আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কসাই সমাচার



হুজুর বুঝাচ্ছেন, আমি মুখ গোমড়া করে বসে আছি। যথারীতি ডানদিকের কান দিয়ে ঢুকছে, বাম দিক থেকে বের হয়ে। যাচ্ছে, কোন এক পর্যায়ে ঝিমুনি বাদ দিয়ে কান খাড়া করলাম। মহাপ্রেমিক মূসা এক পর্যায়ে প্রশ্ন করলেন, হে সর্বজ্ঞ কোন সেই ব্যাক্তি যে জান্নাতে আমার সাথী হবে, জবাব শুনে তিনি অবাক। তাঁকে বলা হল, যে কোন এক এলাকার এক কসাই সেই সৌভাগ্যবান যে মূসা(আঃ) এর সাথে বেহেশতী হবেন।

কৌতুহলী হয়ে খোঁজ নেবার জন্য সেই এলাকায় গেলেন নবী। কোন এক বাজারে দেখা হল মাংসের দোকানে কর্মরত সেই কসাইয়ের সাথে। কিছু সময়ে থেকে তার মাঝে কোন বিশেষত্ব পেলেন না, আরেকটু ভালমত জানার জন্য কসাইকে অনুরোধ করলেন, আমি কি আপনার সাথে কিছু সময় থাকতে পারি? এলাকায় নতুন মানুষ মনে করে কসাই মেহমান হিসাবে অপরিচিত মূসাকে নিয়ে গেলেন নিজের বাড়িতে। সে বাসায় গিয়ে দেখলেন যে কৃশকায়, দূর্বল এক বৃদ্ধা বিছানায় শায়িত। সেই কসাই বাড়িতে পৌছেই প্রথমে সাথে নিয়ে আসা মাংস কাটল, তারপর সেই দিয়ে খাবার রান্না করে বৃদ্ধার জন্য ক্ষূদ্র ক্ষূদ্র টুকরো করে তৈরি করল।

পরে যখন সেই বৃদ্ধাকে নিজ হাতে পরম মমতায় খাওয়াচ্ছিল, তখন দেখলেন মহিলা বিড়বিড় করে কিছু বলছেন, ক্ষীণকন্ঠস্বরের জন্য তা বোঝা গেল না। পরে এসে কসাই বলল, উনি আমার মা, বয়স হয়ে যাবার পর নিজের দেখাশোনা করতে পারেন না, তাই আমিই যেটুকু পারি করি। সরল হাসি হেসে বলল, বৃদ্ধার বয়স হয়ে গেছে তাই ঠিক বেঠিক কথা বলেন, আমি যখন উনার জন্য খাবার তৈরি করে খাওয়াই, তখন উনি বলেন যে- বাবা আল্লাহ তোমাকে জান্নাতে মূসা নবীর সঙ্গী করুক। কোথায় আল্লাহর নবী মূসা আর কোথায় এই আমি নগণ্য কসাই। আর কিছু কানে ঢুকল না।

বাষ্পায়িত দৃষ্টি ঢাকার জন্য মাথা নিচু করলাম। পরে খেয়াল করলাম, সাত সমূদ্র তের নদী পার হয়ে আসা অনেকেই নোনাদৃষ্টি লুকানোর চেষ্টা করছে। কবে সৌভাগ্য হবে প্রিয়তম মানুষগুলোর সান্নিধ্যের বরকত আবার ফিরে পাব। সময়েই প্রশ্নের জবাব দিয়ে দেয়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.