আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অক্টোবরের ক্রান্তিসংকট ও এরশাদ ফর্মুলা

সাবেক জাঁদরেল সেনাপ্রধান রাষ্ট্রপতি, বর্তমানে অস্থিরমতি মহাজোট নেতা ও সরকারি (ট্রেজারি) বেঞ্চের সংসদ সদস্য, জাতীয় পার্টিপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ২৫ অক্টোবরের পর দেশে কী হবে তা কেউ জানে না। রংপুরে তার বাসভবন 'পল্লী নিবাস'-এর বৈঠকখানায় এরশাদ সাংবাদিকদের আরও বলেন, দলীয় প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে জাতীয় সংসদে আসন বণ্টন করে সরকার গঠনের জন্য আমি নির্বাচন নিয়ে দুই দলকে যে ফর্মুলা দিয়েছি তা মেনে নিয়ে নির্বাচন করলে সংঘাত এড়ানো সম্ভব। তা না হলে বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে গেলে সংঘাত অনিবার্য। ২৫ অক্টোবরের পর দেশ কোনদিকে যাবে তা নিয়ে নানা সংশয় দেখা দিয়েছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন অথর্ব।

তার অধীনে কখনো নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করা সম্ভব নয়। গ্রামীণ ব্যাংকের মতো একটি সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠান সরকার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায় এবং তাই করার আয়োজন চলছে। জাতীয় পার্টিকে নানাভাবে সংকটে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে। তবে কোনো লাভ হবে না। জাতীয় পার্টি জনগণের পার্টি।

এই পার্টিই পারে দেশকে বর্তমান সংঘাতময় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এককভাবে নির্বাচনের জন্য জাতীয় পার্টি মহাজোট থেকে বেরিয়ে আসবে। তা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

এরশাদ সাহেবের ভোটের দুর্গ রংপুরে এর আগে মহাজোটের বড় শরিক শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এরশাদপন্থিদেরই অনেককে ভাগিয়ে নিয়ে জাতীয় পার্টির অবস্থানকে কিছুটা নড়বড়ে করে দিয়েছিল। সম্প্রতি ১৮-দলীয় বিরোধী জোটনেত্রী খালেদা জিয়া রংপুরে বিশাল মহাসমাবেশ করে এরশাদ দুর্গকে কাঁপিয়ে দিয়ে বলে গেছেন_ নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনাকে মানার প্রশ্নই ওঠে না, মানা হবে না।

দুর্গ মেরামত করতে দুই দিনের রংপুর সফরে এসে ঘরে বসে, তথা প্রবাসী কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী প্রণীত বিশেষণ 'ঘরবইঠা' হয়ে ২৫ অক্টোবর-পরবর্তী বেহাল রাজনৈতিক নৌকার পাল ছেঁড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করলেন সাবেক জাঁদরেল সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। প্রবাসী কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীও প্রশ্ন তুলেছেন, 'আমরা কি একটি অক্টোবর বিপ্লবের অপেক্ষায় আছি?' সেই অক্টোবর বিপ্লবের সামনের কাতারে তার ক্ষুরধার লেখনীর স্কেপগোট বা বলির পাঁঠা হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন আরেক সাবেক সেনাপ্রধান লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমানকে, যিনি তত্ত্বাবধায়ক আমলে নিযুক্ত হয়ে শেখ হাসিনার আমলেও সেনাপ্রধান হিসেবে বহাল থেকে তার মেয়াদ শেষ করে পরবর্তী সময়ে খালেদা জিয়ার বিএনপিতে যোগ দিয়ে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। এখন তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর বাক্যবাণের টার্গেট হয়েছেন।

