আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পিতা...

হঠাৎ শুন্যতা ...................

গত ২৫ শে সেপ্টেম্বর অফিসের কাজে মতিঝিল যাওয়ার প্রয়োজন হয়েছিল। আমাদের গাড়ি যখন রাজমনি সিনেমা হলের সামনে তখন হঠাৎ হাতের মবাইল টা বেজে উঠলো। কলার আই ডি তে লেখা “বাবা”। আমার অস্থীরতা বেড়ে গেল। কারন বাবা খুব বেশি প্রয়জন না হলে ফোন দেন না।

ফোন টা রিসিভ করতেই মার কন্ঠসর পেলাম “...তারাতারি চলে আয়...তোর বাবার শরীর খুব খারাপ”। আমি গাড়ি থেকে নেমে একটা ক্যাব খুঁজতে লাগলাম। অনেক ছুটা ছুটির পর একটা থ্রি হুইলার সিএনজি ট্যাক্সি পেলাম, তাও সে পুরো রাস্তা যাবে না। তাতেই উঠে পড়লাম। আর মবাইলে খোঁজ নিচ্ছিলাম বাবার অবস্থার।

তাকে হার্ট ফাউন্ডেসনে নেয়া হচ্ছে। এই যাত্রায় আমা। চোখে ভেসে উঠছিল বাবাকে নিয়ে হাজারো স্মৃতী। এইতো সেদিন তিনি বলছিলেন...তুই খুব গম্ভির থাকিস...ছোট বেলায় তো এরকম ছিলি না। ...আফিস থেকে ফিরে একটু পাশে বসলেও তো পারিস...।

আজেবাজে খরচ না করে ভবিষ্যতের জন্য জমালেও তো পারিস (ঈদ উপলক্ষে তার জন্য একটা ফতুয়া কেনা হলে...)...কিছু দিলে তোদের মা কে দে...বেচারা সারা জীবন অনেক কষ্ট করল। ...আমার কোন চিন্তা নাই...আমি জানি তোরা এখন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবি...(প্রথম যেদিন টাকা উপার্যন করলাম)। এরকম হাজারো টুকরো টুকরো স্মৃতী চোখ কে ঝাপসা করে দিচ্ছিল বারেবার। থ্রি হুইলার সিএনজি ট্যাক্সি ড্রাইভারের বোধহয় দয়া হল। তিনি বাড়তি ৩০ টাকার বিনিময়ে আমাকে হার্ট ফাউন্ডেসনে নামিয়ে দিলেন।

আমি এমার্যেন্সীর দিকে এগিয়ে গেলাম... পরিচিত সব চেহারা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি এমার্যেন্সীর ভেতরে ঢুকলাম...বাবা...আমার বাবা...বিছানায় শুয়ে আছেন...লাইফ সাপোর্ট যন্ত্র তার চারপাশে...তিনি ঘোলাটে চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমার ভিষন কান্না পেল। আমি তার চোখের আড়াল হয়ে কান্না চাপলাম। কারন এখন সব দায়িত্য আমার... গতকাল বাবাকে বাসায় নিয়ে এসেছি।

তিনি পুরোপুরি সুস্থ্য নন। হয়তো পেইস মেকার লাগাতে হবে। দুই সপ্তাহ পর আবার ডাক্তার দেখাতে হবে। পৃথিবী ছাড়তে হবে একদিন ...তবু যতদিন পৃথিবীর বুকে আছে ভাল থাকুক আমার বাবা...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।