আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি বোধহয় বিজয়-ই দেখেছি

ফাজলামৗ ও বিটলামি, খোঁচা এবং গুতা,

আজ বিজয় দিবসের প্রাককালে আমি বিজয় দেখলাম। আমি, আমার বড় ভাই আর বন্ধু নাফি , যে কিনা এক সামার ক্যাম্পে পড়াশোনা করে। কিভাবে? তার আগে কি বিজয় করলাম তা বলি বরং। বাসায় ইদুরের উপদ্্রব প্রায় পনের-বিশ দিন ধরে। ইদুর মানে rat, mouse না।

আমার বাসার বাগানে একটা ছোট ঘর আছে, যেটাকে আমি বলি বাগানবাড়ি। বাবা-র শখের এই ঘর ছিল আমাদের সুন্দর-শিক্ষিত বানানোর মিশন। এখানে আছে একটা ছোট্ট লাইব্রেরী আর পড়ার ব্যবস্থা। কিন্তু আমরা হলাম 'শিব গড়তে বাদর' । তাই ঘর টা হয়ে উঠল আড্ডাঘর আর সিগ্রেট ফোকার জায়গা।

বাবা-মা'র সামনে তো আর বিড়ি ফোঁকা যায় না! আর মা-ও ঘরের বহুমাত্রিক ব্যবহার, অর্থাৎ ভাড়ার ঘর ও গুদাম ঘর হিসাবে ব্যভার করতে থাকলো। আর এই খাবারের মৌ-মৌ গন্ধে আসতে থাকলো একের পর এক ইদুর! বাসার সবাই মিলে 5টা কে ফেলে দিল। বিনিময়ে একটার কামড়ে অবশ্য এক বোনকে নিতে হয়েছিল কি যেন এক ইনজেক্শন। কামড় খেয়েছিলেন কিনা! কিছুদিন ঠিক-ঠাক। কিন্তু তারপর শুরু হইলো ঝামেলা।

আবারও তরকারী উধাও, আমার বই-পান্ডুলিপি (কয়েকটা আবার এক বিশিষ্ট লেখকের থেকে না বলে নিয়ে আসা!) গায়েব। এবার ঠিক করছিলাম ব্যটা হানাদার কে শায়েস্তা করতে হবে। আজ ছুটি। তাই বন্ধু নাফি শ আমি ও বড় ভাই মিলে দিচ্ছিলাম জম্পেশ আড্ডা। যথারীতি বাগান-বাড়ি তে সিগারেট-চা সহযোগে।

দরজা খোলা। হঠাৎ মিশমিশে কালো এক হানাদার ইদুর ঢুকলো ঘরে। শো করে চলে গাল ঘরের এক কিনারায়। আমি বল্লাম এটাকে মারতে হবে। কিভাবে করা যায়? মনে শঙ্কা, ঘর থেকে বের হয়ে গেলে তো আর মারা যাবে না।

তবে? দরজা আটকানো হলো। ভাইয়া আর নাফি যথাক্রমে নিলো বেত আর লাঠি। আর আমার আছে দু'হাত আর লাথি। (বাঁচাওওও) শুরু করলাম আক্রমন। রণক্ষেত্র সজানো হলো।

যা কোনায় ইদুর আছে তার আশ-পাশ ঘেরাও করলাম। তারপর যে বক্সের মধ্যে হানাদার ব্যাটা আছে সেটায় ভাইয়া কষিয়ে বাড়ি মারল। তারপর ইদুর প্রায় লাফ দিয়ে আসলো ভাইয়ার দিকে। লাঠির বাড়ি লাগলো না ইদুরের গায়ে। ভাইয়া লাফিয়ে শুরু করলো ব্রেক ড্যান্স! আমি দেখলাম ইদুর আসছে।

আমি পা দিয়ে দিলাম একটা থপ্ কে পাড়া। ব্যাটা ভালঐ সব্জি খাইছে আমাদের। প্রায় 150 কেজি ওজনের পায়ের চিপা খেয়েও কোনো ভাবান্তর নাই। দৌড় দিল নাফি'র দিকে। আমি চাচিয়ে উঠলামঃ নাফি, মার! নাফির হাতের বেত বিদ্যুৎ গতিটে ইদুরের শরীরে আঘাত হানলো।

ইদুর লুটিয়ে কাত্। আহ্ মরছে। অতঃপরের ঘটনা উপরের মতোই হাই ওঠানো। বাসার কাজের মেয়ে টা আসলো মড়া ইদুর সরাতে আর তার হাইড-আউট খতম করতে। ও-মা, এতো প্রায় কেজি-খানেকের ওপর পেয়াজ, রসূন আর আলু পড়ে আছে! মানে শালারা কত্তোখানি সাবাড় করছে এদ্দিনে? ও হ্যা, ইদুর টা পুরাপুরি মরে নাই, তাই ভাইয়া ওটাকে খুচিয়ে খুচিয়ে মারল।

সফল মিশন শেষে আমরা তিন ধূমপায়ী বলতে লাগলাম ঘটনা। আমি খাল পাড়া মারছি আর বলছি মারতে। মূলতঃ উদ্যোক্তা। ভাইয়া নাচলো আর নাফির আঘাতেই তো ইদুর মরলো! বল্লামঃ নাফি; তুই তো ভালোই হিট করেচিস মামা! তা ইচ্ছা কি? হ্যামিলনে যাওয়ার? নাফি কয়, তুমি তো কিস্যু করলা না। তাইলে ফাপড় লও ক্যালা? আমি তো ভাই উদ্যোক্তা।

তো কি হইছে? ব্যাস শুরু ক্যাচাল। তখনই কইলাম, দ্যাখ আমি হইলাম অোায়াজ দিছি। আর কইছি অ্যাটাক। তাইলে আমি শেখ মুজিব। আর তুই হইলি খালেদ মোশাররফ।

কারন তোর কারনেই আসলে ইদুর মরছে। আর ভাইয়া হইলো জিয়া। খালি ফালায়া ক্রেডিট লইছে। সমাধান হইয়া গ্যালো। তারপর ইদুর হাতে আমাদের ছবি তোলা, যেটার ক্যাপশন হলোঃ আমি বিজয় দেখেছি।

ইশ্আমগো পাশের ফ্ল্যাটের মুজাহিদ-নিজামীদের যদি এইভাবে খোচায় খোচায় মারতে পারতাম!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.