কয়েকদিন আগে ওয়েলিংটন স্ট্রীটের লন্ডন প্রবাসী এপার বাংলা ওপার বাংলার বাঙ্গালিদের নিয়ে বাংলা ভাষায় গান, কবিতার একটা আসর হয়েছিল ।
ভিক্টোরিয়া পার্কে বেড়ানো শেষে যোগ দিয়েছিলাম সেই আসরে। 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি। ' আমাদের মাতৃভাষা দিবসের এই মহান গানটি সেদিন একজন বিদেশীর মুখে শুনে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। গানের মধ্যে কোনো সুর ছিল না তাল ছিল না কিন্তু কথাগুলো ঐ বিদেশীর মুখে এতো মধুর শোনালো যে আমি আরো একবার আমার বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে ফেললাম।
ঐ আসরে বাংলা ভাষায় গান, কবিতা আবৃত্তি করা হয়েছিল। বিদেশীদের মুখে বাংলা ভাষাকে এতো মধুর শোনায় সেদিন আমি উপলব্ধি করলাম। কিন্তু আমরা বাঙ্গালিরা আসলে কতো গভীর ভাবে তা উপলব্ধি করি? আমাদের ছোট শিশুটি যখন কথা বলতে শিখে তখনি তাকে আমরা ইংরেজি দুএকটি ভাষাকে আয়ত্ত করানোর জন্য উঠে পড়ে লাগিঃ - বলো তো তোমার হেড কোনটা?
বাড়তি অহমিকা দেখানোর জন্য ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে বাচ্চাকে ভর্তি করে দেই। তারপর বাবা-মা আপ্রাণ চেষ্টা করে দুজনের রূজি দিয়ে বাচ্চার ইংলিশ মিডিয়ামের পড়ার খরচ চালাই। এতে ক্ষতি যাই হউক না কেন আমরা তো বলতে পারবো আমার বাচ্চাটা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ছে।
আমাদের তথাকথিত শহুরে অনেক ছেলেমেয়ে আছে তারা গ্রাম চেনে না, মেঠো পথ কী খেতের আইল দিয়ে হেটে যাওয়ার আনন্দ তারা কখনো উপভোগ করতে পারে না। তারা রবীন্দ্রনাথ, নজরূল চিনে না তারা চেনে মাইকেল জ্যাকসন, আদনান সামি, ম্যাডোনা, এলিসা। শিশুরা জানে না আমাদের ভাষা আন্দোলন, জানে না 71-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ।
আমি বলবো না ইংরেজি শিক্ষার প্রয়োজন নেই, কিন্তু আমরা বাঙালি হিসেবে আমাদের আগে প্রাধান্য দিতে হবে বাংলা ভাষাকে। 'বিনে স্বদেশী ভাষা মিটেকি মনের আশা'।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।