আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি সাধারণ আর্টিকেল

[অন্যর দোষ না খুঁজে আগে যদি সবাই নজের দোষটা খুঁজত তাহলে বোধহয় সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত]............... [পথের শেষ নেই, আমার শেষ আছে, তাইত দ্বন্দ্ব] http://mamunma.blogspot.com/

[রং=#336699][আন্ডার]ভিক্ষা সমাচার[/আন্ডার][/রং] [ইটালিক]মামুন ম. আজিজ[/ইটালিক] ভিক্ষা কি কোন প্রফেশন বা ওকুপেশন? এই প্রশ্নে মনে ভীষণ খটকা । ইংরেজী এই শব্দ দুটি মোটামুটি সমার্থক। অনেক অর্থ থেকে বেছে নিলাম প্রফেশন এর বাংলা প্রতিশব্দ পেশা আর ওকুপেশন এর জন্য জীবিকা বা বৃত্তিকে। বই পুস্তকের ভাষায় জেনেছি অর্থ উপার্জনের নিমিত্তে যে কোন কাজই ওকুপেশন বা জীবিকা বা বৃত্তি । অন্যদিকে প্রফেশন হলো সেই ধরনের জীবিকা বা বৃত্তি যার জন্যে প্রশিক্ষণ, শিক্ষা এবং ক্ষেত্র ভেদে বিশেষ জ্ঞান বা দক্ষতার প্রয়োজন আছে, তাছাড়া প্রফেশন এর একটা রাষ্ট্রীয়,সামাজিক ও আইনগত স্বীকৃতি বা ভিত্তিও থাকতে হয়।

সে বিচারে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার , লইয়ার, টিচার, ব্যংকার প্রমুখদের কর্মকান্ডকে প্রফেশন বলা হয়ে থাকে। প্রফেশনের মাঝে জীবিকা নিহিত থাকবেই। কেউ যদি বলে তার প্রফেশন অর্থের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় তবে সেটা আসলে প্রফেশন নয়, সেটা সেবা যেমন একজন নিঃস্বার্থ সমাজসেবী। ওটাকে হবি বলা যেতে পারে। এখন প্রশ্ন প্রফেশন আর ওকুপেশন এর মধ্যে পার্থক্যটা কই।

সেখানেই প্যাচ। সহজ করে দেয়া যায় খোড়া যুক্তি দিয়ে। একজন গৃহসহায়ক বা কাজের লোক এর ওকুপেশন বাসাবাড়ীতে কাজ করা , তার ওটা পুথিগত ভাষায় প্রফেশন বলা হবেনা। কিন্তু কেন প্রফেশন হবেনা সেও তো তার কাজের একটা প্রশিন নিজে নিজে আয়ত্ত করেছেই। বাইরের দেশে হোম সারভেন্ট বলে একটা প্রফেশন মনে হয় চালু আছে।

মনে পরে ছোট বেলায় কোন এক কাশে পড়েছিলাম 'বেগিং ইজ নট এন ওকুপেশন' , লাগলোতো প্যাচ। ভিক্ষা লজ্জাষ্কর তাই নিরুৎসাহ জাগরনের জন্য শিশুমনকে ওমন শোনানো হয়েছিল হয়তো। অবশ্য বেগিং ইস নট এ প্রফেশন বলে দিলেই কিন্তু আমার আজকের প্যাচটা আর লাগতনা। এর মধ্যে আমি আবার লজ্জাষ্কর শব্দও ব্যবহার করেছি, সে কথায় পড়ে আসছি। স্বাভাবিক জ্ঞান বিচারে জীবিকার দু'টি উপায়- একটা ব্যবসা অন্যটা চাকুরী।

একটু ভেবে দেখুন জগতের সকল জীবিকা কর্মকেই এ দু ভাগের যে কোন একটা তে ফেলা যাবে। ব্যবসা করতে পুঁজি লাগে। ব্যবসার উপার্জন অনির্ধারিত, অনিয়িমিত সাধারণত এবং অনিশ্চিত ও কিছুটা। উল্টোদিকে চাকুরী করতে একটা নির্ধারিত যোগ্যতা লাগে, পুঁজি লাগেনা (ঘুষ অন্য ব্যপার) এবং একটা নির্ধারিত সময় শেষে নির্ধারিত হারে অর্থ প্রাপ্তি ঘটে এবং জীবিকা নির্বাহ হয়। এখন আপনারাই বলেন আমার বর্ননা মতে ভিা কে চাকুরীর মধ্যে ফেলব না ব্যবসা।

