আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এখনো উত্তেজনা অফুরন্ত...

পুরো দেশ দুই ভাগে বিভক্ত। রণ সাজে সজ্জিত দুই দলের সমর্থকরা। গ্যালারিতে তিল ধরনের জায়গা নেই। স্টেডিয়ামের বাইরেও হাজার হাজার দর্শক। উভয় দলের সমর্থকদের মধ্যে বাকযুদ্ধ চলে অনবরত।

শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, ম্যাচের উত্তেজনা ছড়িয়ে যায় পুরো দেশেই। অতিরিক্ত চাপের কারণে মাঠে ক্রিকেটারদের মেজাজ ঠিক রাখতে হিমশিম খেতে হয়। চুন থেকে পান ঘষে গেলেই শুরু হয়ে যায় মারামারি। নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত দেশের দুই সেরা দল মোহামেডান-আবাহনী ক্রিকেট ম্যাচের চিরপরিচিত দৃশ্য ছিল এমনই।

এখন আর সেই উচ্ছ্বাস নেই।

দর্শকদের মধ্যে উন্মাদনা নেই। দেশের ঐতিহ্যবাহী দুই ক্লাবের লড়াইয়ে গ্যালারি খা খা করে। ফ্রি টিকিটেও দর্শক মাঠে আসে না। তবে দর্শকের আগ্রহ কমে গেলেও মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচে মাঠের উত্তেজনা কিন্তু কমেনি এতটুকুও। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে তা দেখা গেল আরেকবার।

উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে শেষ বলে জয় পেল মোহামেডান। বিজয়ের সুবাস পেয়েও হেরে গেল আবাহনী।

দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে অনেক আগে থেকেই যেন কাকতালীয়ভাবে একটা ঘটনা ঘটছে, অধিকাংশ ম্যাচেই আগে ব্যাটিং করা দল বড় স্কোর করেও হারে। আবার খুব ছোট টার্গেটেও পৌঁছাতে পারে না যারা পরে ব্যাটিং করে। ১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে আবাহনীর অধিনায়ক ছিলেন আকরাম খান (বর্তমানে জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক)।

মোহামেডানের নেতৃত্বে আমিনুল ইসলাম বুলবুল। প্রথম পর্বের ম্যাচে মোহামেডানের বিরুদ্ধে ব্যাট করে ২৭৫ রান করে আবাহনী। বিজয় নিশ্চিত জেনে আবাহনী সমর্থকরা আনন্দ করতে থাকে। কিন্তু সেই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জয় হয় মোহামেডানের। একই মৌসুমের সুপার লিগেও একইভাবে জয় পেয়েছিল মোহামেডান।

২৮৯ রান করেও জিততে পারেনি আবাহনী।

১৯৯৩-৯৪ মৌসুমেও ঘটেছিল এমন একটি ঘটনা। প্রথমে ব্যাটিং করে মোহামেডান ২৬৫ রান করার পর ভেবেছিল তাদের জয় বুঝি অনেকটা নিশ্চিত। কিন্তু সেই ম্যাচ জিতেছিল আবাহনী। তবে সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ঘটনাটা ঘটেছিল ১৯৭৯ সালে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে।

রকিবুল হাসানের মোহামেডান প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ৭৯ রান। ছোট্ট এই টার্গেটেও পৌঁছাতে পারেনি আবাহনী। ৭৭ রানের বেশি করতে পারেনি আলিউল ইসলামের দল (আবাহনীর অধিনায়ক)। দুই রানের দুর্দান্ত এক জয় পাওয়ায় ঢাকার অলিতে -গলিতে মিছিল বের করেছিল মোহামেডানের সমর্থকরা। ২০০৮-০৯ মৌসুমেও তো সাকিব আল হাসানের আবাহনী ২৭৭ রান করেও জিততে পারেনি।

শেষ ওভারে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে মোহামেডানকে বিজয় এনে দেন খালেদ মাসুদ পাইলট।

মাঠে দর্শক থাক বা না থাক আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ মানেই উত্তেজনায় ভরপুর। মাশরাফি ও শাহরিয়ার নাফিস ছাড়া দুই দলে স্থানীয় বড় তারকা ছিল না বললেই চলে। ছিল না দর্শকও। কিন্তু উত্তেজনা ছিল অফুরন্ত।

কালকের ম্যাচটির মধ্য দিয়ে যেন প্রাণ ফিরে পেল প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ।

অনেক দিন থেকে আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলতে পারছে না বাংলাদেশ। তারপর ফিক্সিং কাণ্ডে প্রচণ্ড হতাশ পুরো জাতি। সব মিলে কেমন যেন ঝিমিয়ে পড়েছিল দেশের ক্রিকেট। কয়েক দিন পরেই আসছে নিউজিল্যান্ড।

তাই প্রস্তুতির পাশাপাশি দরকার ছিল উত্তেজনা। সেই উত্তেজনাটাই যেন কালকের মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচ থেকে পেল ক্রিকেটাররা। আর ক্রিকেটের এই উত্তেজনাকে সঙ্গী করে আবারও কিউইয়ের ঘাড় মটকে ধরুক টাইগাররা -এমন কামনাই করছেন দেশবাসী।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.