আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেইজিং ভ্রমণপিপাসুদের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য: পর্ব -১

ভুল করেছি,প্রায়শ্চিত্য করবো না, তা তো হয় না ২০১১ এবং ২০১২, দুবার বেইজিং দেখার সৌভাগ্য হয়েছে; ভ্রমণকালীন সময় যে প্রোবলেমগুলো ফেস করেছি তার আলোকে কিছু তথ্য শেয়ার করছি যা আপনারা যারা বেইজিংয়ে বেড়াতে যেতে চান তাদের জন্য হেল্পফুল হবে বলে আশা করি: ১. থাকার ব্যবস্হা: প্রথমেই মাথায় আসে কৈ থাকব, কৈ ঘুমাবো, কৈ হাগবো, কৈ গোসল করবো ! অনেক হোটেলের মধ্যে কম পয়সায় আমার কাছে ভাল মনে হয়েছে বেইজিং সেন্ট্রাল রেলস্টেশন (北京站) লাগোয়া সেন্ট্রাল ইয়ুথ হোস্টেল। ওয়েব এড্রেস চুং চাং ভাষা না জানলেও সমস্যা নাইক্কা, এই হোটেলের রিসেপশনের মেয়েগুলো খুব সুন্দর করে আমেরিকান উচ্চারনে কথা বলে। সব শ্রেণীর মানুষের কথা মাথায় রেখেই কম দামী, বেশি দামী সব ধরনের সিটই আছে। কেউ যদি মনোসঙ্গিনী, হৃদয় সঙ্গিনী সাথে নিয়ে যান তাহলে অবশ্যই সিঙ্গেল রুম লাগবে! সেক্ষেত্রে আপনাকে গুণতে হবে মিনিমাম ১৮০ইউয়ান , ডাবল বেড, কমন ওয়াশরুম, ইন্টারনেট, টিভি, গরম পানি, ওয়াশিং মেশিন ফ্রি তয় পাউডার আন্নের নিজের কিনতে হবে। আর হাঁ পুল খেলাও ফ্রি।

এখন যাদের জীবনসঙ্গি নাই, একা মানুষ হেরা কিতা করবে তাগোর জন্যও ব্যবস্হা আছে ৩/৪/৭ বেডের রুম। আমি ৪ বেডের রুমে ছিলাম, প্রতিজন ৬০ ইউয়ান। ৩ বেডের রুমে প্রতিজন ৮০ ইউয়ান। এই বিল্ডিয়ের কাছাকাছি ব্যাংক অব চায়নার ATM booth দেখি নি তবে পূব পাশে রাস্তা পার হয়ে খানিকটা উত্তর দিকে হাঁটলেই পেয়ে যাবেন আর যতখুশি টাকা উওোলন করুন এবং মনের মানুষকে নিয়ে যেখানে খুশি সেখানে হারিয়ে যান। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গেস্টরুম থাকে সেখানে পয়সা দিয়ে থাকা যায় তবে আগে থেকেই বুকিং না দিলে পাওয়া যাইতো ন।

মন চাইলো প্রাণপ্রিয়ার লাগি একখান ডিম ভাজবো, সেটাও করা যাবে কারন রান্নার ফ্যাসিলিটি আছে। এক বিডি ছেলের কাছে শুনেছিলাম, সে বেইজিং ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে ছিল ২ বেডের রুম ১৬০ ইউয়ান। প্রতিজন ৪০ ইউয়ান, কি পাটিগণিতের নিয়ম অনুযায়ী মিলছে না ! তাই তো! হাঁ মিলবে না, কারন ভালবাসার কাছে দুনিয়ার সব হিসাব নিকাশ ব্যর্থ হয়ে যায়। তারা ২ কাপল ছিল, ১ বেডে ২ আত্না এক হয়ে ঘুমাইছে। এবার আসেন বাঙালি বুদ্ধি এপ্লাই করে ফাও থাকার সিস্টেমে।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিয়ম বহিরাগত কেউ হলে রাত্রিযাপন করতে পারবে না, তাই বেইজিংয়ের হলগুলোতে সিকিউরিটির লোকজন চেক করে। এক বাংলাদেশী বড় ভাই বেইজিংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধুর হলে রাতের বেলা যখন সিকিউরিটির লোক আসার সময় হত তখন রুমের দরজা খুলে খালি গায়ে বিছানায় ৪ হাত-পা চার দিকে ছড়িয়ে ব্যাঙের মত সটান হয়ে শুয়ে থাকত! কারো বাপেরই বোঝার ক্ষমতা নাই যে সে বহিরাগত ! ২. কোথায় কোথায় বেড়াবেন: সেন্ট্রাল ইয়ুথ হোস্টেলে ইংরেজিতে লেখা লিফলেট পাবেন যেখানে খুব সুন্দর করে বিস্তারিত লেখা আছে কত নম্বর বাসে কোন ট্যুরিস্ট স্পটে যাওয়া যাবে কিংবা সাবওয়ে বা মেট্রোতে কিভাবে যেতে হবে। tourist spots' photo of Beijing (ক) এই হোস্টেলের খুব কাছেই temple of heaven, ১৫ মিনিট লাগবে, ম্যাপ দেখে হেঁটেই যাওয়া যায়; হোটেল থেকে পশ্চিম দিকে chong wen men তারপর দক্ষিণে সোজা হাঁটলেই Tian Tan dong men বা temple of heaven. অথবা হাঁটাবিনে যেতে চাইলে জাস্ট হোটেল থেকে বের হয়ে বেইজিং স্টেশন নামে যে সাবওয়ে স্টেশন আছে ওখানে ঢুকলেন ২ নম্বর লাইনের মেট্রোতে উঠলেন। এরপর chong wen men station এ গিয়ে লাইন চেঞ্চ করে ৫ নম্বর এ উঠে Tian Tan dong men station এ নামবেন। বের হয়ে সোজা সামনে এগুলেই হাতের ডানে temple of heaven. ছাত্র টিকেটে ৫০% ছাড়ে ১৫ ইউয়ান দিয়ে ভেতরে ঢুকতে পারবেন।