২৫ অক্টোবরের পর এই অক্টোবর বা নভেম্বর বিপ্লবের আশঙ্কা কেন? বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদভাষ্যে তার আলামত যেভাবে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচিত হয়ে আসছে তার বিক্ষিপ্ত নমুনা সংকলিত করে নিম্নোক্ত চিত্র পাওয়া যায় : ২৪ অক্টোবরের পর রাজনীতির ভাগ্যাকাশে ঠিক কী ঘটবে তা নিয়ে জনমনে ভর করেছে চরম অনিশ্চয়তা। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তীব্র আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

২৪ অক্টোবরের পর প্রথম সাত দিনের কর্মসূচিতে রাজধানী ঢাকা বিচ্ছিন্ন করে ফেলার পাশাপাশি পুরো দেশ অচল করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে দলটি। ঢাকামুখী লঞ্চ, বাস, ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলার কৌশল নিয়েও নানামুখী তৎপরতা চলছে। এদিকে বসে নেই সরকারও। পঞ্চদশ সংশোধনী মোতাবেক সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানে তারাও সংকল্পবদ্ধ। বিএনপি ছাড়াই নির্বাচন করার পথে এগোবে তারা।

আন্দোলনের মাঠে বিএনপিকে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে দমন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ঢাকায় বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ইতোমধ্যে পুলিশি জালের ভেতরে নিয়ে আসা হয়েছে।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বলেছেন, ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বর্তমান সরকার থাকবে। এ সময় পর্যন্ত বর্তমান সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের কাজ করতে হবে। যারা সরকারের নির্দেশনা মানবে না, তাদের কপালে দুঃখ আছে।

সরকার যে করেই হোক শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে এগোবে। প্রশাসনিক শক্তির পাশাপাশি ২৪ অক্টোবরের আগেই মাঠে নামানো হচ্ছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তি, যারা দেশজুড়ে পুলিশের সহায়ক শক্তি হিসেবে মাঠে থাকবে। এর বিপরীতে জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন শেষ হওয়ার পরদিন ঢাকা অবরোধের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অবরোধের পরিকল্পনা রয়েছে ১৮-দলীয় জোটের। তাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতাসহ সহস্রাধিক নেতার কর্মকাণ্ড। তারা কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন বা কার কার সঙ্গে মিটিং করছেন তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

জামায়াত-শিবিরের প্রথম সারি, দ্বিতীয় সারি এমনকি তৃতীয় সারির পরিচিত নেতারা প্রায় সবাই আটক। তবে কিছু নেতা ও পাতিনেতার হদিস পাচ্ছে না পুলিশ প্রশাসন। হেফাজতের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর পলাতক নেতাদের ধরতে সরকার কঠোর নির্দেশ দিয়েছে। জামায়াত-শিবিরের দুর্ধর্ষ সদস্যদের একটি তালিকাও তৈরি করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।

এদিকে পঞ্চদশ সংশোধনী মোতাবেক ২৪ অক্টোবর বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে ২৫ অক্টোবর শেখ হাসিনার অধীনেই সংক্ষিপ্ত মন্ত্রিসভা গঠন করতে যাচ্ছে সরকার।

আর ওই সরকারের অধীনেই নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত তাদের। নির্বাচনে বিরোধী দল না এলেও একক নির্বাচনের পথে হাঁটার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত সরকারের। বিরোধী দল দেশ অচলের চেষ্টা করলে দল ও প্রশাসন সম্মিলিত শক্তি দিয়ে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। অন্যদিকে বিএনপি নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায়ে ২৪ অক্টোবরের পর সারা দেশকে অন্তত ৪০ ভাগে ভাগ করে ওই সব স্থানে অবরোধ সৃষ্টি করবে। সারা দেশ থেকে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে চলবে সড়ক, রেল ও জলপথ অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি।

পাশাপাশি একই সময়ে রাজধানীতে টানা অবরোধ অবস্থান চালিয়ে যাওয়া হবে। এ লক্ষ্যে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া বিভাগীয় মহাসমাবেশ করে ১৮-দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করছেন। ৫ অক্টোবর তিনি সিলেটে ১৮-দলীয় জোটের বিশাল মহাসমাবেশে একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করতে সারা দেশে কেন্দ্রভিত্তিক সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। বলেছেন, সারা দেশে অনেক নির্বাচনী কেন্দ্র। একক নির্বাচন প্রতিহত করতে দল থেকে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হবে।

