আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এসিড রেইন

ছবি নেট এসিড রেইন বা এসিড বৃষ্টি একটি সাধারণ এবং জনপ্রিয় বিষয়। শুধুমাত্র বৃষ্টির পানির pH পরিমাপ করেই বুঝা যাবেনা সেটি এসিড রেইন কিনা ? বা কেন বৃষ্টি এসিডিক বা ক্ষারীয়? এটা নিশ্চিৎ যে এসিড রেইন পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব বিস্তার করে। বায়ুমন্ডল থেকে রাসায়নিক পদার্থ কঠিন,তরল ও বায়বীয় তিন অবস্থায়ই ভূ-পৃষ্ঠের গাছপালা ,মাটি, হ্রদ, সমুদ্র এবং মানবদেহে প্রবেশ করে । কয়েকভাবে বায়ুমন্ডল থেকে পানি আলাদা হয় বা বেরিয়ে যায় । জলীয়বাষ্প হালকা হয়ে অনেক উপরে উঠে যায়, ঠান্ডা হয় এবং বৃষ্টি আকারে ভূ-পৃষ্ঠে পতিত হয়; মেঘের কিছু জলবিন্দু বেশি ঠান্ডা হয়ে কঠিন বরফে পরিণত হয়ে শিলাপাত ঘটায়;আবার কিছু অংশ কঠিন ও তরলের সমন্বয়ে শিলাবৃষ্টি আকারে ভূ-পৃষ্ঠে নেমে আসে।

এসিডরেইন হওয়ার জন্য প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক উৎস থেকে রাসায়নিক পদার্থ জলবায়ু মন্ডলে প্রবেশ, রাসায়নিক পদার্থের পরিবহনও রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে রাসায়নিক পদার্থ জলবায়ুমন্ডলে প্রবেশ ও জলবায়ুমন্ডল থেকে রাসায়নিক পদার্থের দূরীভূত করনের বিষয়গুলো বিবেচ্য। বৃষ্টির পানির উপাদান নির্ণয়ে বেশ কিছু পরিক্ষণ ও পর্যবেক্ষন তথা গবেষণা করা হয়েছে । উদাহারণ সরূপ, গরহ্যাম (1958) প্রতিবেদন করেছেন যে হাইড্রোলিক এসিড নগর এলাকায় এসিড বৃষ্টি ঘটায়। .জানজি (Junge 1963) মেঘ থেকে বৃষ্টি সংঘটনে সমুদ্র লবনের ভুমিকা উল্লেখ করেন। এমনকি এরও আগে ১৮৭২ সালে, স্মীথ(Robert Anges Smith) বায়ুদূষণ এবং বৃষ্টির পানির রাসায়নিক উপাদানের মধ্যে সম্পর্কের উপর আলোকপাত করেন তার বিখ্যাত বইয়ে “Air and Rain: The Beginnings of A Chemical Climatology (Smith, 1872) ” ।

১৯৬০, ১৯৭০ ও১৯৮০ সালে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান (নরও্রয়ে, সুইডেন ,ডেনমার্ক ইত্যাদি) পর্যবেক্ষন বৃষ্টির পানি এবং বরফে এসিডিটি মাত্রা বৃদ্ধির উপর আলোকপাত করা হয়। এই পর্যবেক্ষনে উল্লেখ করা হয় ১৯৫৫ -১৯৬৫ সালে বৃষ্টির পানি এবং বরফে pH পরিমান নাটকীয় ভাবে কমে গেছে (এসিডিটি বৃদ্ধি) । তারা আরও প্রতিবেদন করলেন দক্ষিণ নরওয়ে ও সুইডেনের অনেক নদীনালা ও হ্রদে মছের উপস্থিতি হ্রাস বা হ্রাস হতে শুরু করার কথা। উক্ত গবেষনা মতে জলাশয় মৎসহীন হতে শুরু হওয়ার কারণ এসিড রেইন বা অম্ল বৃষ্টির ফলে হ্রদ অম্লীয় হয়ে মাছের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাওয়া। পরবর্তী গবেষনায় দেখা গেছে দক্ষিণ নরওয়ে এবং সুইডেন এর বৃষ্টি আর স্নুফল ছিল এসিডিক যার গড় pH মান ৪.৩।

