আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবেগের বৈজ্ঞানিক ব্যবচ্ছেদ

আমাদের জীবন-যাপনের মূলে রয়েছে আবেগের বড় ধরনের প্রভাব। কথাবার্তায় ঠাসা থাকে আবেগের বিভিন্ন রূপ, বিভিন্ন উপাদান। আমরা কান্নায় ভেঙে পড়ি, ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হই, ঈর্ষায় ডুবে যাই, ঘৃণায় কুঁকড়ে থাকি অথবা উল্লাসে ফেটে পড়ি। এভাবে আবেগ বা ইমোশন আমাদের অভিজ্ঞতা, আমাদের ভালোলাগা-মন্দলাগা, আনন্দ-বেদনাকে নানা আঙ্গিক থেকে রঞ্জিত করে। আবেগহীন কাজ, আচরণ মানুষকে মানায় না।

রোবটই আবেগ ছাড়া সব কাজ করতে পারে। রোবটের সাহায্যে অনেক কাজ করানো গেলেও আবেগীয় উপাদানকে কর্মোদ্দীপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে বিজ্ঞানীরা এখনো ব্যর্থ বলা চলে। এ কারণেই বিভিন্ন গবেষণায় ইমোশনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। ইমোশন ও মোটিভেশন পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত।

প্রথমে ইমোশন সৃষ্টি হয়, পরে এর সঙ্গে যুক্ত হয় নিয়ন্ত্রিত আচরণ।

মোটিভেশনের ভেতর আছে চাহিদা আগ্রহ উৎসাহ। এ অনুষঙ্গগুলো মানুষকে লক্ষ্যের দিকে ধাবিত করে। ইমোশন একটি ইংরেজি শব্দ। বিজ্ঞানের ভাষায়ও শব্দটি ব্যবহৃত হয়। ইমোশনের বাংলা অর্থ আবেগ।

আক্ষরিক অর্থে আবেগ হলো, মানুষের আলোড়িত অবস্থা। মনের বৈজ্ঞানিক ব্যবচ্ছেদের মাধ্যমে জানা যায়, আবেগের রয়েছে তিনটি অংশ- ১. প্রথম বলা হয়েছে, বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ব্যক্তিগত অনুভূতির কথা- যেমন আনন্দ, রাগ, দুঃখ, ভালোবাসা ইত্যাদি। ২. শারীরবৃত্তীয় বিশেষ আলোড়িত অবস্থা- যেমন দৈহিক পরিবর্তনের মধ্যে আছে হৃদস্পন্দন দ্রুত হওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাস বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। ৩. দেহভঙ্গিমা কিংবা মুখের পেশীয় সংকোচন প্রসারণের মাধ্যমে বিশেষ অভিব্যক্তির বহিঃপ্রকাশও ইমোশনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব।

আবেগের প্রকারভেদ : নানা ধরনের আবেগ রয়েছে।

ইমোশন প্রকাশের তীব্রতার মাঝেও রয়েছে পার্থক্য। এ কারণেই ইমোশনের শ্রেণীবিন্যাস করা দুরুহ কাজ। বিজ্ঞানীদের মাঝে মতভেদ থাকা সত্ত্বেও নিম্নের শ্রেণীবিন্যাসটি গ্রহণ করা হয়েছে-

* ইতিবাচক বনাম নেতিবাচক ইমোশন : ইতিবাচক বা পজেটিভ ইমোশনের উদাহরণ, যেমন- ভালোবাসা, আনন্দ, সুখ ইত্যাদি। ইতিবাচক আবেগ মানুষের ভালো থাকার ইন্ধন জোগায়, অন্যের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করে। আর নেতিবাচক ইমোশনের কারণে ভালো থাকার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়।

অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক জটিলতর হতে থাকে।

*প্রাথমিক বনাম মিশ্র আবেগ : প্রাথমিক আবেগের মৌলিক দিকগুলো ফুটিয়ে তোলে। দুই বা ততধিক প্রাথমিক ইমোশনের যৌথ মিলনের ফলে মিশ্র আবেগের সৃষ্টি হয়। প্রাথমিক আবেগগুলো হচ্ছে- ভালোবাসা, সুখ, দু:খ, রাগ, বিস্ময়, ভয়, ঘৃণা, লজ্জা ইত্যাদি। পক্ষান্তরে মিশ্র আবেগ হলো জেলাসি।

*বিপরীতধর্মী আবেগ : এ গ্রুপে আছে বিপরীতমুখী আবেগের বর্ণনা। আনন্দের উল্টো পিঠে রয়েছে দুঃখ। ভালোবাসার উল্টো পিঠে রয়েছে ঘৃণা। প্রকৃতপক্ষে একই সঙ্গে দুটি অপজিট ইমোশন অনুভব করা যায় না।

*আবেগের বহিঃপ্রকাশ ও অভিব্যক্তি : মুখ ফুটে অনেক কিছুই বলার প্রয়োজন হয় না।

দেহভঙ্গিমার মাধ্যমে অনেক সময় মানুষের মনের খবর প্রকাশ

হয়ে যায়। এটিকে বলে 'বডি ল্যাঙ্গুয়েজ'।

মুখাবয়বের অভিব্যক্তির ভাষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জাহির করে দেয়। বড় বড় চোখে তাকিয়ে আমরা

ভয়ার্ত আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটাই। এ কাজেও জড়িত রয়েছে কিছু পেশির ভূমিকা।

মুখের মাঝে যে বিরক্তি ও হতাশা ভেসে ওঠে, সবই পেশির সংকোচনের সঙ্গে সম্পর্কিত। মুখের নির্দিষ্ট পেশীর সঙ্গে নির্দিষ্ট আবেগ সম্পৃক্ত রয়েছে।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।