আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অতপর ভুল স্বীকার করিলে তাহাকে হত্যা করা হইলো

যদি নির্বাসন দাও.................................................................. আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরী ছোঁয়াবো আমি বিষ পান করে মরে যাবো! বিষণ্ন আলোয় এই বাংলাদেশ নদীর শিয়রে ঝুঁকে পড়া মেঘ, প্রান্তরে দিগন্ত নির্নিমেষ- এ আমারই সাড়ে তিন হাত তুমি।

শিরোনাম থেকে বুঝতে পারছেন লেখাটা অমনিবাস তথা অরপি তথা অমি রহমান পিয়ালকে নিয়ে। প্রোফাইলে মুহম্মদ(সা-কে ব্যঙ্গ করে আঁকা কার্টুনের ছবিটি সংযুক্ত কররা জন্য অমনিবাসকে ব্যান করা হয়েছে। অমনিবাসের অন্য সব নিকও ব্যান করা হয়েছে (ব্লগ মারফত জানা)। সেটা যৌক্তিক কি অযৌক্তিক সেই সিদ্ধান্ত টানছি উপসংহারে।

তার আগে আসুন একটু বিশ্লেষণ করি ঘটনা পরম্পরা। ১. অমনিবাস তার প্রোফাইলে বিতর্কিত কার্টুনটি যোগ করলে সাথে সাথে ইবনে সালাম নামে একজন ব্লগার সেটার ছবিসহ প্রতিবাদ জানায়। অমনিবাস তখন ছবি পরিবর্তন করে এবং উল্লেখ করে যে ওটা যে রাসুল(সা-কে ব্যঙ্গ করে আঁকা কার্টুন তা তিনি জানতেন না। ঘটনার জন্য তিনি দু:খ প্রকাশও করেন। কার্টুনটির স্থায়ীত্ব ছিলো চার কি পাঁচ মিনিট অমনিবাসের ব্লগে।

আর কতক্ষণ স্থায়ী ছিলো প্রতিবাদকারীদের ব্লগে? না, জানতে চাই না। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের উপন্যাস অবলম্বনে রিতুপর্ণ ঘোষ 'দহন' নামের একটা ছবি নির্মাণ করেন। ছবির মূল ঘটনা একটি মেয়েকে নিয়ে। যে মেয়েটি তার স্বামীর সাথে সিনেমা দেখে ফেরার সময় ষ্টেশনে কিছু বখাটে ছেলের হাতে শারীরকিভাবে লাঞ্ছিত হন। কিন্তু তার চেয়ে বেশি লাঞ্ছিত হন যখন আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, স্বামীর অফিসের কলিগ, পত্রিকার লোকেরা জানতে চান- শ্লীলতাহানি কাকে বলে? কতুটুকু কি করলে শ্লীলতাহানি হয়? শ্লীলতাহানি আর রেপের মধ্যে পার্থক্য কি? সভ্য সমাজের মানুষের এই নির্মম শ্লীলতাহানি মেয়েটার কাছে সেই বখাটে ছেলেদের শারীরিক লাঞ্ছনার চেয়ে অনেক অনেক বেশি কদর্য মনে হয়।

রাসুল(সা-এর কার্টুন প্রোফাইলে ভুলবশত: সংযুক্ত করার চেয়ে পরবর্তীতে অনেক ব্লগারকে সেই কার্টুন দেখার সুযোগ দেয়াটা (এই কার্টুনটা এর আগে আমি নিজেও দেখিনি) আমার কাছে আরো বেশি কদর্য মনে হয়েছে। ২. এবার আসি অমনিবাসকে ব্যান করার প্রসঙ্গে। অমনিবাসকে ব্যান করা হয়েছে ভালো কথা। তার ভুলের দন্ড হিসেবে কর্তৃপক্ষ সেটা করতেই পারে। কিন্তু তার বাকি নিকগুলো (বিশেষত অরপি এবং অমি রহমান পিয়াল) বন্ধ করাটা একেবারে অর্বাচীনতার পরিচায়ক।

একজন অমি রহমান পিয়ালকেই বড় দরকার আজকের এই দু:সময়ে। না, শুধু ব্লগের জন্য নয়, সমগ্র দেশের জন্য। সামহয়্যারের রাজাকার, জামাতী, পাকিপ্রেমীদের শায়েস্তা করার জন্য তার প্রয়োজন যতটা না তার চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। তার মুক্তিযুদ্ধের অসাধারণ পোস্টগুলি থেকে পাঠকদের বঞ্চিত করার অধিকার কর্তৃপক্ষের নেই। শুধু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক পোস্টগুলির জন্য আমি অরপির ভক্ত নই।

তার অসাধারণ স্যাটায়ার, তার চেয়েও অসাধারণ কবিতা লেখার ক্ষমতার জন্যই আমি তার মুগ্ধ পাঠক (শরত এবং তীরন্দাজের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার)। তাই অমি রহমান পিয়ালকে ব্যান করায় কার লাভ হয়েছে জানি না, কিন্তু সামহয়্যারের অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো নি:সন্দেহে। এমনিতে এখন সামহয়্যারে পড়ার মতো পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায় না পাতার পরে পাতা উল্টালে, অথচ কিছুদিন আগেও এই অবস্থা ছিলো না। এর মাঝে এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্তে যারা এখনো সামহয়্যারের ভালোবাসার মায়াজালে জড়িয়ে আছেন তাদের সেই সুতোয় যে ভালো টান পড়েছে সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। অনেক কিছুই বলা হলো।

তাই ছোট্ট করে বলছি আবার, অমি রহমান পিয়ালকে ব্যান করাটা অযৌক্তিক। কর্তৃপক্ষ সময় গেলে সাধন হবে না কিন্তু! ভালো থাকুক সামহয়্যারইন সবসময়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।