আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লোকসানের জন্য ১৭ বছর বন্ধ থাকা রেলপথ ভারতের স্বার্থে চালু হলে ফেনী নদীর পানি লুট কোন ব্যাপার হল?

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ উজানে পানি তুলে নেয়ায় একসময়ের খরস্রোতা ফেনী নদীর ওপর নির্মিত শুভপুর ব্রিজ যেন ওভার ব্রিজের কাজ করছে মুহুরী প্রজেক্টের জমানো পানি শুষ্ক মওসুমে ত্রিপুরার জন্য তুলে নিতে ফেনী নদী নিয়ে আগ্রাসী তৎপরতায় নেমেছে ভারত। নদীটির উৎপত্তি তাদের ভূখণ্ডে বলে দাবি করে আসছে ভারত। তাদের সে দাবি ও যুক্তি বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের কাছে বরাবরই ছিল হাস্যকর। বাংলাদেশের পার্বত্য উপজাতিরা জানান, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড় নয়, বাংলাদেশের মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি উপজেলার মধ্যবর্তী ভগবানটিলা নামের একটি পাহাড় থেকেই এ নদীর যাত্রা শুরু। পাহাড়ের ছড়া থেকে উৎপত্তির পর নদীটি সীমান্ত পার হয়ে ভারতের ইজেরা গ্রামে প্রবেশ করে এবং সেই গ্রাম থেকেই নদীটি ফেনী নদী নামে পরিচিত।

দুই দেশের সীমান্ত ঘেঁষে বেশ কিছুটা অগ্রসর হওয়ার পর নদীটি চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাইর আমলীঘাট হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ফেনীর ছাগলনাইয়া, সোনাগাজী চট্টগ্রামের মিরসরাই হয়ে মিলিত হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। চুক্তি ছাড়াই পানি তুলে নিচ্ছে ভারত ফেনীর ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী, পরশুরাম উপজেলার অসংখ্য খাল-ছড়ায় পাকিস্তান আমল থেকে বাংলাদেশীরা শুষ্ক মওসুমে কৃষিসহ বিভিন্ন তরিতরকারি উৎপাদন করত। ভারত উজানে বাঁধ দিয়ে ওই সব খালের পানি শুষ্ক মওসুমে আটকে রেখে নিজেরা চাষাবাদ করে। বর্ষাকালে ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশে কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি করে। ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার সাবরুম মহকুমার সীমান্তসংলগ্ন মিরসরাইয়ের অলিনগর, খাগড়াছড়ির রামগড়সহ বিদ্যুৎচালিত লো লিফট পাম্প বসিয়ে কোনো রকম চুক্তি ছাড়াই ফেনী নদী থেকে পানি তুলে নিচ্ছে ভারত।

এক সময়ে ফেনী নদীতে নামতেও যেখানে ভারতীয় বিএসএফ ভয় পেত। বর্তমানে ফেনী নদীতে নামতে ও তীরবর্তী এলাকা রক্ষার কাজে বাংলাদেশকে বাধা দিচ্ছে বিএসএফ। এক সময় পুরো ফেনী নদীই ভারতের দখলে চলে যেতে পারে বলে স্বাধীনতার পূর্ব থেকে বসবাসকারী নদী তীরবর্তী লোকজনের আশঙ্কা। বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মুহুরী প্রজেক্টের আটকানো পানি দিয়ে ভারত ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষের চাষাবাদসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবহারের জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তারা অনুমতি ছাড়াই শীতকালে পাম্প বসিয়ে পানি চুরি করছে অব্যাহতভাবে।

আগামী শুষ্ক মওসুমে ফেনী নদীতে পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ শুরু করবে বলে সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা ভারতীয়দের থেকে জানতে পেরেছেন বলে জানান। ফেনী নদীর পানির ওপর মুহুরী, কহুয়া, কালিদাশ পাহাড়িকাসহ অসংখ্য ছড়া ও খালের অস্তিত্ব নির্ভর করছে। অপর দিকে ফেনীর পরশুরাম সীমান্তে পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় মুহুরী-কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি প্রায় শুকিয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার একর ইরি-বোরো ক্ষেত হুমকির মধ্যে পড়েছে। ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে শুষ্ক মওসুমে ইরি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১৫৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত দেশের ষষ্ঠ বৃহত্তম মুহুরী সেচ প্রকল্পের আওতায় ফেনী নদী, মহুরী-কহুয়া নদীর তীরবর্তী ২০ হাজার হেক্টর জমি চলতি মওসুমে ইরি-বোরো আবাদ হয়নি বলে জানা গেছে। ভারত ফেনী নদীর পানি নিয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে মুহুরী সেচ প্রকল্প।

