আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভুয়া ডাক্তার



ভেজাল ও নকল ওষুধ বাংলাদেশে দীর্ঘকাল ধরে স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা। কিন্তু এর পাশাপাশি ভুয়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা আমাদের জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরা রাজধানীসহ দেশের নানা অঞ্চলে বছরের পর বছর চিকিৎসার নামে মানুষ হত্যা করছে। সেই সঙ্গে তারা রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ টাকা। সম্প্রতি র‌্যাবের মোবাইল কোর্ট চট্টগ্রাম শহরে এক অভিযান চালিয়ে ৮ জন ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে।

ভুয়া চিকিৎসার সনদ দেখিয়ে তারা বহু বছর ধরে প্রতারণা করে আসছিল। র‌্যাবের মোবাইল কোর্ট এই ভুয়া চিকিৎসকদের কারাদ- দিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। জানা গেছে, এদের প্রত্যেককেই দুই বছরের কারাদ- ও ১ লাখ টাকা করে জরিমানা ধার্য করা হয়। এরা অবশ্যই বড় ধরনের অপরাধী। দেশে পাস করা প্রকৃত চিকিৎসকদের সংখ্যা কম থাকায় দেশব্যাপী এ ধরনের প্রতারকরা নকল কাগজপত্র যোগাড় করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেজে বসেছে।

এই ভুয়া ডাক্তারদের কেউ কেউ আবার দেশের নানা অঞ্চলে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে বসেছে। বিপুল জনসংখ্যা ও পর্যাপ্ত চিকিৎসাব্যবস্থা না থাকায় এই প্রতারকদের অনেকেই চিকিৎসার নামে লোক ঠকানো ব্যবসা বেশ ভালই করছে। কিন্তু এদের কারণে মানুষের রোগ তো সারছেই না; বরং সংশ্লিষ্ট রোগীরা নতুন করে আরও জটিল ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। কেউ কেউ অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন। এ ধরনের ভুয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ভুয়া চিকিৎসা ও সেইসঙ্গে অপচিকিৎসার খবর ইতোপূর্বে বহুবার পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অপরাধের তুলনায় এই দুর্বৃত্তদের লঘু দ- দেয়া হয়। প্রতিদিনের অন্য খবরের ভিড়ে এসব খবর চাপা পড়ে যায়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নামধারী এই অপরাধীরা যে সামাজিকভাবে যথেষ্ট ক্ষমতাবান তা সহজেই উপলব্ধি করা যায়। তা না হলে তারা এই প্রতারণা ব্যবসা কিভাবে চালিয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে? এদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক কারা? স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে কারও কারও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশের সঙ্গেও এদের দহরম মহরম রয়েছে বলে অভিযোগ।

তা না হলে প্রকাশ্য দিবালোকে সবার সামনে তারা এই প্রতারণার ব্যবসা চালাচ্ছে কিভাবে? এদের কারও কারও মালিকানায় যে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে- সেখানেই যে ভুয়া লোকদের নিয়ে চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা চলছে তা বুঝতে কারোরই অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। এটা কিভাবে সম্ভব হচ্ছে? এদের ভুল চিকিৎসার কারণে মানুষ অকালে জীবন হারাচ্ছে। তাই সময় এসেছে, ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তবে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। জনগণের স্বার্থেই ভুয়া ডাক্তারদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরী।

লঘু শাস্তি এদের প্রাপ্য নয়। চিকিৎসার নামে মানুষ হত্যার দায়ে এদের কঠোর শাস্তি দান অপরিহার্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.