আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রাগৈতিহাসিক ফাউন্টেন পেন

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

কি অদ্ভুত সেই দিনগুলি! সবেমাত্র পেন্সিল থেকে কলমে প্রমোশন পেয়েছি। কোন ক্লাসে মনে নেই। তবে একদিন বাবা ঝকঝকে উইনসন কলম আর কালির দোয়াত নিয়ে এলেন। কি চমৎকার সে কলমের নিব, সবচেয়ে কম দামের ফাউন্টেন পেন ছিল বোধহয় উইনসন। বাবা ব্যবহার করতেন পাইলট, ইয়থ।

আমার প্রথম কাজ হলো পেনটি খুলে নাড়ী নক্ষত্র দেখা। একটা টিউবের মত রয়েছে যা কালি ধারণ করে। সেটা বের করে বারবার দোয়াতের মধ্যে চুবিয়ে আবার কালি বের করা ছিল দারুন মজার। তারপরে ইয়োথ কলম ব্যবহার করা শুরু করলাম হাইস্কুলে উঠে। প্রতিদিন ক্লাসে যে উইনসন কলমটা নিয়ে যেতাম পরীক্ষার সময় সেটা বাদ।

পরীক্ষা মানেই ছিল নতুন কলম, নতুন পেন্সিল আর জ্যামিতি বক্স। এগুলো পাওয়া যেত অবশ্য ফাইনাল পরীক্ষার সময়। ক্লাস এইট বা নাইনের সময় থেকে মনে হয় ওয়ানটাইম বলপেনের প্রচলন শুরু হয়। ইকোনো তখন তিনটাকা দাম। কিন্তু সেসময়েও পরীক্ষায় ইনকপেনের ব্যবহার হতো।

বলপেন আর ফাউন্টেন পেনে হাতের লেখায় একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করতাম। দ্রুত লেখার জন্য বলপেন আর গোটা গোটা অক্ষর আর সুন্দর কালিতে ঝরঝরে লেখার জন্য ফাউন্টেন পেন। কিন্তু পরবর্তী ক্লাসগুলোতে লেখার চাপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় পরীক্ষাগুলো বলপেন দখল করে নিল। এমনও হয়েছে ফাউন্টেন পেন দিয়ে লিখতে লিখতে যখন মনে হয়েছে সময় সংকটে ভূগছি তখন বল পেন তুলে নিয়েছি। স্কুলে ছেড়ে কলেজে ভর্তির পরে আর ফাউন্টেন পেন ব্যবহার করিনি।

তারপরে একসময় ভুলেও গেলাম ফাউন্টেন পেন বলে এককালে কিছু ছিল। অতিসম্প্রতি আমার এক বন্ধু বিদেশ থেকে পাইলট কলম পাঠালো। একটা গিফট প‌্যাকেটে চাবির রিং, ওয়ালেটের সাথে একটা পাইলট কলম। পাইলট মানেই আমার মনে হতো ফাউন্টেন পেন। গতকাল আলমারি গোছাতে গিয়ে পেয়ে গেলাম কলমটা।

শৈশবের মত সেই এক্সাইটমেন্ট ভর করলো, খুলে দেখতে হবে ভেতরে কি আছে। খুলে ফেললাম, কিন্তু আশ্চর্য্য, এটা ফাউন্টেন পেন নয়, ভিতরে কোন টিউব নেই, রয়েছে কেবল শিশ!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.