ফেনী নদীর পানির ওপর চট্টগ্রাম ও ফেনী জেলার কয়েক কোটি মানুষের জীবন জীবিকা নির্ভরশীল। তীরবর্তী কয়েক লাখ মানুষ ফেনী নদীর পানির ওপর প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল। কয়েক হাজার জেলে পরিবারের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস ফেনী নদী। পানির অভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে কয়েক লাখ মৎস্য খামার। এলাকার রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতিক্রিয়া : জাতীয় রাজনীতিতে যতই বিভাজন থাকুক ফেনী নদীর পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট নির্মাণে ভারতকে বাংলাদেশের সম্মতি দেয়ার খবরে নদী তীরবর্তী ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে ফেনী নদীর পানি রক্ষার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।

মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন জানান, ভারত ফেনী নদী থেকে অব্যাহতভাবে পানি নিয়ে গেলে এ অঞ্চলের কৃষি, মৎস্যচাষ সমূলে ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল আনাম তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ভারতকে ফেনী নদী থেকে পানি দেয়ার সুযোগ দিলে কমপক্ষে ১৫টি উপজেলার কৃষি, মৎস্যখামার ধ্বংস হওয়া ছাড়াও অসংখ্য খাল-ছড়াসহ এ অঞ্চলের নদীগুলো অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলবে। ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা একরামুল হক বলেন, ফসলহানির ক্ষতিসহ কোটি কোটি মানুষের জীবনজীবিকার কথা আমাদের ভাবতে হবে। তিনি ভারতকে ফেনী নদীর পানি দেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

ফেনী জেলা জামায়াতের আমির এ কে এম নাজিম ওসমানী ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এ কে এম সামছুদ্দীন জানান, বর্তমান সরকারের সাথে যোগসাজশে ভারত এত দিন চুক্তি ছাড়াই ফেনী নদীতে পাম্প বসিয়ে একতরফা পানি তুলে নিয়েছে। এখন পানি শোধনের প্ল্যান্ট নির্মাণের সম্মতি পেয়ে ভারত তার ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য ফেনী নদীর পানি তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে মরুভূমি বানানোর সুযোগ পাবে। উপজেলা জামায়াতের আমির আবুল হোসাইন ফারুকী বলেন, ভারতকে খুশি করতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে এলাকাবাসী মনে করেন। খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অদুদ ভূঁইয়া জানান, ভারতকে পানি দেয়ার ঘটনায় জনমনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, এখানে ভারত তার প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের ওপর জোর খাটিয়ে ফেনী নদীর পানি নিয়ে যাচ্ছে, দখল করে আছে বাংলাদেশের ভূমি, এতে বাংলাদেশের মানুষ আরো বেশি ভারতবিরোধী হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ফেনী জেলা পরিষদের প্রশাসক ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আজিজ আহম্মদ চৌধুরী জানান, ফেনী নদী আমাদের, আমরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হই সে দিকে আমাদের নজর রাখতে হবে।

মুহুরী সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবস্থাপনা ফেডারেশনের সভাপতি, ফেনী-১ আসনে বিগত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়েজ আহম্মদ জানান, ফেনী নদী থেকে ভারতকে পানি দিলে কিংবা ভারত অব্যাহতভাবে পানি তুলে নিলে মুহুরী নদীসহ এ অঞ্চলে বাংলাদেশের জন্য পানি থাকবে না। এতে কৃষি, মৎস্যসহ পরিবেশের ওপর মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপির সভাপতি নুর আহম্মদ মজুমদার জানান, ফেনী নদী বাংলাদেশের, এত দিন ভারত কোনো রকম চুক্তি ছাড়াই পানি তুলে নিয়েছেÑ এখন নদীতে প্ল্যান্ট নির্মাণ করে পানি নেয়ার সম্মতি দেয়াটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা জানান, ফেনী নদীর ওপর ভারতের কুনজর পড়েছে, মরুভূমি থেকে বাঁচতে ও নদী রক্ষার জন্য দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে এ অঞ্চলের মানুষকে নদী রক্ষায় আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আবুল হাসান ছাগলনাইয়া (ফেনী) তারিখ: ২৭ জানুয়ারি, ২০১৩ http://www.dailynayadiganta.com/new/?p=101680 ************* সেই ১৯৯৬ সালে হাসিনার প্রথম মেয়াদে লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে ফেনী-বিলোনিয়া রেললাইন বন্ধ করে দিয়েছিল।