আমি আপনাদের নির্দেশ দিচ্ছি, এখন থেকেই সংগ্রাম কমিটি গঠন করুন।

বিএনপি শীর্ষ নেতাদের বরাত দিয়ে সন্ধানী সংবাদদাতারা আরও লিখেছেন : একতরফা নির্বাচন ঠেকানোর জন্য সরকারি দলের প্রতিটি উদ্যোগ ও পদক্ষেপের সময় ধাপে ধাপে কর্মসূচি দেবে বিএনপি। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন সারা দেশে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও এবং একইসঙ্গে ঢাকায় নির্বাচন কমিশন অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হবে। এ ছাড়া চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষিত হওয়ার পর পর্যায়ক্রমে লাগাতার ঘেরাও ও অবরোধ এবং সবশেষে দেওয়া হবে লাগাতার হরতাল কর্মসূচি। তফসিল ঘোষণার আগেই ঈদের পর বরিশাল ও চট্টগ্রামে জনসভা এবং ঢাকায় ব্যাপক লোক সমাগমের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থান পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে।

তবে সরকার যাতে কেবল ঢাকায় মনোযোগ দিয়ে স্বস্তিতে না থাকতে পারে এ জন্য সারা দেশের জেলা ও বিভাগীয় শহরেও অবস্থান কর্মসূচি থাকবে। ঈদের পর ২২ অক্টোবর বরিশালে এবং তার পরপরই চট্টগ্রামে জনসভা করবেন খালেদা জিয়া। ২৫ অক্টোবরের পরে সবশেষ জনসভাটি অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায় ব্যাপকতম জনসমাগম ঘটিয়ে। ১৮-দলীয় জোটের দ্বিতীয় প্রধান শরিক জামায়াত ছাড়াও দলের বড় একটি অংশ বেশ কয়েক মাস আগেই সর্বাত্দক আন্দোলনে যাওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন। বিশেষ করে হেফাজতের ওপর ক্র্যাকডাউনের পর এ নিয়ে নানা মহল থেকে চাপ ছিল।

কিন্তু উদারপন্থি অংশটি খালেদা জিয়াকে তাদের যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে, তা ঠেকিয়ে রেখেছেন। মেয়াদ শেষের আন্দোলনে বিএনপি আর তাড়াহুড়া করতে রাজি নয়। জনমত তাদের পক্ষে। তাই আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে বেশি সময় লাগে না।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একতরফা নির্বাচনী প্রচারে নেমে গেছেন।

বিলবোর্ড-রাজনীতি দিয়ে তার সমাপ্ত উন্নয়ন কাজের ফিরিস্তি প্রচার শুরু করেছেন রমজানের ঈদের আগে থেকেই। অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজের জন্য আবারও তাকে ভোট দিয়ে ক্ষমতাসীন করার ডাক দিয়ে তিনি সভা-সমাবেশ করে বলে চলেছেন, বিএনপি নেত্রী যে মিথ্যাবাদী তা মসজিদে গেলে মুসলমানরা বুঝতে পারবেন। কেননা তিনি বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে মসজিদে আজান হবে না, মোনাজাত হবে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। এখন মসজিদে আজান হয়, প্রার্থনা হয়।

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত শত শত কোরআন শরিফ পুড়িয়েছে। কাজেই ওরাই ইসলামের শত্রু, দেশের শত্রু। বিএনপি ও তাদের জোট আবার ক্ষমতায় এলে দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির জন্য নেওয়া বর্তমান সরকারের অনেক উন্নয়ন ও জনকল্যাণমূলক প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে। তাই দেশের উন্নয়ন, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটকে আবার ভোট দিতে হবে। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে খুন, হত্যা, ধর্ষণ ছিল নিত্যনৈমিত্তিক।

