আলো' আসার পরে 'ছুটির দিনেতে অনেক লিখেছি।

ইমেইল এড্রেস ছাপানোতে কত মানুষ আমাকে মেইল করত। বলাবাহুল্য এখনকার অনেক বেস্ট ফ্রেন্ড কিন্তু আমি এভাবেই পেয়েছি। পাঠকদের সেই উৎসাহ আমাকে লেখার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। হয়ত তাই লেখালেখির এই (বদ)অভ্যাস নিয়ে এখনো আছি। চলবে....... (আমার একটাই সমস্যা লিখতে বসলে কম কিছু লিখতে পারিনা।

একটা লিখতে বসে আরেকটা লিখে ফেলি। দেখা যায় লিখতে বসেছি একটি কবিতা লিখেছি চারটা ভিন্ন কবিতা। আজকে গানের এ্যলবাম রিভিউ লিখতে বসেছিলাম লিখে ফেললাম কিভাবে আমার লেখালেখির শুরু। যাইহোক, পাঠক চাইলে এ্যলবাম রিভিউ লিখব। আসলে এই চিন্তাটা মাথায় আসার পেছনে কোন কারণ নেই।

আমি গানপাগল মানুষ, মূলত রক, মেটাল এসব শুনি তারপরও অনেক ধরনের গান শুনি। 'ডেইলী স্টার' ও 'নিউ এজে' বাংলা গানের এ্যলবাম নিয়েৎুকটাক লিখতাম সেই অভিগ্গতার আলোকে এখানে ধারাবাহিকভাবে রিভিউ লিখতে চেষ্টা করবো)।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.