আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লিটারেচার একুইজিশন ডিভাইস (LAD)

নোয়াম চমস্কি (১৯৬০এর দিকে) মনে করতেন মানব শিশু ভাষা শেখার ক্ষমতা নিয়ে জন্মায় (innate ability)। তাঁর তত্ত্ব behaviourist তত্তের stimuli-response অংশটিকে অকার্যকর মনে করে। এজন্য তিনি এই যুক্তি দেখান যে মানবশিশুর মাঝে জন্মগতভাবে ভাষা শিক্ষার ক্ষমতা যদি না থাকত শুধুমাত্র পরিবেশ থেকে নেয়া linguistic stimuli দিয়ে সে অত সহজে ভাষা শিখতে পারত না; মানব শিশুকে ভাষা শিক্ষার জন্য সব রকম নির্দেশনাও দেয়া হয় না। (এতক্ষণ শিক্ষা শব্দটি ব্যবহার করলেও এটি থেকে acquisition শব্দটি আলাদা করার প্রয়োজন আছে। ভাষা ‘শিক্ষার’ ক্ষেত্রে learning ও acquisition এর মাঝে পার্থক্য এই যে প্রথমটি চেতন আর দ্বিতীয়টি অবচেতন মনে ঘটা প্রক্রিয়া।

) চমস্কি কল্পণা করেন এমন এক ডিভাইস যা মানবশিশুর ব্রেইনে অবস্থিত; যা তাকে ১থম ভাষা (First Language) আয়ত্ত করতে সাহায্য করে। তিনি আরো বলেন মানব শিশুর ‘মনে’ ব্যাকরণেরও (useএর usageনা) ধারণা থাকে; নাহলে সে (১থম) ভাষা আয়ত্ত করতে পারত না। কল্পিত এই যন্ত্রের নাম তিনি দিয়েছিলেন Language Acquistion Device (LAD). পরে তিনি তাঁর এই ধারণা থেকে অনেকটা সরে এসে Universal Grammar বা Principles and Parameters এর ধারণা দেন যা ভাষা আয়ত্তের ক্ষেত্রে জরুরী হলেও এখানে আমাদের জন্য হবেনা। এই দুই তত্তের দুটি গুরুত্তপূর্ণ পয়েন্ট হলোঃ -মানুষ সসীম ব্যাকরণ যা তার ব্রেইনে আছে দিয়ে অসীম পরিমাণ বাক্য তৈরি করতে পারে। -সব ন্যাচারাল ভাষায় কমন (universal) কাঠামোগত ভিত্তি বিরাজমান।

চমস্কির কল্পণা করা এই ভাষা আয়ত্ত করার ডিভাইস আমরা সাহিত্য আয়ত্ত কীভাবে মানুষ করে তা জানতে ব্যবহার করতে পারি। এটাও (আমার করা) একটা কল্পিত ডিভাইস। তবে এটা ভাষা আয়ত্ত করার পরের ধাপ। এটার কাজ শৈশবে শুরু হলেও (যেমন-গল্প শোনার মাধ্যমে) পরের জীবনে এর প্রয়োজন অনেকের তেমন নাও হতে পারে। Literature Acquisition Device মানুষের জীবনে অবশ্যম্ভাবী কোনো টুল না যা তাকে বেঁচে থাকার জন্য ‘উন্নত’ করতেই হবে।

ভাষা আয়ত্ত একটা পর্যায় পর্যন্ত না পৌছালে মানুষ কমিউনিকেট করতে পারবে না; ধরা যাক কেউ একজন বিশেষ্য বা ক্রিয়া ব্যবহার যদি না আয়ত্ত করে। কিন্তু Literature Acquisition Deviceএর এমন কোনো পর্যায় নির্দিষ্ট করা সম্ভব না। Language Acquisition Device এর মাধ্যমে (স্বাভাবিক) মানুষ কমপক্ষে ততটা ভাষা-দক্ষতা অর্জন করে যা তার interlocutorএর সাথে কমিউনিকেট করার জন্য জরুরী। একজন Literature Acquisition Device ব্যবহারকারীর এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে তার; ধরা যাক; চলচ্চিত্র বা নাটক (এর সাহিত্য অংশ)এর সাথে কমিউনিকেট করার জন্য পয়েটিকস পড়া থাকতে হবে বা আধুনিক সাহিত্যের বা সাহিত্য তত্ত্ব ইত্যাদি ধারণা থাকতে হবে। মানুষ সাহিত্য বোঝার বা এর সাথে যোগাযোগ করার জন্মগত ক্ষমতা বা LAD নিয়ে জন্মায়।

এই লিটারেচার একুইজেশন ডিভাইসের অবশ্য কোনো নৈর্ব্যক্তিক অবস্থান নেই যা ভাষার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ভাষার ক্ষেত্রে আমরা মান ভাষা বা ব্যাকরণ ইত্যাদিকে নৈর্ব্যক্তিক অবস্থান বলতে পারি। ... মানুষ তার পরিবেশ থেকে যে linguistic stimuli নেয় তা তার Language Acquisition Deviceকে প্রভাবিত করে; যেমন-উচ্চারণ ইত্যাদি। কিন্তু তারপরও সেই মানুষের ভাষাকে নৈর্ব্যক্তিক অবস্থান থেকে দেখা/বিচার করা সম্ভব। Literature Acquisition Deviceও মানুষের অভিজ্ঞতা (Schemata) দিয়ে আক্রান্ত হয়।

মানুষ কী সাহিত্যের/অভিজ্ঞতার কাছাকাছি গেল তা দিয়ে এই ডিভাইস প্রভাবিত হয়। মানুষের সাহিত্য অভিজ্ঞতা মানুষের সাহিত্য আয়ত্তের ডিভাইসকে যে আকৃতি দেয় তা নৈর্ব্যক্তিক না; মন্ময়। Literature Acquisition Device দিয়ে মানুষের সাহিত্য উপভোগের অভিজ্ঞতা নৈর্ব্যক্তিক অবস্থান থেকে বিচার করা যায় না। Literature Acquisition Deviceএর মন্ময় হয়ে ওঠা সাহিত্যের রাজনীতি্র সূত্রপাত ঘটায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।