আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৫০০ ক্ষুদেবার্তা এবং কিছু প্রশ্ন

received more then 1500 hundred text most of the boys said "meyeder jama-kaporape er main reason n psycho ra child rape kore... sathe onek gulu kutshit galipurno sms on 8920............... thanx to all tomra na janale jantamna j Evabeo chinta kora jai........ upset.......... গতকাল রাতে আমার এক বন্ধুর ফেসবুকের স্ট্যটাস ছিল এটা। বন্ধুটি একটি এফএম রেডিওর কথাবন্ধু। বেশ কিছু দিন ধরেই আমাদের দেশ এবং পার্শবর্তী দেশে ধর্ষন শব্দটি একটি বহুল উচ্চারিত শব্দে পরিনত হয়েছে এবং তার যথেষ্ট কারনও আছে। সেইসব কারন নিয়ে গবেষনার জন্য আমি এই লিখতে বসিনি। সেসব কারন পেপার, পত্রিকা, টেলিভিশন এবং বিভিন্ন মিডিয়ার কল্যাণে সবাই জানেন।

কিন্তু আমি অবাক হই তখন যখন দেখি সেই সব কারন গুলোর সমর্থনে তথাকথিত পুরুষ বিভিন্ন যুক্তি দাড় করান। (হ্যাঁ আমি তাদের তথাকথিত পুরুষ বলবো। কারন আমি বিশ্বাস করি পুরুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় তারা মানুষ এবং তারা কোনভাবেই নারীর প্রতিপক্ষ নয় বরং পরিপূরক। ) সেই কিছু পুরুষের নারীর পোষাক আশাক নিয়ে মন্তব্য করা অবশ্য নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন সময় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তারা জানায় আজকাল নারীর খোলামেলা পোশাকের জন্য সমাজে অনাচার (অনাচার বলছি কারন কেবল ধর্ষন নয়, ইভটিজিং, যৌনহয়রানীসহ নারীর প্রতি হওয়া সব ধরনের অন্যায় আচরনকে অন্তর্ভূক্ত করছি) বেড়ে গেছে।

এখানে আমার প্রশ্ন বিষয়টা কি আসলেই তাই? তাহলে সৃষ্টির সেরা হিসেবে সেই মানুষের অবস্থান থাকলো কোথায়? কে কোন পোশাক পরবে কে কোনটা পরবেনা এটা পুরোপুরি একজনের নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়। কারো সংক্ষিপ্ত পোশাক দেখে কোন পুরুষের মনে কামনা জেগে উঠলে তাতে ওই মেয়ের কি করার থাকতে পারে? একজন মানুষ নিশ্চই খাদ্য বস্তু না যে দোকানে লোভনীয় করে সাজানো দেখলেই খেতে মন চাইবে। যদি আপনার তাই মনে হয় তবে আপনাকে লোভী বলা ছাড়া আর কোন উপায়নেই। নারীর পোশাক নিয়ে যারা কথা বলেন তারা কী কখনো ভেবে দেখেছেন এতে করে আপনার লোভী চেহারাটা সবার সামনে খুলে যাচ্ছে। এর পরেও যারা আসবেন বিভিন্ন যুক্তির ফুল ঝুরী ছড়াতে তাদের বলছি, আচ্ছা ধরেন এক মুহূর্তের জন্য মেনেই নিলাম নারীর পোশাকই সব নষ্টের গোড়া.... সেক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ বছরের শিশুরা যারা এখনো মেয়ে বা নারী হয়ে ওঠেনি তাদের প্রতি লোভ জাগার কারনের কোন ব্যাখ্যা কী দেয়া সম্ভব? তারা তো নিতান্তই শিশু।

আমি মনোরোগ বিশারদ নই, আমার পড়াশুনার বিষয়ও মনোবিজ্ঞান ছিলনা। কিন্তু নিজের চারপাশের মানুষদের আচরন এবং মানসিকতা পর্যবেক্ষণ করে আমার মনে হয়েছে এই সমস্যার মূল আসলে আমাদের পরিবার গুলো। শিশুদের প্রথম শিক্ষা অনুকরণ এর পর আসে শিক্ষণ। এই দু'টি ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বড় ভূমিকা থাকে মায়ের। ক্ষেত্র বিশেষে বাবার।

তবে মা কেবল মাত্র মাই পারে একটি শিশুর মনো জগতে বিপ্লব ঘটিয়ে দিতে। পৃথিবীকে মানুষকে ঘটনাকে ইতিবাচক ভাবে দেখার চোখ একমাত্র মায়ের সাহায্যেই পাওয়া সম্ভব। কোন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় এই শিক্ষা যে দিতে পারেনা তার প্রমান খুঁজতে বেশিদূরে যেতে হবে না। যারা মেয়েদের পোশাক নিয়ে এমন মন্তব্য করে তাদের মধ্যেই ডিগ্রীধারী (আসলে মুখোশধারী) অনেককেই পাওয়া যাবে। এর জন্য ঢালাও ভাবে সব পুরুষকেও আমি দোষ দেই না।

আমার জীবনের একটা ঘটনা বলি, আমার স্কুল ছিল গার্লস স্কুল কিন্তু কলেজে এসে আমার কোএডুকেশনে পড়ার সুযোগ হয়। একদিন কোন একটি প্রয়োজনে আমার এক বান্ধুর কলেজে যাবার দরকার পড়ে যে কিনা মহিলা কলেজে পড়তো। ওর সঙ্গে আমি যখন ওদের ক্যন্টিনে গিয়ে বসি তখন দেখতে পাই কিছু মেয়ে ক্যন্টিনের টেবিলের ওপর বসে হাতে নেইল পলিশ লাগাচ্ছে। আমি কো এডুকেশন কলেজে পড়ি শুনে তারা প্রথমেই আমার প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলে, " তোমাদের খুব ঝামেলা হয় না?" আমি যখন অবাক হয়ে কি সমস্যা সেটা জানতে চাই ওরা আমাকে মেয়েদের কিছু বিশেষ পোশাকের নাম উল্লেখ করে বলে "এই ধরো সবার সামনে যদি ওসব বেরিয়ে যায়.......ছেলেরা খেপায় না?......" আমার তখন হতভম্ভ হবার পালা আর আমার সেই বন্ধুটি লজ্জিত। আমি বলছিনা কোএডুকেশনে পড়লে শিক্ষা ভালো হবে, আমি কেবল গল্পটা এজন্য উল্লেখ করলাম যে, ওই মেয়েটা যখন জীবনে মা হবে তার ছেলেটিকে সে কি শিক্ষা দিতে পাবে? অথবা মেয়েটিকে? নিজের অজান্তেই সে তার ছেলেকে টিজ করতে সেখাবে আর মেয়েকে সেখাবে মেয়ে তোমার জন্ম হয়েছে অপমানিত হয়ে সহ্য করার জন্য।

এমন অভিজ্ঞতা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত অনেক আছে। তার পরেও আশায় মন বাধি কোন একদিন এই অবস্থার পরিবর্তন নিশ্চই হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.