আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বপ্ন দেখি তোমায় নিয়ে

হাতে কলম নিয়ে কতদিন ভেবেছি তোমায় নিয়ে কিছু লিখব । কিন্তু লেখা হয়নি । না গল্প, না কবিতা, না একটি ছোট্ট অনুকাব্য । তুমি রয়ে গেছো হৃদয়েই, কখনো ভাষায় প্রকাশ করা হয়নি । কখনো বলতে পারি নি, কতটা ভালোবাসি তোমাকে ।

তবুও কেন যেন বড্ডো বেশি ইচ্ছে করে বিশ্বাস করতে যে, তুমি জানো আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি । তুমি জানো তোমার ছোঁয়ায়, তোমার স্বপনে, তোমার ভাবনায় আমি কতটা আলোড়িত হই । কতটা অনুপ্রাণিত হই যখন তোমায় স্বপ্ন দেখি । আর তাই হৃদয়ের বদ্ধশিকল ভেঙ্গে ঠিক করেছি তোমায় নিয়ে লিখবই আর চিৎকার করে বলবই, “হে বঙ্গজননী, আমি তোমাকে ভালোবাসি, অনেক অনেক ভালোবাসি । ” নবীন বাংলার স্বাধীনতা-উত্তর সময়ের এক তরুণ, সে একুশ শতকের বাসিন্দা ।

সে মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, শুধু তার গল্প শুনে গন্ধ শোঁকার চেষ্টা করেছে এই সোঁদা-মাটির । কিন্তু নবীন সে গন্ধ অনুভব করতে পারে না । হয়তো তার অত্যাধুনিক পারফিউমের কাছে হেরে গেছে আবহমান বাংলার সোঁদা-মাটির গন্ধ ! সে তার জ্ঞানপিপাসু চোখ দিয়ে দেখতে চায় অদেখা মুক্তিসংগ্রামকে । কিন্তু তার সেই চোখ ইতিহাস বিকৃতির ঘেরাটোপে পড়ে কেবলই হাতড়ে মরে, সত্যের খোঁজ আর পায় না । আর তাই সম্মুখসমরে জীবন-বাজি রেখে যুদ্ধ করা মুক্তিযোদ্ধার মুখটি যেন সেই চোখে বড়ই অস্পষ্ট ঠেকে ! দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে চায় ।

সে স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশকে জগতশৃঙ্গের চূড়ায় দেখার, সে অনুপ্রেরণা খোঁজে মুক্তিসংগ্রামের রক্তাক্তদিনের সাহসী যোদ্ধাদের কাছে । কিন্তু হায় ! মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় শুধু চেতনা-সংগ্রামের উদ্দীপনায় আর যুদ্ধদিনের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিচারণেই নয়, মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় সার্টিফিকেটে নির্ধারিত হয় । আজ রাজাকারও মুক্তিযোদ্ধা সাজে । আর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা বিনা চিকিৎসায়, অনাহারে মরে । বিভ্রান্ত হয়ে খুঁজে ফিরতে ফিরতেই হয়তো সে একদিন সন্ধান পায় ’৭১ নবীনের প্রেমিকমন দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে কিছু করতে চায় ।

সে স্বাধীনতার চেতনাকে বুকে জড়িয়ে বাংলাদেশকে এর কোনো দামাল জোয়ানের । কিন্তু কোথায় সেই দেশপ্রেমের চেতনা, কোথায় সেই জীবনবাজি রেখে দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার শপথ ? কেন সে আজ অট্টালিকা-বিলাসে মগ্ন ? কেন সে আজ ভুলে গেছে তার গৌরবোজ্জ্বল দিনের কথা ? কেন সে একটিবারও ভাবে না তার এই দেশের কথা, তার সেই সহযোদ্ধাদের কথা, যাদের অনেকে আজও জীবন সংগ্রামে মরণপণ লড়ছে ? এই অবক্ষয়ের দায় কি শুধুই তার একার ? তরুণ যুবার রক্তে আগুন জ্বলে, সে কিছু করতে চায়; সে পথ খোঁজে কিছু করার, দেশের জন্য কিছু করার । দিনবদলের ডাক, দেশ ও দশ বাঁচানোর হাঁক আর সমাজবদলের বিপ্লবী আহ্বান চারপাশ থেকে তাকে হাতছানি দেয় । তার তপ্ত হৃদয় সে স্লোগানদীপ্ত আহ্বানে সাড়া না দিয়ে পারে না । সে এই স্লোগান, পোস্টার আর ফেস্টুনে তার বুকের ক্ষুধা মেটানোর উপাদান খোঁজে ! সে আবারো বিভ্রান্ত হয় ।

পদে পদে বিভ্রান্তি তাকে হতাশ করে তোলে । সে বুঝতে পারে ক্ষমতালিপ্সু আর দূর্নীতিবাজ রাজনীতিকদের হাতের পুতুল হয়ে যাওয়া ছাত্ররাজনীতি তাকে শান্তি দিতে পারবে না । সে বেরিয়ে আসার পথ খোঁজে এই ভয়ঙ্কর মায়াজাল থেকে । আবার স্বপ্ন সাজাতে চায় তার প্রিয় জন্মভূমিকে নিয়ে । কিন্তু সে কি বেরিয়ে আসতে পারবে ? যদি পারেও, সে কি খুঁজে পাবে তার কাঙ্খিত পথের সন্ধান ? পারবে কি চিরদূঃখী বাংলামায়ের মুখে হাসি ফোটানোর সংগ্রামে জয়ী হতে ? আর কারাই বা হবে তার সেই সংগ্রামের সহযাত্ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.