আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহীনের ঘোড়াগুলি (ত্রয়ী)

মাথায় অনেক গল্প আসে; কিন্তু লেখার মত পর্যাপ্ত ধৈর্য-শ্রম-অধ্যবসায় নেই। গল্পগুলোকে তাই ছোট করে কবিতা বানাই...
ঘোড়া --- জীবনানন্দ দাশ আমরা যাইনি ম’রে আজো -তবু কেবলি দৃশ্যের জন্ম হয়: মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জ্যোৎস্নার প্রান্তরে; প্রস্তরযুগের সব ঘোড়া যেন - এখনো ঘাসের লোভে চরে পৃথিবীর কিমাকার ডাইনামোর 'পরে। আস্তাবলের ঘ্রান ভেসে আসে একভিড় রাত্রির হাওয়ায়; বিষন্ন খড়ের শব্দ ঝ’রে পড়ে ইস্পাতের কলে; চায়ের পেয়ালা ক’টা বেড়ালছানার মতো - ঘুমে - ঘেয়ো .................................কুকুরের অস্পষ্ট কবলে হিম হ'য়ে ন'ড়ে গেল ও-পাশের পাইস্-রেস্তরাঁতে, প্যারাফিন-লন্ঠন নিভে গেল গোল আস্তাবলে ..................................সময়ের প্রশান্তির ফুঁয়ে; এইসব ঘোড়াদের নিওলিথ-স্তব্ধতার জ্যোৎস্নাকে ছুঁয়ে। চতুর্দশপদী কবিতা : ৩৭ --- শক্তি চট্টোপাধ্যায় মহীনের ঘোড়াগুলি মহীনের ঘরে ফেরে নাই উহারা জেব্রার পার্শ্বে চরিতেছে। বাইশ জেব্রায়, ঘোড়াগুলি অন্ধকার উতরোল সমুদ্রে দুলিছে কালের কাঁটার মত, ওই ঘোড়াগুলি জেব্রাগুলি অনন্ত জ্যোৎস্নার মাঝে বশবর্তী ভূতের মতন চড়িয়া বেড়ায় ওরা - কথা কয় - কী কথা কে জানে? মানুষের কাছে আর ফিরিবে না এ তো মনে হয় আরো বহু কথা মনে হয়, শুধু বলিতে পারি না।

বাইশটি জেব্রা কি তবে জেব্রা নয়? ময়ুরপঙ্খীও হতে পারে এই ভৌত সামগ্রিক জ্যোৎস্নার ভিতরে? বামনের বিষন্নতা বহে নেয় ও কি নারিকেল ও কি চলচ্ছবিগুলি লাফায়ে-লাফায়ে যাবে চলে? ও কী মহীনের ঘোড়া? ও কি জেব্রা নয় আমাদের? অলৌকিকতার কাছে সবার আকৃতি ঝরে যায়। । মহীন --- শাহেদ খান এ-ই তবে 'নীরবতা' - সময়ের গাঢ় ইতিহাস ! চিরকাল শরতের আকাশের চেনা পরিসরে নিয়ত চলচ্ছবি পিছে ফেলে গেলে বুনোহাঁস, তারপর ঘোড়াগুলি নেমে আসে পৃথিবীর 'পরে। সময়ের নিঃশ্বাসে লন্ঠনে অবাধ কাঁপন; মহীনের ঘোড়াগুলো দেখে হাই তোলে বুড়ি চাঁদ; কত যুগ কেটে গেল - তাও বুঝি ঘোড়াদের মন আজও খুঁজে পায়নি যা দেখেছিল একদা অগাধ? আস্তাবলের পথে কুয়াশা'র আস্তর বাড়ে ঘোড়াদের স্তব্ধতা প্রাণ পায়। আর নিরাকারে - লৌকিক সব আলো নিভে গেলে ওরাও তাকায়; তাকিয়ে তো থাকে জানি, তবে ওরা দেখতে কি পায়? জীবনানন্দে মেতে এক কবি আজও হেঁটে চলে: নক্ষত্রের নীচে পৃথিবীর প্রগাঢ় মায়ায়... আলাদা কথা:: এটা অবশ্যই মাঝরাতের কবিতা।

সন্ধ্যা নামতেই শরতের পূব-আকাশে দেখা যায় বিশাল হাঁসের মত সিগনাস মন্ডল (বাংলায় এর নাম 'বক-মন্ডল; তবে গ্রীক পুরাণে আছে হাঁস হয়ে। আমিও যতবার তাকাই 'হাঁস'ই দেখি - তাই হাঁস রাখলাম)। সমস্ত রাত আকাশে অবিরাম পরিভ্রমণ করে মাঝরাত নাগাদ এই বিশাল হাঁস চলে যায় পশ্চিম আকাশে। ৩য় লাইনে বলা আছে, চলচ্ছবিগুলো পিছে ফেলে হাঁস যখন চলে যায় - অর্থাৎ মাঝরাত: তখন আমাদের কবিতার শুরু। কবিতায় এসব ব্যাখ্যা দিতে নেই।

আগে অনেক লেখায় এসব ছিল, কখনও ব্যাখ্যা দিই নি। আজ কেন দিলাম, জানি না। হঠাৎ ইচ্ছে হল। স্কেচ'টা: একটু আগে আমার কাঁচা-হাতে আঁকা। বিনয় করে 'কাঁচা-হাত' বলছি না।

বিনয় করার প্রশ্নই আসে না !
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.