আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুভি: ডাস্টিন হফম্যান ও রবার্ট ডি নিরো: দুই সেরা নাম

রাজনীতি ও অর্থনীতি এই দুই সাপ পরস্পর পরস্পরকে লেজের দিক থেকে অনবরত খেয়ে যাচ্ছে

অভিনয় জগতের দুই দিকপাল। দুজনেই জন্মে§ছিলেন আগস্ট মাসে। দুজনেই একাধিক অস্কার বিজয়ী। মেথড অভিনয়েরও প্রধান দুটি নাম তারা। এদের একজন রবার্ট ডি নিরো, অন্যজন ডাস্টিন হফম্যান।

ডাস্টিন হফম্যান বয়সে খানিকটা বড়। তিনি জন্মে§ছিলেন ১৯৩৭ সালের ৮ আগস্ট। রবার্ট ডি নিরোর জন্মš§ ১৯৪৩ সালের ১৭ আগস্ট। হফম্যানের জন্মš§ লস এঞ্জেলস-এ। আর নিউ ইয়র্কে জন্মš§ হলেও রবার্ট ডি নিরোর পূর্ব পুরুষরা ইতালিয়ান।

ডাস্টিন হফম্যানের অভিনয় জীবন শুরু ৬০ দশকের মধ্যভাগ থেকে। রবার্ট ডি নিরোরও তাই। দুজনেই রাজনৈতিক মতাদর্শে রিপাবলিকান বিরোধী, ডেমোক্রাটদের সমর্থক। এর মধ্যে ডি নিরো ডেমোক্রাটদের পে রীতিমত সক্রিয় কর্মী। দুজনেই দু’বার করে বিয়ে করেছেন।

হফম্যান সেরা অভিনেতা হিসাবে দুবার অস্কার পেলেও মনোনয়ন পান আরো পাঁচ বার। গোল্ডেন গ্লোব পেয়েছেন ৪ বার এবং মনোনয়ন পান আরো ৭ বার। রবার্ট ডি নিরো ২ বার অস্কার পেলেও মনোনয়ন পান ৪ বার এবং গোল্ডেন গ্লোব একবার পেয়েছেন, আর মনোয়নন পান ৭ বার। ডাস্টিন হফম্যানের সেরা পাঁচ: অসংখ্য চলচ্চিত্র থেকে সেরা পাঁচ বেছে নেওয়া সহজ নয়। ১।

গ্রাজুয়েট: হফম্যানের তৃতীয় ছবি। ১৯৬৭ সালে মুক্তি পায়। মাইক নিকোলস এর পরিচালক। গ্রাজুয়েট অস্থির বেনজামিনের গল্প, যে গ্রাজুয়েট হয়েই এক মধ্য বয়সী মহিলা মিসেস রবিনসনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। পরে সম্পর্ক হয় এলিনের সঙ্গে যে কিনা আবার মিসেস রবিনসনের মেয়ে।

এই ছবির বাড়তি পাওনা সায়মন ও গারফুনকালের অসাধারণ কিছু গান। ২। মিডনাইট কাউবয়: জন ভয়েট আর হফম্যানের অসাধারণ অভিনয়ের ছবি। বড়দের জন্য সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত একমাত্র ছবি যেটি অস্কারে সেরা চলচ্চিত্রের মর্যাদা পায়। রাস্তো রিজ্জোর চরিত্রে হফম্যান সঙ্গি হয় টেক্সান জো বাকের।

আমেরিকার অস্থির সময়ের এই ছবিতে জো অর্থের জন্য পুরুষ যৌনকর্মীতে পরিণত হয়। বলে রাখি জন ভয়েট অভিনেত্রী এঞ্জেলিনা জলির বাবা। ৩। ক্রামার ভার্সেস ক্রামার: ১৯৭৯ সালের অস্কারে সেরা ছবি ও সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতে নেওয়া এই ছবি। সঙ্গে আছেন আরেক সেরা মেরিল স্ট্রীপ।

স্বামী-স্ত্রীর ডিভোর্স আর একমাত্র ছেলে কার কাছে থাকবে তা নিয়ে অসাধারণ এই চলচ্চিত্র। অভিনয় আর গল্প এই ছবির প্রাণ। এই ছবি নকল করে যে কত ছবি হয়েছে তার ইয়ত্তা নাই। ৪। টুটসি : অভিনেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠা না পেয়ে মাইকেল ডরসে হয়ে যায় ডরোথি।

মেয়ে সেজে অভিনেত্রী হিসাবে নিজের স্থান করে নিতে থাকে ডরোথি। এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য বাস্তব জীবনেও হফম্যান মেয়ে সেজেই থেকেছেন দীর্ঘদিন। রোমান্টিক-কমেডি এই ছবি মুক্তি পায় ১৯৮২ সালে। ৫। রেইনম্যান: ১৯৮৮ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে হফম্যান দ্বিতীয়বারের মতো অস্কার জেতেন।

ছবিতে আরো ছিলেন টম ক্রুজ। অটিজম রোগে আক্রান্ত হফম্যানের নামে রাখা বিপুল পরিমান অর্থের দিকে হাত বাড়ায় তারই ভাই ক্রুজ। মানুষের সম্পর্ক নিয়ে এই ছবির প্রাণ হফম্যানের অভিনয়। এর বাইরেও অসংখ্য ভাল ছবি আছে হফম্যানের। যেমন, স্টিভ ম্যাককুইনের সঙ্গে সেই বিখ্যাত প্যাপিলন, স্যার লরেন্স অলিভিয়ারের সঙ্গে থ্রিলার ম্যারাথন ম্যান, ওয়াটার গেট কেলেঙ্কারি খুঁেজ বের করা দুই সাংবাদিকের সত্য কাহিনী নিয়ে ছবি অল দ্য প্রেসিডেন্টস ম্যান, থ্রিলার আউটব্রেক এবং রবার্ট ডি নিরোর সঙ্গে দুই ছবি ওয়াগ দ্য ডগ ও কমেডি মিট দ্য ফকার্স।

