আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাচ্চু রাজাকারের সাক্ষাৎকার

তি তি - আসসালামু আলাইকুম : ওয়ালাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। - আপনি বাচ্চু রাজাকার? : হ্যাঁ। - আপনার আসল নাম কী? কীভাবে আপনি বাচ্চু রাজাকার হলেন? : আরে আমার নাম বাচ্চু রাজাকার, বাঙালিরা নুচ্চু রাজাকার বলে। আমি ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী কাজ করে মুখে দাঁড়ি রেখে, দাঁড়ি লাল করে, ধর্মব্যবসায়ী হয়ে আবুল কালাম আযাদ হয়েছিলাম। : নাউযুবিল্লাহ।

- সুবহানাল্লাহ। - পাকিস্তানেই থাকেন? : হ্যাঁ। - কেন? : আমি পাকিস্তানি, এটা জানেন না? আমি পাকিস্তানি। ১৯৭১ এ বাঙালিদেরকে খুন করেছি, ধর্ষণ করেছি। এছাড়া জোর করে ধর্মান্তরিত করেছি।

- অবশ্যই জানি। আপনার মুখ থেকেই শুনতে চাচ্ছিলাম। জানেনই তো, মানুষের কাছ থেকে জানোয়ারের মতো কাজ সহ্য করা যায় না। কিন্তু জানোয়ারের কাছ থেকে জানোয়ারের মতো কাজ সহ্য করা যায়। : উর্দু বলুন, প্লীজ।

আল্লাহ আপনাকে এর জন্য উত্তম প্রতিদান দিবেন। নিশ্চয় তিনি পরমদয়ালু। - আমি বাঙালি। আপনার মতো আমি পাকিস্তানি না। আমি বাঙলাতেই সব প্রকাশ করি।

: হোয়্যাট? - হ্যাঁ, এটাই ঠিক। ধর্ম কি বলেছে, উর্দু বললে, জান্নাত পাওয়া যাবে? : না। আচ্ছা বাঙলাতে বলেন। -আপনি যে খুন, ধর্ষণ, জোর করে ধর্মান্তরিত, মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড করেছেন, তা কি ইসলাম সম্মত? : না। - তাহলে কেন এগুলো করেছিলেন? : আমি মানুষরূপি পশু।

তাই ওগুলো আমি করতে পারি। - তাহলে ধর্মপ্রচার করতেন কেন? ধর্ম কি নিজে সংশোধন না হয়ে অন্যকে সংশোধন করতে বলেছে? : না। আমি প্রথমে বাচ্চু রাজাকার ছিলাম। ১৯৭১ এ খুন, ধর্ষণ, জোর করে ধর্মান্তরিত, মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড করেছিলাম। তাই নিজেকে বাঁচানোর জন্য নিজের পরিচয় গোপন করে দাড়ি রেখে, দাড়ি লাল করে, ধর্মপ্রচার করতাম।

- আপনি বাঙলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন কেন? : ভেবেছিলাম, ভারতের সরকার আমাকে আশ্রয় দেবে। কিন্তু দেয় নি। - পাকিস্তানে আসলেন কীভাবে? : যখন আমাকে ভারত আশ্রয় দেয় নি, তখন ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের কথা মনে পড়লো। পাকিস্তানিরা আমাকে সে সময়ে বলেছিলো, ''তুমি আমাদের ভাই। তুমি বাঙলাদেশে থেকে আমাদেরকে সাহায্য করবে।

যদি কোনো সমস্যা হয়, তুমি নির্দ্বিধায় আমাদের কাছে চলে আসবে। আমরা তোমাকে আশ্রয় দেবো। '' ঠিক তখনই পাকিস্তানে চলে গেলাম। পাকিস্তানিরা আমাকে সাদরে গ্রহণ করলো। - আপনার তো ফাঁসির রায় হয়েছে।

আপিল করারও সুযোগ আছে। : হ্যাঁ। - বাঙলাদেশে যাবেন না? আপিল করবেন না? : এখন বাঙলাদেশে যাবো না। কী জন্য আপিল করার সুযোগ দিয়েছে, সেটা আমি ভালো করেই জানি। - কী জন্য? : এই জন্য যে, আপিলের সুযোগ দিলে, আমি বাঙলাদেশে ফিরে যেতে পারি।

ঠিক তখনই আপিল করার সুযোগ উপেক্ষা করে আমাকে ফাঁসি দেওয়া হবে। আমিও কম বুদ্ধিমান না। - আপনি ভবিষ্যতেও বাঙলাদেশে যাবেন না? : হ্যাঁ, যেতে পারি পরবর্তী নির্বাচনে বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে। - কেন? : বিএনপির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে আমার প্রায়ই কথা হয়। মাঝে মাঝে বিএনপির বড় বড় নেতার সাথেও আমার কথা হয়।

- বেগম খালেদা জিয়া বলেছে, ''আপনি নিশ্চিত থাকেন। আমি ক্ষমতায় গেলে, আপনাকে ফাঁসি দেওয়া হবে না। আপনি ততদিন নিজের দেশেই থাকেন। মনে রাখবেন, নিশ্চয় আমি সব পারি। আর যারা আমার এবং আমার দলের বিরোধিতা করবে তাদের স্থান অবশ্যই দলের বাইরে থাকবে।

'' : বর্তমান সরকার যদি পাকিস্তানের সরকারের সাথে যোগাযোগ করে, আপনাকে বাঙলাদেশে পাঠানোর জন্য, তখন কী হবে? - পাকিস্তান কখনোই আমাকে আর বাঙলাদেশে পাঠাবে না। যদি আমি বলি, তখনই পাঠাবে। আর পাকিস্তানের সরকার বাঙলাদেশের সরকারকে বলবে, বাচ্চু রাজাকার এখান থেকে পালিয়েছে। : বাঙলাদেশে অনেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না, যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করে দিতে বলে। তাদের সম্পর্কে আপনার কী ধারণা? - আরে এটা তো সবাই বোঝে।

ওরাও আমার মতো পাকিস্তানি। পাকিস্তানের জন্য ওদের মন আকুল-বেকুল করে। রক্তের টান তো। তাই ওরা যুদ্ধাপরাধীদের মানে নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন কথা বলছে। : আমরাও তাই জানি।

আর জামায়াত-শিবিরের কর্মী বা সমর্থকদের সম্পর্কে আপনার কী ধারণা? - ওরাও একই। ওরাও তো আমার মতো ধর্মব্যবসায়ী। : আপনাকে একটা কথা বলতে চাই। - হ্যাঁ, বলে ফেলেন। : আপনাকে যেভাবে হোক আমরা বাঙালিরা দেশে আনবো।

কেউ আপনাকে বাঁচাতে পারবে না। আমরা বাঙালিরাই আপনাকে ফাঁসি দেবো। আমরা কখনোই কোনো বাঙলাদেশবিরোধীর ক্ষমা করি নি, করি না; করবোও না। আমাদের হাতে আপনার মৃত্যু নিশ্চিত। শুধু আগে-পরে মরবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।