হ্রদের পানি এসিডিক হওয়ার মূলকারণ ছিল এসিড বৃষ্টি । আর এসিড বৃষ্টির উদ্ভব হয়েছিল ভারী কলকারখানার দূষিত বর্জ্য পদার্থের দীর্ঘ পরিবহন। পূর্ব কানাডা ও পূর্ব যুক্তরাষ্ট্রের অনেক জায়গায় এসিডবৃষ্টি হয় । ফলে কিছু হ্রদের পানি মাছ বসবাসের অযোগ্য বা বেশি এসিডিয় হয়ে গেছে । এসিড রেইন হ্রদ,ফসলি জমি,বন ,মাটি এবংবাস্তুসংস্থানের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

NAPAP (1991) উক্ এলাকায় এসিডরেইনের প্রভাবের উপর একটি প্রতিবেদন করে প্রতিবেদনটি নিম্নরূপ। ১)যুক্তরাষ্ট্রের এসিডকাতর এলাকার ১৪%হ্রদ এবং ২৮% নদীনালা তীব্র এসিডিক ফ্লুরিডায় জলাশয়গুলো তীব্রতম এসিডিক(২৩%হ্রদ এবং ৩৯% নদীনালা )। মধ্য আটলান্টিক উচ্চভূমি,মধ্য আটলান্টিক সমুদ্র উপকূলীয় সমভূমি এবং এডিরনডেক পর্বতের ৬-১৪% হ্রদ এবং নদী তীব্র এসিডিক। ২)সঞ্চিত অম্লীয় অধক্ষেপ কিছু অংশের পানিকে বেশি মাত্রায় অম্লীয় করে তুলেছে। ৩)প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন জৈব এসিড এবং এসিড খনি নিঃসৃত ড্রেইন বা নালা থেকে নির্গত এসিডও পানিকে অম্লীয় করে তুলেছে।

কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাসের অন্যতম উপাদান। পানিতে দ্রবিভূত হয়ে তা কার্বলিক এসিড দ্রবণ তৈরি করে। যার pH মান ৫.৬। এটা নিরপেক্ষ বৃষ্টির সীমা বা বেইসলাইন ধরা হয়। বৃষ্টির পানিতে লবণ যুক্ত হলে তা বৃষ্টির এসিডিটির পরিবর্তন ঘটায় না।

মেঘে সালফার অক্সাইড,কার্বন মনোক্সাইড বেশি পরিমানে উপস্থিত থাকলে এসিডরেইন হয়। তদ্রুপ ক্ষারীয় পদার্থের উপস্থিতি বৃষ্টিপাতকে ক্ষারীয় করে তুলে। শুধুমাত্র হাইড্রোজেন আয়নের মাত্রাই এসিডিটি নির্ধারণ করে না সালফার অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, সালফেট ,কার্বন মনোক্সাইড ,মাত্রাতিরিক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড ক্লোরিন, ফ্লোরিন সহ অন্য পদার্থের উপস্থিতি এতে ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশের বিভিন্ন কলকারখানায় থেকে বর্জ্য নির্গত হয়। এসিডবৃষ্টিতে ক্ষতিকর পদার্থ থাকে।

খুব দূষিত এলাকায় এসিড বৃষ্টি লেবুর রসের বা ভিনেগারের মত এসিডিক হতে পারে । এই বৃষ্টি যা অতিমাত্রায় অম্লীয় গাছপালা নদী ,হ্রদ, বন্য প্রাণি, বিল্ডিং এবং মানবদেহের ক্ষতিসাধণ করতে পারে। এসিড বৃষ্টি মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি সাধন করতে পারে। এ্ই পরিবেশে শ্বাস-প্রশ্বাস মানুষের ক্ষতি করতে পারে। . এটি বক্ষব্যাধির কারণ ঘটাতে পারে।

যখন এসিড বৃষ্টি পানীয় পানরি উপর রাসায়নিক পদার্থ এবং ধাতুর মিশ্রণ ঘটায় ফলে পানি দূষিত হয়ে যায়। এইভাবেই এসিড বৃষ্টি খাবার পানিকে দূষিত করে । রঙিন গ্লাসের রং জ্বলে যাওয়া এসিড বৃষ্টির ফলেহয়ে থাকে। এটি মানব স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। . All of these approaches probably have a role to play, but all have some disadvantages which will form a research agenda for the next few years. বিগত ত্রিশ বছর কিছু ১০০০ বছরের পুরোনো স্টেইন কাচের জানালা এসিড রেইনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বড় বড় অট্টালিকার ক্ষতিসাধন উন্নয়নশীল বিশ্বের এসিড দূষণ হওয়ার ইঙ্গিত প্রদান করে।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.