রবার্ট ডি নিরোর সেরা পাঁচ: কেবল মার্টিন স্করসিজ দিয়েই রবার্ট ডি নিরোর সেরা পাঁচ ছবির তালিকা তৈরি করা সম্ভব। নিরো আর স্করসিজ এক অবিচ্ছেদ্য নাম। এর বাইরেও রয়েছে নিরোর অনেক-অনেক ভাল ছবি। ১। গড ফাদার (দ্বিতীয় পর্ব): ভিটোর গড ফাদার হয়ে উঠার কাহিনী।

ভিটো অর্থাত মার্লোন ব্রান্ডো ছিলেন প্রথম পর্বে। ভিন্ন মাত্রার যে অভিনয় দিয়ে মার্লোন চলচ্চিত্র জগতের ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছিলেন। ঠিক তারই যুবক বয়সের অভিনয় করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেলেন ডি নিরো। ১৯৭৪ সালের এই ছবি থেকে সেরা সহ অভিনেতার অস্কার জেতেন ডি নিরো। এই ছবিই নিরোর স্থান পাকা করে দেয় হলিউডে।

২। ট্যাক্সি ড্রাইভার: মাইকেল মুরের ডকুমেন্টারি ফারেনহাইট ৯/১১ এ একটি দৃশ্যে দেখা যায় রবার্ট ডি নিরো আল গোরের ঠিক পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন। মুর তাঁকে 'সেই ট্যাক্সি ড্রাইভার গাই' বলে পরিচয় করান। ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া মার্টিন স্করসিজের ট্যাক্সি ড্রাইভার ভিয়েতনাম যুদ্ধ পরবর্তী চরম অস্থির সময় নিয়ে সম্ভবত সেরা ছবি। নিঃসঙ্গ ট্যাক্সি ড্রাইভার ট্রাভিস একজন অল্প বয়সী পতিতাকে (জোডি ফস্টার) রা করতে সচেষ্ট হয়।

বিশ্বের যে কোনো সেরা ছবির তালিকায় এই ছবিটি থাকবেই। ৩। রেজিং বুল: রবার্ট ডি নিরো দ্বিতীয় অস্কার এই ছবি থেকেই পান। তবে এই ছবি বিখ্যাত হয়ে আছে এর পরিচালক স্করসিজের জন্য। সমালোচকরা এখনো বলেন যে এটাই তার সবচেয়ে ভাল ছবি, এই ছবিতে সেরা পরিচালকের অস্কার না দেওয়া হচ্ছে অস্কার ইতিহাসের অন্যতম খারাপ উদাহরণ।

সমালোচকরা মনে করেন এটি বিশ্বের সেরা চলচ্চিত্রের একটি, বিশেষ করে ৮০ দশকের সেরা ছবি যে রেজিং বুল তা এখন স্বীকৃত। জ্যাক লামটো নামের এক বক্সারের জীবনের কাহিনী নিয়ে তৈরি এই ছবি। এই ছবি করার জন্য ডি নিরো ৬০ পাউন্ড ওজন বাড়িয়েছিলেন। ৪। দি ডিয়ার হান্টার: ১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবি ভিয়েতনাম যুদ্ধ নিয়ে।

সঙ্গে আছে মেরিল স্ট্রীপ ও ক্রিস্টোফার ওয়াকেন। এরিখ মারিয়া রেমার্কের ত্রি কমরেডস-এর ছায়া অবলম্বনে তৈরি ডিয়ার হান্টার। সম্পর্ক, বন্ধুত্ব আর যুদ্ধের হতাশা নিয়ে এই ছবি সেরা চলচ্চিত্রের অস্কার জিতেছিল। ৫। গুডফেলাস: মার্টিন স্করসিজের আরেকটি ছবি।

মাফিয়া নিয়ে এ পর্যন্ত যত ছবি হয়েছে গুডফেলাসকেই সেরা বলা হয়। তিন বন্ধুর মাফিয়া হওয়ার কাহিনী। সত্যি ঘটনা নিয়ে এই ছবি। সঙ্গে আছে রে লিওটা ও জো পেচি। ১৯৯০ সালে মুক্তি পায় গুডফেলাস।

মাত্র পাঁচটি ছবির তালিকা ডি নিরোর জন্য যথেষ্ট না। আরো অনেক ভাল ছবি আছে রবার্ট ডি নিরোর। যেমন, ১৯৯০ সালের মুক্তি পাওয়া রবিন উইলিয়ামস এর সঙ্গে অ্যাওয়াকেনিংস, স্করসিজের পরিচালনায় কেপফিয়ার, ক্যাসিনো, দি কিং অব কমেডি ও মিন স্ট্রিটস, বার্তোলুচ্চির ১৯০০, ব্রায়ান ডি পালমার আনটাচেবলস, ওয়ানস আপন এ টাইম ইন আমেরিকা, হিট, ওয়াচ দ্য ডগ, মিডনাইট রান ইত্যাদি। (প্রথম আলোতে প্রকাশিত)

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.