ভিা করতে নরমালি পুঁজি লাগেনা আবার সে কারও আন্ডারে না বা নির্ধারিত হারে উপার্জন ও নাই। তবে লজ্জাবোধকে কিন্তু জলাঞ্জলি দিতে হয় ভিক্ষা করতে । এসবই সাধারণ তত্ত্ব কথা । বাস্তবে এর ব্যতয়ও ঘটে। যেমন বেশ ক'বছর আগে পত্র পত্রিকায় এক খবর দেখেছিলাম ঢাকার অদূরে টঙ্গিতে এক মহিলা এরেষ্ট হয়েছিলো।

সে একটা ভিক্ষুক গ্রুপের লিডার। তার ভিক্ষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও ছিল যেখানে ভিক্ষুক হবার নানা কৌশল সহ ছদ্মবেশ ধারণ, এবং অঙ্গ বিকলঙ্গকরণ পন্থাও শেখানো হয় স্বেচ্ছায় বা জোরপূর্বক। জানেনতো বিকলঙ্গ হলে মানুষের বেশী দয়া পাওয়া যায়। পুরো ঢাকা শহর জুড়ে ছিল তার ভিখারীর নেটওয়ার্ক। নিয়মিত ভাগ পেত সে ।

তো দেখা গেল ঐ মহিলার জন্য ভিক্ষা হলো ব্যবসা আর তার অধস্তন ভিক্ষুক বর্গের জন্য ওটা চাকুরী। রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যালে গাড়ী থামলেই দেখা যায় ছুটে আসে অসংখ্য ভিখারী নানান কিছিমের বেশভূষনে। এই যে ভিার জন্য রাসতায় নামতে পেরেছে জানেনতো তার জন্য নিয়মিত এদেরকে রাস্তার রাজা নীল (নীল বর্তমানে পেস্ট কালারে কনভার্ট হয়েছে) কাপড়ের আইনি লোকদের বখরা দিতে হয়। একজন রাস্তার ভিখারী আমাকে এ তথ্য দিয়েছিল। সে বৃদ্ধ আর ও বলেছিল, বাবা এলাকার মাস্তানরাও ভাগ লইয়া যায়।

ভিখারীর উপরে ভিখারী। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মহানবী(সাঃ) এর সেই গল্পটা তো আমাদের সবারই জানা। ঐ যে এক ব্যক্তি রাসূল(সাঃ) এর নিকট ভিক্ষা চাইতে এসেছিল। উনি তাকে ভিক্ষা না দিয়ে বরং একটা কুঠার কিনে দিলেন আর সেই কুঠার দিয়ে কাঠ কেটে বাজারে বেঁচে জীবিকার ব্যবস্থা করতে বললেন। লোকটি ভিুক হতে শ্রম জীবী ও ব্যবসায়ী হয়ে উঠল।

ইসলাম ধর্মের যাকাত ব্যবস্থা মূলত সমাজ থেকে ভিক্ষাবৃত্তি দূর করারই একটা মহৎ পন্থা। শুধু ইসলাম কেন সব ধর্ম, সব তন্ত্রেই পুথিগতভাবে সুস্থসবল ব্যক্তিকে ভিক্ষার প্রতি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। বৃটিশদের যে পুওর ল আছে সেখানে যারা কাজ করতে পারে কিন্তু করেনা ভিক্ষা করে তাদেরকে sturdy rogue বা vagrants বলা হয়েছে বাংলায় অর্থ দাড়ায় বলিষ্ঠ বদমায়েশ। এরা এক ধরনের অপরাধী । ওদিকে ইসলামের নাম নিয়ে আমাদের দেশে দেখা যায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে লালসালু বিছিয়ে একদল ভিা করছে।

আবার পীর ফকীর বেশে মানুষ ঠকিয়ে ধর্মের নামে ভিক্ষা চলছে এদেশ যত্রতত্র। মাজার পূজার আড়ালে বেশীর ভাগ েেত্র যে ভিক্ষাপূজা চলছে তাও কিন্তু আমরা অনকেইে বুঝি। বিত্তবানরা ভিক্ষা দিয়েও চলেছে সহজ মুক্তির আশায়। যারা নিজেরাই ভিখারী তারা যে কি মুক্তি দেবে আমার সল্প জ্ঞানে বোধগম্য হয়না। হিন্দু রীতীতে দেখা যায় একদল সাধু সন্ন্যাসীরা জীবিকা হিসেবে ভিক্ষাকেই বেছে নেন।

