আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রহস্যের রহস্যকথা

আপনাদের মাধ্যমে নিজেকে জানার চেষ্টা করছি।

জীবনে আশা আর রহস্য ফুরিয়ে গেলে জীবনের সৌন্দর্য্য নষ্ট হয়ে যায়। আশার বিষয়টি বিশ্লেষণ না করলেই চলবে। কিন্তু রহস্য বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। যার যার রুচিবোধ, সময়, অবস্থা, অবস্থান, পরিস্থিতি ভেদে মানুষ সবসময় কোন-না-কোন বিষয় (অনেক সময় একই সাথে অনেকগুলো বিষয়) নিয়ে রহস্য উদাঘাটনে ব্যস্ত।

নাসার বিজ্ঞানীরা যেমন নভোমণ্ডল নিয়ে রহস্য উন্মোচনের চেষ্টায় মত্ত। তেমনি আমরা সাধারণ মানুষরাও প্রতিনিয়ত ব্যক্তিগত জীবনেও বিভিন্ন রহস্য উদঘাটনের সচেষ্ট হই। কবিতা, সাহিত্যের একটা বিশাল অংশজুড়ে নারী-পুরুষের দর্শন আলোচিত। নারী কবি-সাহিত্যিকদের কেউ কেউ পুরুষ জাতি সম্বন্ধে ঢালাওভাবে একটা নেতিবাচক মন্তব্য ছুড়ে দিচ্ছে। আবার কোন কোন পুরুষ সাহিত্যিকরা নারী জাতি সম্বন্ধে ঢালাওভাবে একটা নেতিবাচক মন্তব্য ছুড়ে দিচ্ছে।

তাদের এসব মন্তব্যের পিছনেও যৌক্তিকতা আছে, একটা বিষয় নিয়ে বেশি ভাবলে বা ওই বিষয়ের উপর নির্ভর করার প্রবণতা তৈরি হলে তবেই সে এরকম অহেতুক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। বস্তুত, প্রত্যেকটা মানুষের দর্শন আলাদা; সে নারী/পুরুষ যাই হোক। প্রাত্যহিক জীবনে আমরাও কম-বেশি মানুষের সাথে মিশছি। আর আমি পেশার প্রয়োজনে প্রতিদিন অন্তত ২০-৫০ জন নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হচ্ছি। জীবনে হৃদয়ঘটিত ব্যাপারও ঘটেছে অল্প-বিস্তর।

নতুন মানুষদের সাথে মিশতে মিশতে আমি অনেকদিন ধরেই একটা ছোট গবেষণা (জরিপ) চালাচ্ছি। এ ব্যাপারে আনঅফিসিয়াল ইন্টারভিউ নেয়া হয়েছে অনেকের কাছ থেকে। আসলে রহস্য কী???? মানুষ যখন কোন অজানা বিষয় সম্পর্কে জানতে কৌতুহলী হয়ে ওঠে তখন নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টায় সে বিষয়ের আদ্যোপান্ত বের করতে উদগ্রীব হয়। জানার পদ্ধতি/উপায় যখন অধিকতর কষ্টসাধ্য হয় তখন তা হয় "রহস্য"। আচ্ছা, যদি বলা হয়, বিষয়টা সম্বন্ধে কেন জানতে হবে? না জানলে হয় না? চলে না? এই একটা/ দুইটা বিষয় না জানলেই বা কী হয়? জীবন তো এই ব্যাপারটির জন্য থেমে থাকবে না।

কিন্তু না, রহস্যের ব্যাপারে এসব কথা চলে না, যায় না। কারণ, এটা রহস্য। একটা বিষয় কখন রহস্য হয়? উত্তর: যখন কোন মানুষ কোন একটি বিষয়ের উপর নির্ভর করতে চায়, ওই বিষয়ের প্রতি (প্রবল!) দূর্বলতা তৈরি হয়, তখন সে ওই বিষয়ের আদ্যোপান্ত জানতে চায়। আমি নাসার বিজ্ঞানীদের আলোচনায় যাব না (কারণ, ওই বিষয়ে আমি নিজেও কম জানি এবং গবেষণায় এই বিষয়টি ছিল না)। কবি-সাহিত্যিকদের নারী-পুরুষ রহস্যের বিষয়ে আমার গবেষণার কথা বলি।

যেটা শিরোনামে বলেছি "রহস্যের রহস্যকথা" অনেক প্রেমিক-প্রেমিকা জুটির একে-অন্যের সম্বন্ধে বলতে শুনেছি "পুরাই জিলাপির প্যাচ, একদম বুঝা যায় না। আজ ৫/৬ বছর রিলেশনে আছি, লোকটারে এখনো পুরা চিনতে পারলাম না। " আসলে ব্যাপারটা হলো, "ওই যে নির্ভর করার প্রবণতা, দূর্বলতা" ওটাই। আর এই নির্ভরতা-দূর্বলতা থেকেই রহস্যের সৃষ্টি। কারণ, সে চায় তার কাছের মানুষটিকে সম্পূর্ণ জানতে।

যাতে সে তাকে বিশ্বাস করতে পারে, তার উপর নির্ভর করতে পারে। জীবন ফুরিয়ে যায়, তবু রহস্য ফুরায় না। আসলে কোন মানুষই তার নিজেকে পুরোপুরি জানতে পারে না। অপরকে জানাতো পরের কথা। আমি সারাদিন কী কী বিষয় চিন্তা তাওতো প্রকাশ করতে পারি না।

আরেকজন কিভাবে জানবে, আমি কী কী চিন্তা করি? নিজের সম্পর্কে নিশ্চয়তা দিয়ে কোন কথা বলতে পারি না। কথা দিয়ে কথা রাখতে পারি না। আমি জানি, আমি সবসময় কথা রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করি। কিন্তু পরিস্থিতি আমার চেষ্টাকে বিফলে নিয়ে যায়। যদ্দরুণ অন্য একটা মানুষ আমাকে প্রতারক /ভন্ড বলে গালি দেয়।

কিন্তু আমি যে এই গালি শুনা থেকে বাঁচার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম, সেটা কেউ দেখেনি। তাই, আমি ভন্ড/ প্রতারক। ব্যাপারটি রহস্যই থেকে গেল। গুণীজনরা বলেছেন, "টাকা আর নারীর কাছে অনেক নীতিবান মানুষই পরাজিত হয়। আর যে জিততে পারে, সে-ই প্রকৃত ব্যক্তিত্ববান।

" এরকম ব্যক্তিত্ববান লোক সমাজে কয়জন পাবেন? চলুক না মানুষ তার নিজ নিজ গতিতে, রুচিতে। কান-মন দিলাম না এসবে। আমি আমার মতো চলবো। দরকার নেই আমার কোন রহস্য উদঘাটনের। কিন্তু আপনার অবচেতন মন আপনার সেই কথা শুনবে না।

সে সন্তুষ্ট হবে না আপনার এই সান্ত্বনায়। রহস্য ছিল, আছে থাকবে, খানিকটা উদঘাটিত হবে। বস্তুগত বিষয়ের রহস্য উদঘাটন সহজ। কিন্তু অবস্তুগত বিষয়ের রহস্য উদঘাটন সম্ভব না। কারণ, এটি নিয়ত পরিবর্তনশীল, জটিল।

রহস্য নিয়ে লিখতে গিয়ে অনেক কিছুই মাথায় একসাথে এসে তালগোল পাকিয়ে ফেলছে। লেখাটা অনেক বড় হয়ে গেল। তাই লেখাটার ভিতর থেকে অনেক অংশ কেটে সংক্ষিপ্ত করে ফেললাম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।