প্রবেশ পথের বাম পাশে Automatic guide নামক ওয়াকম্যান ৬০ ইউয়ানে ভাড়া দেয়, যা বিভিন্ন ভাষায় ঐ জায়গার বিস্তারিত বলে, কোন পথে কোন জায়গায় মোড় নিতে হবে সব; এই যন্ত্রকে বলা যায় অটোমেটিক ক্যানভাসার.... সামনে এতটুকু হাঁটুন এবার যে বিল্ডিংটা দেখছেন এর নাম... এবার ডানে মোড় নিয়ে সামনে বাড়ান। প্রবেশ পথ থেকে সোজা বরাবর হাঁটলে সামনেই একটি সাদা মন্দিরের কাছে গিয়ে পৌঁছাবেন তখন কবে টাকা বিনে ভিতরে ঢুকতে নাহি দিব! কত টাকা, মাত্র ৬০ ইউয়ান। টাহার কথা শুনি আমি আর ভিতরে না ঢুকে ওর প্রাচীর ঘেষে আনমনে হাঁটা ধরলাম, খানিকবাদে কপালবশতঃ প্রাচীরের পাশে একটা জায়গা পাইলাম যেখান থেকে ভিতরের সাদা মন্দিরসহ অনেককিছুই দেখা যাচ্ছিল। বিনা পয়সায় দেখা হইয়্যা গেল! pearl market টাও temple of heaven এর পাশেই। এখানে কিছু বাসের ভাড়া ১ ইউয়ান আর কিছু ২ ইউয়ান তবে সাবওয়েতে ঢুকলেই ২ ইউয়ান, যদি কেউ মনে করে সারাদিন সাবওয়েতে চইড়া খালি ঘুরুম আর ঘুরুম।

বের অইতাম ন, তাই সই ভাড়া একই ২ ইউয়ান। কিন্তু মাটির নিচে হওয়ায় ট্রেন থেকে বাইরের কিছুই দেহা ন যায় একমাত্র ব্যতিক্রম ১৩ নাম্বার লাইন, এর মাত্র ১ মিনিটের রাস্তা মাটির নিচ দিয়া বাকি পুরোটাই ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে হওয়ায় বেইজিং শহরের উত্তর পাশটা সুন্দর উপভোগ করা যায়। তবে খুব বেশি স্হাপনা নেই কারন ঐদিকে শহর নতুম করে সম্প্রসারিত হচ্ছে তাই চারিদিক ফাঁকা। যারা ৫ দিন কিংবা এর বেশি সময়র জন্য বেড়াতে যাবেন তাদের ভাড়া পরিশোধের জন্য ই-কার্ড করে নেওয়া ভাল কেননা এতে ১০% ছাড়, নগদ যদি ১ ইউয়ান দিতে হয় সেক্ষেত্রে ই-কার্ডে চিয়ৌ মাউ বা ৯০ পয়সা কাটে। (চলবে) বিঃদ্রঃ বেইজিং বেড়াতে যাওয়াটা মোর অনেকদিন হয়ে গেছে বিধায় টাকার পরিমাণটা পুরোপুরি সঠিক মনে নেই, ভুল হতে পারে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.