তাদের জীবন ধারণ পন্থা এবং ধর্ম কর্ম অন্য কোন আয়ের সাথে সংগতি রাখতে দেয়না বলেই নাকি তাদের এই জীবিকা। ভিা সেখানে ধর্মেরই অংশ যেন। সে সব সাধু মুনীদের মতে হিন্দুদের দেবতা শিব বা শিবা ও নাকি সংসার চালাত ভিা করেই। বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারকদেরকে তো ভিক্ষুক নামেই ডাকা হয়। আমার ছোটবেলায় বাসায় এক ব্যক্তি এসেছিলেন আধ্যাত্মিক এক ভাব নিয়ে।

তিনি নাকি স্বপ্নে কোন এক গাছের শিকড় পেয়েছিলেন। তাবিজে পড়ে নিলে অনেক অনেক রোগ মুক্তি সম্ভব। দূর্বল ভীরু মানুষদের বিশ্বাস করিয়ে তিনি ভালই ভিা বা সাহায্য পেতেন। অবশ্য তার ভিার মাঝে কিস্তু একধরনের বিনিময় আছে। ব্যবসা জাতীয় ব্যপার।

সেই লোকটাকে সেই শিশুকালে আমার ফকীর দরবেশই মনে হয়েছিল। ফুটপাতের ক্যানভাসারদেরকেও আমার ঐ জাতীয় ভিখারী মনে হয়। এই তো সেদিন রাস্তার পাশে এক ক্যানভাসার বিষাক্ত বিছার তেল বিক্রি করছিল। মুখে মুখস্ত নানাকথার ফুলঝুরি। সবরোগ ভাল হবার গেরান্টি দিয়ে সে বলছিল, বহু টাকা তো নষ্ট করেন সিগারেট পান বিড়ি ফুকিয়েই, মাত্র 30 টাকা আমাকে দিয়েই দেখেন।

ভাল পন্থাা ভিক্ষার । ভাল ব্যবসাও বটে। পাড়া মহল্লায় মাঝে মাঝে পঙ্গু ভিক্ষুকদের দলবদ্ধ হয়ে ভিা করতে দেখা যায়। তাদের চলাফেরা এবং ছন্দময় ভিক্ষা বুলির মধ্যে কিন্তু বেশ একটা কাব্যিক ভাব পাওয়া যায়। তবে শুনেছি ওরা স্বাধীন নয়।

ওদেরকে নিয়ন্ত্রন করে কোন এক ভিক্ষা লিডার। বৃষ্টি হচ্ছিল , দাড়িয়ে আছি রিকশার জন্য। কেতাদুরস্ত পোষাকে 60 উধর্্ব এক শক্ত সমর্থ এক বৃদ্ধ এসে অনুরোধ করলেন , বাবা একটা মোবাইল করা যাবে। দিলাম। কথা শেষে শুরু হলো নানান কথা জানলাম উনি একদা সরকারী এক ছোট চাকুরী করতেন।

ছেলে আর্মির সৈনিক। তো শত কথার শেষ কথা বাবা আমাকে দুপুরে খাবার জন্য কিছু টাকা দিতে পারবেন। 20 টাকা ছিল ভাংতি দিলাম। কিন্তু মন খারাপ হলো । তার ভিক্ষার পন্থা দেখে নাকি দেশের করুন চিত্র দর্শনে জানিনা।

তবে সব চেয়ে খারাপ লাগে যখন কোন মুক্তিযোদ্ধাকে ভিক্ষা করতে দেখি। দেশ স্বাধীন করেছিল তারা এজন্যই বোধহয় যাতে স্বাধীন ভাবে হাত পাততে পারে। আরও খারাপ লাগে মায়াবী চেহারার রুগ্ন শিশুগুলো যখন হাত পাতে ুধার্ত পেটে। ঢাকার রাস্তায় কতবার যে পড়েছি সেই সব ভিক্ষুকদের পাল্লায় যারা বলেন, বাড়ী ওমুক জায়গায়, ঢাকায় এসে টাকা শেষ । দেশে যাবে টাকা চাই।

