আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণিতের পাগলা-জিনিয়াস



এই ভদ্্রলোকের নাম গ্রিগরি পেরেলম্যান। তুখোড় এক রুশ গণিতবিদ। ধারনা করা হচছে যে গণিতশাস্ত্রের সবচেয়ে পুরাতন ও জটিল সমস্যার তিনি সমাধান করে ফেলেছেন। পোয়াঁকারের তত্ব শতবর্ষ পুরানো। গণিতের সাতটি বড় ধাঁধার অন্যতম, যার সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এক গণিত ইন্সটিটিউট 1 মিলিয়ন ডলার পুরষ্কার ঘোষনা করে রেখেছে।

সমস্যা হচ্ছে যে ভদ্্রলোক নিজেই গায়েব। এবং তার পুরনো হিস্টরি থেকে বোঝা যাচ্ছে যে এই পুরষ্কারে তার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। টাকাটাও বড় কথা না। অংকশাস্ত্রে কোন নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় না। তার বদলে রয়েছে একটি পদক - ফিলডস পদক - যাকে গণিতের জগতে নোবেলেরই সমান মর্যাদা দেওয়া হয়।

তাও বছর বছর দেওয়া হয় না - প্রতি চার বছরে একবার মাত্র। সামনের সপ্তাহে মাদ্্রিদ শহরে এবারের পদক বিজয়ীর নাম ঘোষনা করা হবে। বলা হচ্ছে পেরেলম্যান অবলীলায় জিতে যাবেন। কিন্তু এই গণিত নোবেলেও তার কোন মাথা ব্যথা নেই। তিনি কোথায় আছেন এই মুহুর্তে সেটাই কেউ জানেনা।

তাকে ই-মেইল করলে কোন জবাব মেলে না। * বিচিত্র তার কাহিনী। চল্লিশ বছর আগে রাশিয়াতে জন্ম । সেখানেই পড়াশোনা, সেইন্ট পিটার্সবার্গ শহরে । 16 বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ম্যাথ অলিম্পিয়াড শিরোপা জেতেন পার্ফেক্ট স্কোর নিয়ে! সেইন্ট পিটার্সবার্গ থেকে পিএইচডি লাভ করে চলে যান আমেরিকাতে শিক্ষকতা করতে।

কিন্তু সেখানেও থাকেননি। রাশিয়াতে ফিরে যান নব্বইয়ের দশকে। তার সহকর্মিরা বলেন - তাকে এ দুনিয়ার মানুষ বলে মনে হতো না। লম্বা চুল, লম্বা নখ, ঠিক রাসপুটিনের মতো। একদমই একান্তচারী।

সময় কাটাতে চলে যেতেন বনে বাঁদাড়ে। ব্যাংের ছাতা কুড়াবেন বলে। * 2002 সালে তিনি হঠাৎ ইন্টারনেটের এক অংক বিষয়ক ওয়েবসাইটে ঘোষনা দেন যে তিনি পোয়াঁকারের তত্ব সমাধান করে ফেলেছেন। এবং গুটি কয়েক পেপার ওয়েবসাইটে আপলোড করেন। তারপর আমেরিকায় একটা ছোট সফর দেন তার সমাধানটি নিয়ে আলাপ করার জন্য।

ব্যাস এতটুকুই। এতই সংক্ষিপ্ত তার সমাধান যে তা ঠিক আছে কিনা, সেটা প্রমান করতে গিয়ে অন্যান্য গণিতবিদরা হাজার হাজার পাতার পেপার বের করে ফেলেছেন। কিন্তু কোন ভুল পাননি। সবাই আসতে আসতে মেনে নিচ্ছেন পেরেলম্যানের অর্জন। তাকে সম্মান জানাতে পুরো গণিত সমাজ ব্যাকুল।

কিন্তু তিনি নেই। সেইন্ট পিটার্সবার্গের স্টেকলোভ গণিত ইন্সটিটিউট, যেখানে গত কয়েক বছর গবেষনা ও অধ্যাপনা করেছেন, সেখানের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। সেখানকার ই-মেইল যায় না। তার ব্যক্তিগত ই-মেইলও অকেজো। ধারনা করা হচ্ছে যে তিনি মনুষ্য সমাজ ছেড়ে হয়তো দুরে কোথাও চলে গেছেন।

আজব এই লোকের পরিচয় পাওয়া যায় ছোট্ট এক ঘটনা থেকে। কয়েক বছর আগে ইউরোপের এক বড় ম্যাথ পুরষ্কার তাকে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি সেটা প্রত্যা খ্যান করেন। তার কারন? তিনি বলেন যে, আমার কাজ আসলেই বোঝার ক্ষমতা এই পুরষ্কার কমিটির হয়নি!!! * ঘটনাটি পড়ে আমার দাবা জিনিয়াস ববি ফিশারের কথা মনে পড়লো। যাই হোক, গণিতের জিনিয়াস-পাগলা গ্রিগরি পেরেলম্যানকে নিয়ে আরো জানতে চাইলে এখানে পাবেন - Click This Link



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।