কাউকে না জানিয়েই দু-হফতার সিক্রেট মিশনে গেছিলাম ঢাকায়। আগেই বলেছিলাম ডাকবিভাগের হটাৎ মূল্য পরিবর্তনের ফলে প্রবাস থেকে একেবারেই দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। এক পর্যায়ে বইমেলা বন্ধ করে দেয়ার প্ল্যানই কনফার্ম করে ফেলেছহিলাম। পরে ভাবলাম পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ না করে ফাইনাল সিদ্ধান্তে না গেলেই ভাল। তাই ফেরত আসার পরে ফিল্ড রিপোর্ট।
ডাকবিভাগের মূল্যবৃদ্ধি হটাৎ বা খামখেয়ালী কোন ইস্যু না বরং অনেক দিনের পরিকল্পনা। এখানে দুটি বিষয় কাজ করেছে। প্রথমত গত দুই দশকে বাংলাদেশের ডাকবিভাগ একই দামে চিঠি আর পার্সেল বিলি করে আসছে। যেখানে সবখানে খরচ শতকরা হারে নয় বরং গাণিতিক হারে বেড়েছে। ফলে বহুদিন ধরেই ডাকবিভাগ মোটা অংকের ভর্তুকি দিয়ে কাজ চালিয়ে আসছিল।
পেছনের সরকার সাহেবানের কাছে ক্রমান্ময়ে দাম বাড়ানোর অনুরোধ করা সত্বেও 'রাজনৈতিক কারনে' সেটি বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে বর্তমান সরকার পদক্ষেপ নিতে গেলেই একবারে পেছনের দুই দশক আর বোধকরি সামনের এক দশকের হিসেব করে বাড়িয়ে নেয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় বিষয়টি আরেকটু জটিল। তা হল, আমরা যখন দেশ থেকে বিদেশে চিঠি বা পার্সেল পাঠাই, তখন ঢাকার পোস্টম্যান গিয়ে হাওয়াই বা প্যারিসে বিলি করেনা, বরং সেই দেশের ডাকবিভাগ বা কোন নির্দিষ্ট কুরিয়ার সংস্থা সেই দায়িত্ব নেয়। এখন স্বভাবতই পৃথিবীর বেশীরভাগ উন্নত দেশেই জীবনযাত্রার মান অনেক এগিয়ে থাকার কারণে, বাংলাদেশের অঙ্কে বিদেশের সবকিছুরই দাম বেশী।
তাই বাংলাদেশে কেউ দেশের সমমানের মূদ্রায় দাম পরিশোধ করলে দেখা যায় আন্তর্জাতিক অংকে সেটির পরিমান এতই কম, যে সেই টাকায় বিদেশী ডাকবিভাগ ডাক বিলি করতে রাজী হয়না। তাই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিতই ভর্তুকী দিয়ে সেটিকে ব্যালেন্স করতে হয়। বর্তমান সরকারের সিদ্ধান্ত হল, বিদেশের জন্য যখন কোন প্যাকেট বা পার্সেল পাঠানো হয়, তাতে আর সরকার সাহেব ভর্তুকী দেবেন না। বিদেশের মানুষ বেশী পয়সা দিয়ে হয় পার্সেল নেবে নাহলে ঘরে বসে আঙ্গুল চুষবে।
আপাততঃ এইটুকু সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেরত আসতে হল দেশ থেকে।
অতএব, বইমেলা পুনরায় চালু। ২০০৮ এর বইগুলি এখনো আপডেটে হাত দেইনি। আশাকরি মার্চে আস্তেধীরে সেরে ফেলব। তবে বাস্তবতার সাথে মিল রাখতে গিয়ে ডাক খরচ আগের তুলনায় ৩-৪ গুণ মত বাড়ানো হয়েছে। দুনিয়াতে তার পরেও যদি কোন বইপাগল থাকে সে কিনবে আর নাহলে কিছু করার নাই।
যারা ইউরোপ বা উত্তর আমেরিকা থেকে দেশে কখনো বই বা পার্সেল পাঠিয়েছেন তারা জানেন ডাকযোগে জিনিষ পাঠানো কতটা খরচসাপেক্ষ বিষয়, বাংলাদেশে আমরা মনে হয় চামে এতদিন শস্তায় পাঠাতাম এখন গ্লোবালাইজেশনের ধাক্কায় সব উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে গেছে।
সবারই পুনরামন্ত্রণ রইল
বই-মেলা.কম
(চান্সেঃ দুনিয়ার মনে হয় কাউরো জানা বাকি নাই যে সাইট টেম্পোরারী টাইমের জন্য সাসপেন্ড ছিল। এখন জনতার দাবী মেনে নিয়ে যে আবার জিন্দা হয়ে গেছে সেই খবরটা জানানো দরকার। কতৃপক্ষ স্টিকি করা যায়কি?)
বিবিসির হোমপেজে আজকে এই খবরটি দেখাচ্ছে। ইন্টারেস্টিং
বাংলাদেশের ভাসমান হাসপাতাল
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।