একই ব্যক্তিকে দুদিন দুবার নিজ চোখে দেখে বুঝেছি ওটা ভদ্রবেশী ভিক্ষার এক পন্থা। লোকাল বাসে প্রায়শই দেখা যায় গুলিস্তান, ফার্মগেট এর মত জায়গা থেকে কেউ কেই ভিক্ষা করতে ওঠে। হাতে থাকে একটা জটিল রোগের সার্টিফিকেট। নিরব ভিক্ষা। কেউ কেই আবার মা বাবা ছোট ভাই বোন মারা গেছে বলে ভিক্ষা চায়।

খেয়াল করলে কদিনেই বোঝা যায় একজনের মা বাবা প্রতিদিনই মরে। ভিক্ষার সাথে সেখানে মিথ্যার একটা নিবির যোগসূত্র আছে। প্রেসবক্লাবের মোড়ে একবার এক লোককে দেখেছিলাম হাতে পায়ে মুখে মাথায় সর্বত্র রক্তে মাখামাখি। রিকশার নারী শ্রেনীর কাউকে দেখলেই লাফ দিয়ে সামনে পড়ছে আর ভিক্ষা চাচ্ছে। কোথাও কোথাও নাকি মলমূত্র গায়ে মেখে ও নামে পথে।

শুনেছি বিদেশে অনেক ভিখারী খালি হাতে ভিা করেনা, কোন একটা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে পথচারীদের আকৃষ্ট করে ভিা করে। লন্ডনের আন্ডারগ্রাউন্ড সিস্টেমের ভেতর ভিক্ষা নিষিদ্ধ তবে যাত্রীদের বিনোদনের জন্য মিউজিশিয়ান সেজে ভিক্ষা সেখানে এলাউড। শহরের সেীন্দর্য রার্তে আমেরিকাতে কিছু স্টেটে নাকি ভিক্ষা নিষিদ্ধ যেমন ফোরিডা। আমাদের দেশে লোক জমিয়ে গান শুনিয়ে বা খেলা দেখিয়ে যে উপার্জন পস্থা চালু আছে ওটাকে কিন্তু ভিক্ষা বলবনা , ওটা ব্যবসাই। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে ভিক্ষাবৃত্তিতেও।

উন্নত বিশ্বে সাইবার বেগিং বা ইন্টারনেট বেগিং নামে নতুন এক কালচার তারই প্রকাশ। ফ্রি কোন এক ওয়েব হোস্টিং এ ওয়েব পেজ খুলে কোন এক ভিখারী সেখানে বৃত্তান্ত বর্ননা করে ভিক্ষা প্রার্থনা করে। ভিক্ষার সবচেয়ে দৃষ্টিকটু বিষয় ঘটে যখন দেখি শক্ত সমর্থ কোন যুবক বা যুবতি হাত পেতেছে লজ্জায় অবনত হয়ে। শুধু কি তাদের দোষ। আমাদের জাতিই তো গরীব।

দেশই তো হরহামেশা ভিক্ষা করছে ধনীদেশগুলোর কাছে। দেশে বর্তমানে কত যে ভিক্ষুক আছে বলা মুশকিল। ঘুষকে যদি ভিক্ষার মধ্যে ফেলি তাহলে সে সংখ্যা তো আরও অনেক বাড়বে। কিছু আবার সিজনাল ভিক্ষুক আছে। এমনেতে ছোট খাট মজদুরী করে দিন চালায়।

বিশেষ দিন যেমন ঈদ, শবেবরাত, বড়দিন বা পূজায় তারা হাত পাতার শিল্পটাকেও রপ্ত করে নেয়। একবার এক স্বাধীন ভিখারীর কথা শুনেছিলাম যে ভিক্ষা করে একটা বাড়ীও বানিয়েছে। সন্তানদের লেখাপড়াও করিয়েছে। নেশা হয়ে যাওয়ায় ছাড়তে পারেনি। আসলে ভিক্ষা এমন এক সহজ জীবিকা যার শুরুটা বেশ কঠিন।

