আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আপনাদের পাড়ার রাজাদা (কাহিনী-২১)



রাজাদা আবারো চাকরী ছাইড়া দিল। এইবার লইয়া রাজাদা এগারোবার চাকরী ছাইড়া দিল। আমি কইলাম - রাজাদা - তোমার এইবার চাকরী ছাড়ার কারনডা কি? হ্যায় কইল - একই কারন। টপ বস কোইলকাতারথন আইয়া কয় ব্যবসা এইবারে ভাল হয় নাই। কাম করনের নজর আছে কিনা ।

হালার চাকরীই ছাইড়া দিলাম। বোঝ এখন, তগো ব্যবসা কোন হালায় বাড়ায়। রাজাদা একখান রংয়ের কোম্পানীতে চাকরী করতো। আগেরটাও রংয়ের কোম্পানী ছিল। তার আগেরটাও রংয়ের কোম্পানী ছিল।

তার আগেরটা সিন্থেটিক আঠার কোম্পানী ছিল। তার আগেরগুলা কি কোম্পানী ছিল এখন আর মনে নাই। তা- রাজাদা, এখন কি করবা ? - আমি জিগাইলাম। বউয়ের কামাইতে খাইবা। ? থুইয়া দে তর বউয়ের কামাই।

রাজাদা আমার উপর ক্ষেইপা গেল। আমার কি পয়সা নাই? বউয়ের কামাইতে খাইতে হইব? তাইলে শ্বশুরের পয়সায় খাইবা? হ্যার শ্বশুর বহুত পয়সা লইয়া রিটায়ার করছে। একখানই মাইয়া। মাইয়াও কাম করে। সাহারা কোম্পানীতে বেচনেরই কাম করে।

থুইয়া দে শ্বশুরের পয়সা । এইবার আমি একখান রেঁস্তোরা খুলুম । তুমি কি বাবুর্চি যে রেঁস্তোরা খুলবা । তুমি রেঁস্তোরার কি জানো। আমি জিগাইলাম।

ফাষ্ট ফুড বেচুম । একজন সেফ রাইখা দিমু । ব্যস দেখবিয়ানে। গর গর কইরা আমার রেঁস্তোরা চলবো। তগো কিন্তু বাকী দিমুনা - এই আমি আগের থেইকাই কইয়া রাখলাম ।

রাজাদা সবজান্তার মতো কইলো । আমি কইলাম - হ দেখুমনে। খোলোতো আগে। পয়সা দিয়াই খামু । তারপর রাজাদার লগে অনেকদিন দেখা হয় নাই ।

একদিন ভর সন্ধ্যাবেলায় বাপী (রাজাদার শ্যালক) আইসা কইল রাজাদারে সকাল থেইকা পাওয়া যাইতেছে না । চলতো একটু খুইজা দেখি। গরু খুজা খুইজা রাজাদারে আর পাইনা । আমার একজন সাংবাদিক বন্ধু আছে, হ্যায় টিভিতে খবরের কাম করে। রাত্তির বেলায় হ্যার লগে দেখা হইতেই হ্যায় কইল কিরে আজকাল তর দেখা পাইনা ক্যান, থাকস কই ।

আমি কইলাম রাজাদারে খুজতাছি । হ্যায় কইলো - খাড়াও খাড়াও- তগো রাজাদার নাম শুনছি । আচ্ছা আয়তো আমার লগে। গেলাম হ্যার বাড়ীতে, ক্যামেরা খুইলা দেখাইয়া কয়, দ্যাখতো এই লোকটা তগো রাজাদা কিনা ? হ হ, রাজাদাই তো । জলে ডুইব্যা রইছে ক্যান ? হ্যারে তুমি পাইলা কই।

আর কইসনা । লোকটা মানে তগো রাজাদা আইজ জলে ডুইবা মরতে গেছিল। ভাগ্যচক্রে আমি হালা ঐখান দিয়াই বাইক লইয়া আইতেছিলাম । লোকটারে জলে ডুবতে দেইখ্যা আগে ভাল কইরা জম্পেস কইরা ছবি তুইলা তারপর লোকজন ডাকাডাকি কইরা এইতো কিছুক্ষণ আগে হাসপাতালে দিয়া আইলাম। লোকটা বাঁইচ্যা গেছে ।

আমি কইলাম তুমি কি ছবি আর খবর পাঠাইয়া দিছো ? হ্যায় কইলো না পাঠাইতে পারি নাই । লিংক পাইতেছি না। আমি কইলাম - মইরা থাকুক লিংক । তুমি কি খবর পাঠাইবাই । খবরটা না পাঠাইলে হয়না? হ্যায় কইলো - কয়দিন ধইরা কোনো খবরই নাই, যাও একখান খবর পাইলাম তাও তগো রাজাদারেই পাইলাম ।

কি করি ক'তো? আমি কইলাম - খবরটা চাইপা যাও। জলে ডুইবা মৃত্যুতো হয় নাই । মরলে নাহয় খবর হইতো । রাজাদার শ্বশুরের লেইগা রাজাদা সেইবার বাইচ্যা গেল। অনেকদিন পর রাজাদার লগে দেখা হইতেই - হই হই কইরা কইলাম - হাই রাজাদা, খবর কি কও - ভালো আছো তো ? তুমি এখন কি করতাছো ? হ্যায় কইলো - এখন আমি মন দিয়া আগের মতই রং বেচতাছি ।

দেখলাম রং বেচাটাই আমার আসল কাজ। রেঁস্তোরা চালাইতে আমি পারুম না । তা তুমি মরতে গেছিলা ক্যান - এই কথাটা জিগাইবার আগেই হ্যায় কইল মরার গপ্পটা আরেকদিন কমুনে । বিদেশ থেইকা অনেক লোক আইছে, তাগো লইয়া একটা কনফারেন্সে যাইতাছি। পরে আসুমনে।

রাজাদা চইলা গেলো । দেখি পিছে পিছে রাজাদার বউও যাইতাছে। বউদিরে কইলাম - যান কই? বউদি কইলো, তগো রাজাদার মাথাটা যেন ক্যামন হইয়া গেছে, পিছে পিছে যাই, আবার যদি কিছু কইরা বসে? আমাগো কথা আর সরলো না ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.