আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অ্যানেকডট 6 ।। জোনাথন সুইফট (1667-1745)-এর বিনম্র প্রস্তাব

স্বেচ্ছাচার না করা গেলে তারে স্বাধীনতা বলে না। স্বাধীনতা মানেই স্বেচ্ছাচারের অধিকার।

জোনাথন সুইফট-এর বিনম্র প্রস্তাব [ইটালিক] গালিভার ট্রাভেলস [/ইটালিক] (1727)-এর লেখক জোনাথন সুইফট-এর জন্মের আগেই হের বাপ মইরা গেছিলেন। ফলে সুইফট না-খাইয়া না-পইরা না-থাইকা বড় হইতে থাকেন। নিশ্চিত বাসস্থানের অভাব তারে নিরাপত্তাহীন একটা লাইফ উপহার দিছিল।

অবশ্য বাপ নাইলে মায়ের দিককার আংকেলরা তারে খানিক দেখাশোনা করছিলেন। ওনারা পড়ালেখার খরচটা দিতেন। ফলে ট্রিনিটি কলেজ শিক্ষিত হইতে পারছিলেন সুইফট। এবং তিনি খারাপ ছাত্র আছিলেন। কলেজের বিশেষ অনুকম্পায় 1686 সালে একটা ডিগ্রিও শেষ পর্যন্ত পাইছিলেন।

1721 সালে 54 বছর বয়সে সুইফট [ইটালিক] গালিভার ট্রাভেলস [/ইটালিক] লেখতে শুরু করেন। 1725 সালে লেখা শেষ হয়। লেখক-এর পরিচয় গোপন কইরা 60 বছর বয়সে তিনি এই বই বাইর করেন। সুইফট স্কটগো, বাচ্চাগো আর মেয়েগো হেইট করতেন এমন প্রচারণা আছে। একবার নাকি বলছিলেন, মেয়েরা প্রজাতি হিসাবে বান্দরেরও বাড়া।

[ইটালিক] গালিভার ট্রাভেলস [/ইটালিক] বাইরানের দুই বছর পরে 'একটি বিনম্র প্রস্তাবনা' (A modest proposal, 1729) নামে প্যামফ্লেট চাউর করেন তিনি। এই লেখায় সুইফটের সরল প্রস্তাব আছিল যে মহান আইরিশরা হেগো জনসংখ্যা সমস্যার আশু সমাধান হিসাবে শিশু ভক্ষণরে বিবেচনা কইরা দেখতে পারে। গরিব বাপমায়ের গরিব বাচ্চারা নিজেগোরে খাইতে দিয়া কীভাবে রাষ্ট্র ও প্যারেন্টগো দায়ভার লাঘব করতে পারে এবং একই লগে কেমনে হেরা জনগণের জন্য উপাদেয় খাদ্যবস্তুতে পরিণত হইতে পারে সেই প্রসঙ্গে ভিগোরাস বর্ণনা দেন তিনি। সুইফট তার এই শিশুভক্ষণপ্রণালী লইয়া প্রচণ্ড সমালোচনার মইধ্যে পড়েন। 33 বছর বয়সে রেক্টর হিসাবে একটা অল্প চিনা আইরিশ চার্চে জয়েন করছিলেন তিনি।

ওইখানে চার্চিতরা সুইফটের উদ্ভট ভঙ্গি আর অন্য রকম চালচলনের কারণে তারে 'ম্যাড' কইয়া ডাকত। সুইফট অত্যন্ত কৃপণ আছিলেন। এবং এই কার্পণ্যের সমান্তরালে গোনাগুনতির এক বাতিকও তার তৈরি হইছিল। তার বাড়ি থিকা যে সেন্টার অফ লন্ডনে পৌঁছাইতে 5,748 কদম লাগে এইটা সুইফট চিনাশোনা লোকজনরে জানাইছিলেন। অপরিচিত লোকগো লগে তিনি অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করতেন।

সুইফট অনাগত বার্ধক্যরে ভয় পাইতেন। তিনি তার আসন্ন অসুস্থতা ও বুদ্ধিভ্রংশরে দিব্যদর্শন করতে পারছিলেন। সুইফটেরও বন্ধু আছিল। এই রকম একজনরে তিনি বলছিলেন, 'আমি মারা যামু গাছের মত কইরা, আমার মউত শুরু হইব আমার মাথার সাইড থিকা'। শেষ বয়সে বুদ্ধি-বিবেচনা হারায় ফেলছিলেন তিনি।

ব্যায়াম আর ডায়েটিং-এ অতি আসক্তি দেখা দিছিল। আর যখন খাইতেন ঘরের মইধ্যে হাঁটতে হাঁটতে খাইতে থাকতেন। 87 বছর বয়সে চূড়ান্ত বিকল হইয়া যাওনের আগে পাবলিকের কাছ থিকা পয়সা লইয়া তার বাড়ির চাকর তারে পাবলিকের কাছে শো করতো। 1745 সালে তিনি ডেড হন। জনাথন সুইফট তার সমাধির এপিটাফে লেইখা গেছেন : 'জোনাথন সুইফটের মরদেহ; পবিত্র ধর্মতত্ত্বের ডক্টর, ক্যাথেড্রাল চার্চের ডিন এইখানে পইড়া আছেন।

এইখানে চূড়ান্ত অবমাননা তার হৃদয় আর ভাইঙ্গা দিব না। যাও ট্রাভেলার, যদি পারো এমন একজনের ভঙ্গি ধরো যে তার সমস্ত শক্তি খতম কইরা দিছে স্বাধীনতা আয়ত্ত করতে করতে। ' ছবি : ট্রিনিটি কলেজে তরুণ সুইফট, A portrait of Jonathan Swift from his 1735 Works লিংক : !@!14694 = http://art-bin.com/art/omodest.html লেখাটা শুদ্ধ নাগরিক 'ডায়ালেক্টে' যায়যায়দিন পত্রিকার 21/9/6 সংখ্যায় ছাপা হইছিল।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।