ওই সময়ে দুই শতাধিক খ্রিস্টান পরিবারের ওপর অত্যাচার করা হয়। বহু আওয়ামী লীগ কর্মীর ওপর নির্মম নির্যাতনসহ তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এখন মানুষ শান্তিতে থাকে। দরিদ্রদের খাদ্য-বস্ত্রের সংস্থান করা হচ্ছে। ঘরহারা মানুষকে ঘর দেওয়া হচ্ছে।

আমরা বেকার সমস্যা দূর করেছি। ২৬ হাজার ২০০ স্কুল সরকারিকরণ করেছি। পুনর্নির্বাচিত হলে দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজকে সরকারিকরণ করা হবে। আওয়ামী লীগ উন্নয়নের রাজনীতি করে আর বিএনপি ও তার জামায়াতি দোসররা হত্যা, সন্ত্রাস আর লুটপাটের রাজনীতি করে। কাজেই দেশের উন্নয়ন চাইলে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন।

একইসঙ্গে কড়া নোটিস জারি করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তখন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের ক্যাবিনেট থাকবে। তারা সরকার পরিচালনা করবেন। আর নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন।

২৪ অক্টোবর (সংসদ অবসরে গেলেও সমস্যা নেই) কিছু হবে না। বিএনপি উচ্ছৃঙ্খলতা সৃষ্টির চেষ্টা করলে দেশের জনগণ ও আওয়ামী লীগ মিলে খালেদা জিয়াকে আনলোড করে দেওয়া হবে (দেশের রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে)। অতীতেও আমরা তাদের বড় বড় আলটিমেটাম, আস্ফালন দেখেছি। মিসরে গণতন্ত্র রক্ষার নামে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। খালেদা জিয়া দেশে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চান।

এ জন্য তিনি জনগণের ওপর আস্থা হারিয়ে এখন সেনাবাহিনী, পুলিশ-বিজিবিকে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।

লন্ডন থেকে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীও টিপ্পনী কেটেছেন, জামায়াত আর হেফাজতকে নিয়ে 'অক্টোবর বিপ্লব' দূরে থাক, বিএনপি আম ও ছালা দুই-ই হারাতে চলেছে। তবে তিনি এটুকু স্বীকার করেছেন যে, দেশের সাধারণ মানুষ দুই দলের জেদাজেদির ব্যাপারে বিরক্ত। তারা চায় দেশে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন। অক্টোবর বিপ্লবের হুমকি সেই নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করবে না।

তবে কি দেশের রাজনীতি আরেকটা জরুরি অবস্থার সরকারের দিকেই ধাবিত হচ্ছে? এরশাদের বক্তব্যের সেটাই ইঙ্গিত বলে মনে করছেন কোনো কোনো সংবাদভাষ্যকার। তার প্রদত্ত ফর্মুলাও নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নয়, জরুরি অবস্থার সরকার গঠনের ফর্মুলা বলে মনে করছেন ওই ভাষ্যকাররা। কারণ বিগত নির্বাচনে কোন দল কত ভোট পেয়েছে সেটা গণনা করে একটা 'সর্বদলীয় সরকার' গঠন করলে জরুরি অবস্থার সামরিক বর্মের মুখোশ হিসেবে মহাজোটেরই প্রাধান্য থাকবে, বিএনপির পক্ষেও সম্মানজনক প্রতিনিধিত্ব পেয়ে অখুশি হওয়ার কারণ থাকবে না। সাপও মরবে, লাঠিও ভাঙবে না। কিন্তু পঞ্চদশ সংশোধনী বলে রাষ্ট্রক্ষমতায় পরবর্তী 'নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী' না আসা পর্যন্ত বহাল শেখ হাসিনার কি এমন ধর্মের কাহিনী শোনার মর্জি হবে?

লেখক : বিশিষ্ট সাংবাদিক।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.