তবে চুলজ্জার মাথা খেয়ে একবার কেউ শুরু করলে এর আরাম এত বেশী যে তাকে আর অন্য কাজে নেয়াই যাবেনা। হাত পাতা আর টাকা। এম এ পাস করা সরকারী চাকুরে অনেকে দিনে মাত্র 100/150 টাকা আয় করে, সেখানে হাত পেতে এর অনেক বেশী ইনকাম। বলুনতো মজা না। সত্যিই যারা আপাহিস, পঙ্গু, কর্মশক্তিহীন একেবারেই কাজ করতে পারেনা তাদের ভিক্ষা করতে দোষ দেখিনা।

বরং যাদের পকেটে টাকা নাচানাচি করে তাদের কর্তব্যও বটে ওদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করা। ওদিকে দেশে বিস্তর বেকার। কাজের অভাব। কেউ আঙ্গুল ফুলে এরই মাঝে ওক গাছ আর কেউ শুকিয়ে পাটকাঠি। এই অসাম্য অর্থ বন্টনে ভিুকের সংখ্যা তো বাড়বেই।

কিন্তু বলুনতো আপনার দেয়া ভিক্ষার টাকা দিয়ে বিড়ি কিনে যখন কোন ভিক্ষুক আপনার ই সামনে ধোয়া ফুঁকে তখন কেমন লাগে? পুরান কথায় ফিরে যাই আবার। অনেক প্যাচালের শেষে ভিক্ষা পেশা না জীবিকা না চাকুরী না ব্যবসা ঠিক সংগায়িত কিন্তু করা গেলনা। অর্থের বিনিময়ে লজ্জা খুলে যে নারী দেহ বেঁচে জনে জনে তাদেরকে যদি দেহব্যবসায়ী বা তাদের বৃত্তিকে যদি পতিতা বৃত্তি বলে চালানো যায় আজকাল তাহলে ভিক্ষুকরা যেহেতু চু লজ্জা খুয়ে হাতপাতে জনে জনে তাদেরকেও হাতপাতা ব্যবসায়ী বা তাদের বৃত্তিকেও ভিক্ষাবৃত্তি নাম দেয়া আরও যথার্থ। ভিক্ষাকে কটা করার জন্য আমার এ লেখা নয় তবে ভিক্ষাকে যথার্থ উপায়ে নিরুৎসাহিত করার উদ্দেেেশ্য আমার লেখা বলতে পারেন। একটা বাস্তব গল্প বলি।

ঘটনার দিন ঠিক মনে নেই। 1999 সালের ঘটনা হবে। কোরবানী ঈদের আগের দিন। দুপুরে ঘরে টিভি দেখছি। কলিংবেল বাজল।

দরজা খুলে দেখলাম ওপাশে মোটামুটি পরিপাটি পোষাকে বেশ ভদ্র এবং নম্র চেহারার একজন মানুষ। হাতে পরিবারের ছবি। দুই সন্তান। স্কুলে পড়ে। অত্যন্ত ভদ্রভাবে জানালেন তিনি ছোট একটা চাকুরী করেন।

বেতন হয়না ঠিকমত। কাল ঈদ , বাচ্চাদের বলেছেন নতুন কাপড় দেবেন, সেমাই মিষ্টি খাওয়াবেন। কোন টাকা নেই কাছে। তিনি সাহায্য চাচ্ছেন। বড় করুন আবেদন তার চেহারায় দেখেছিলাম বলেই তার সে আবেদনকে ভিক্ষা না বলে সাহায্য বললাম।

আরেকটি ঘটনা বলতেই হয়। একদিন সন্ধ্যায়। দরজায় শব্দ শুনে খুললাম । প্রচন্ড শীত তখন ঢাকায়। দরজায় এক যুবক, শক্ত সমর্থই, হিরোইনচি বলে মনে হলোনা (ওদেরকে আমি ভাল করেই চিনি) , উদোম গায়ে ঠক্ ঠক্ করে কাঁপছে।

কাপড় ভিখারী আমি তাকে বলবনা, ভীষণ মায়া যে লেগেছিল মায়াবী মুখের ছেলেটিকে দেখে। এই মায়াই আসলে প্রকৃত এবং উপযুক্ত ভিখারীর সাথে ভন্ড, হিরোইনচি, বাটপার কর্মঠ ভিখারীদেরকেও ভিক্ষার মত ঘৃন্য জীবিকাতে সুস্থভাবে টিকিয়ে রেখেছে। [রং=#339999](প্রকাশঃ ক্রিটিক, প্রথম বর্ষ পঞ্চম সংখ্যা 1লা সেপ্টেম্বর, 2006 )[/রং]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.