আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হরতালে বিপর্যস্ত খাতুনগঞ্জের বাণিজ্য

১৮-দলীয় জোটের টানা তিন দিনের হরতালে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশের বৃহৎ পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ। গত দুই দিনে খাতুনগঞ্জ থেকে জেলা-উপজেলাগুলোয় পণ্য পরিবহন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাজারে দিনে কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকার লেনদেন কমেছে। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার দ্রুত সমাধান না হলে অর্থনীতির বড় ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন প্রাচীন এই বাজারের ব্যবসায়ীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, টানা তিন দিনের হরতালের দ্বিতীয় দিন দেশের ঐতিহ্যবাহী খাতুনগঞ্জ, আসাদগঞ্জ ও চাক্তাইয়ের বেশির ভাগ আড়ত ও দোকানপাট ছিল বন্ধ। কিছু কিছু খোলা থাকলেও সেসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার দেখা মেলেনি। পাইকারি মশলা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হারুন জানান, প্রতিদিন গড়ে ৬-৭ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয় তার দোকানে। তবে টানা তিন দিনের হরতালের প্রথম দিনে বিক্রি হয়েছে ১০ হাজার টাকার মতো। আর গতকাল বিকাল পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে মাত্র ৩ হাজার টাকা। এই ব্যবসায়ী বলেন, আগের হরতালে দূরপাল্লার ক্রেতারা না এলেও অন্তত কাছের জেলা-উপজেলা থেকে ক্রেতারা বাজারে আসতেন। কিন্তু গত দুই দিনে ক্রেতা নেই বললেও চলে। দিনে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার ডাল-জাতীয় পণ্য বিক্রি করেন খাতুনগঞ্জের ডাল ব্যবসায়ী রতন মহাজন। তবে দুই দিনের হরতালের প্রথম দিন মাত্র ১ লাখ ও দ্বিতীয় দিনে ৬০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। খাতুনগঞ্জ, আসাদগঞ্জ ও চাক্তাইয়ের সড়কগুলোয় খোলার দিনগুলোতে ট্রাক, পিকআপ, ভ্যান ও রিকশায় মাল ওঠানো-নামানোর জন্য রাস্তায় জট লেগে থাকলেও গত দুই দিন ছিল ফাঁকা। খাতুনগঞ্জের কাঁচা পণ্যের (পিয়াজ, রসুন ও আদা) ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, হরতালের নামে পথে পথে চলছে ককটেল-বোমা বিস্ফোরণ, ভাঙচুর-অগি্নসংযোগ আর গ্রেফতার। একসময় হরতালে কিছু হলেও বেচা-কেনা হতো। কিন্তু গত দুই দিনে বেচা-কেনা ছিল ১০ শতাংশেরও নিচে। এর মধ্যে রবিবার কিছুটা বেচা-কেনা হয়েছে। তবে রবিবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে মালামাল নিয়ে কঙ্বাজার যাওয়ার পথে সাতকানিয়ায় পিকেটারদের ঢিলে এক ট্রাকচালক নিহত হওয়ার পর থেকে পণ্য পরিবহন একদম বন্ধ হয়ে গেছে। রাতেও ঝুঁকি নিয়ে পণ্য পরিবহনে রাজি হচ্ছেন না চালকরা। বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা ভয়ে বাজারে আসছেন না।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জামাল হোসেন বলেন, 'খাতুনগঞ্জে (চাক্তাই-আসাদগঞ্জ-খাতুনগঞ্জ) প্রতিদিন ৮০০ থেকে ১০০০ কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়। হরতালের দিন নিয়মিত লেনদেনের ২০ শতাংশেরও কম হয়। হরতালে গড়ে বাজারটিতে কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকার লেনদেন কম হচ্ছে। একের পর এক হরতাল-অবরোধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী খাতুনগঞ্জ। এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসায়ীদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। জানা গেছে, দেশের অন্যতম বড় এই পাইকারি বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। বন্দর ও বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন প্রায় আড়াই শ ট্রাক চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে আসে ভোগ্যপণ্য নিয়ে। আবার বিক্রি করা পণ্য পরিবহনের জন্য প্রতিদিন ট্রাক ও ঠেলাগাড়ি ঢোকে আরও কমপক্ষে তিন শ। এর মধ্যে হরতালে মাত্র ২০ শতাংশ দোকান খোলা থাকে।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.