এখন ১৭ বছর ভারতের পণ্য পরিবহনের স্বার্থে পুনরায় চালুর প্রক্রিয়া চলছে; বিলোনিয়া স্থলবন্দরে রেল ট্রানজিট চায় ভারত http://www.dailynayadiganta.com/new/?p=99922 গত বছর ২০১২র ১৪ই ডিসেম্বর ভারতের সহকারী হাইকমিশনার সমুনাথ ঘোষ বিলোনিয়া স্থলবন্দর এলাকা ও মুহুরীচর এলাকা ঘুরে গেছেন। এ সময় পরশুরাম পৌরমেয়র নিজাম উদ্দিন সাজেল ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদারসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ তার সাথে ছিলেন। গত বছরের ১০ জুন বিলোনিয়া স্থলবন্দরে রেল ট্রানজিটের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে উভয় দেশের মধ্যে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো: মোকাব্বির হোসেন। অন্য দিকে ভারতের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের স্থলবন্দর বিভাগের পরিচালক শ্রীমতি ইন্দ্রামতি।

এ সময় ফেনী বিজিবির ১৯ রাইফেল ব্যাটালিয়নের টু আইসি মেজর জিয়া উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে চট্টগ্রাম- ফেনী-বিলোনিয়া রেলপথে ত্রিপুরায় সরাসরি ট্রেনে পণ্য পরিবহনের বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সীমান্তের আরো পাঁচটি স্থলবন্দরকে কার্যকর করার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ বা ভারতের পক্ষ থেকে রেল ট্রানজিট নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে খোলাখুলি কোনো পক্ষই কথা বলেনি। রেল ট্রানজিটের জন্য ভারত তার অভ্যন্তরে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

জানা গেছে, ভারত সরকার আগরতলা থেকে উদয়পুর পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ করেছে। উদয়পুর থেকে একটি রেললাইন বিলোনিয়া মহকুমা ও একটি রেললাইন রামগড়সংলগ্ন সাবরুম মহকুমায় স্থাপনের কাজ করছে ভারত। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত পিলার ২১৬০ এলাকায় বিলোনিয়া স্থলবন্দরের অবস্থান। অন্য দিকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে এর দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। দীর্ঘ দিন ধরে ফেনী-বিলোনিয়া রেললাইন পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

১৯৯৬ সালে লোকসানের অজুহাতে আওয়ামী লীগ সরকার ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই রেলপথ বন্ধ ঘোষণা করেছিল। সম্প্রতি ফেনী সফরকালে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই রেলপথ চালুর ব্যাপারের ফেনীবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন। মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, ফেনী-বিলোনিয়া রেললাইন একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে এ রেললাইন চালুর উদ্দেশ্য নিয়ে গুঞ্জন চলছে সচেতন মহলে। বাংলাদেশ ভারতকে নদী, স্থল ট্রানজিট দিয়ে কি সুবিধা পাবে তার কোন নিশ্চয়তাতো নেই উপরন্ত বাংলাদেশের মানুষের কষ্টের টাকার ভর্তূকী দিয়ে ভারতীয় নৌযান, ট্রাককে জ্বালানি তেল দিচ্ছে।

সে কারণেই বলছিলাম যে ভারত হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে বাংলাদেশের থেকে ভর্তূকী নিয়ে নিতে পারে তখন তারা অভিন্ন নদীর উজান হতে কেন অনুমতি নিয়ে পানি তুলবে? তারা জানে যে হাসিনার সরকার বলতে গেলে প্রায় কিছুই বলবে ন। এই সমন্ধে হাসিনার উপদেষ্টা গওহের রিজভীর সাফ কথা বাংলাদেশ নগদে কি পেল না পেল তারচেয়ে ভারত পেল মানেই দুই দেশের সুসম্পর্ক অগ্রসর হল; http://www.youtube.com/watch?v=O3I-p-eBAJE আজকে এই হাসিনা গংই হল তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির অধিকর্তা এবং কে মুক্তিযোদ্ধা ও কে রাজাকার তার একতরফা সার্টিফিকেট দাতা!  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।