আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাস্তায় মানুষ মরছে, উনারা জনসেবা করছেন!

আমি আজ পর্যন্ত কোনো বিরোধী দলের নেত্রীর মুখে শুনিনি যে, হরতালে ওই বাসটা পোড়ানো বা ওই লোকটা মারা যাওয়ার জন্য আমি দুঃখিত। এটা দুই নেত্রীকে উদ্দেশ্য করেই বলছি। আপনাদের আন্দোলনে নিরীহ মানুষ প্রাণ দিচ্ছে। পত্রিকায় খবর এসেছে ককটেল বিস্ফোরণে ১৪ বছরের একটা মেয়ের দুটি চোখই অন্ধ হয়ে গেছে। তাদের মনে কি কোনো দাগ কাটে? অথচ, তারা যে যখন বিরোধী দলে থাকেন বলতে থাকেন, 'জনগণের জন্য আমি একদম প্রাণ দিয়ে দিচ্ছি'।

আমার দেশের সম্পদ পুড়ছে। আমার ইন্ডাস্ট্রিগুলো থেমে যাচ্ছে। রাস্তাঘাটে মানুষ মারা যাচ্ছে। তারপরও তারা জনসেবায় নিয়োজিত! এই জনসেবা বন্ধ করুন। গত বুধবার বাংলাভিশনের টকশো 'ফ্রন্ট লাইন'-এ ইংরেজি দৈনিক 'দ্য ডেইলি স্টার'-এর সম্পাদক মাহফুজ আনাম এ কথা বলেন।

মতিউর রহমান চৌধুরীর উপস্থাপনায় তিনি বলেন, আমাদের প্রচলিত একটা স্লোগান হচ্ছে- 'জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো। ' কোথায় আগুন জ্বালাবা তুমি? কার বাড়িতে আগুন জ্বালাবা? এটা তোমার দেশ না? কার বাস তুমি পোড়াও? এর জন্য তুমি ট্যাঙ্ দিচ্ছ না? জনগণের সম্পত্তি পুড়িয়ে দিচ্ছ! সংলাপ ব্যর্থ হয়ে যদি তারা ঘরে ফিরে যেত তাহলে সমস্যা ছিল না। কিন্তু দুই দল আলোচনায় যাচ্ছে না যেন সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বেগম জিয়া ঘোষণা করেছেন তিনি নির্বাচন হতে দেবেন না। সংঘাত চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে।

আগে হরতাল হতো শহরকেন্দ্রিক। এখন তা গ্রামে এমন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে পুলিশও যেতে পারে না। এভাবে কতদিন? দুই নেত্রীরই দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা। তারা কি বোঝেন না সমঝোতার অভাবে দেশ কোথায় যাচ্ছে? সবাই খালি 'আমি হতে দেব না', 'মানব না', 'যে কোনো মূল্যে করবই'- এসব শব্দের মধ্যে আটকে আছেন।

ডেইলি স্টার সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা ২৮ তারিখে গণভবনে বিরোধী দলকে দাওয়াত দিয়েছিলেন।

খালেদা জিয়া বলেছিলেন ৩০ তারিখ যেতে রাজি আছেন। ৩০ তারিখ পার হয়ে গেল। আমার মনে হয় যেহেতু প্রধানমন্ত্রী ফোন করেছিলেন, বিরোধী দলের নেত্রীর উচিত সামনে ১, ২ বা ৩ বা এমন একটা 'সেট অব ডেট' প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে দেওয়া। নিজে ফোন করতে না চাইলে মহাসচিব বা অন্য কাউকে দিয়েও জানিয়ে দিতে পারেন।

মাহফুজ আনাম বলেন, '৯১ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনে দেখেছি যারা হেরে যায় তারা কমপক্ষে ৩০ শতাংশ ভোট পায়।

হারলেও তারা ৩০ ভাগ ভোটারের আস্থাভাজন থাকে। তাই দুই পার্টি একে-অন্যকে যতই ঘৃণা করুক, তারা একে-অন্যকে বিলীন করে দেবে এমন কল্পজগতে বাস করার অবকাশ নেই। আট কোটি ভোটারের ৩০ ভাগ নেহাত কম নয়। আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখে এ দেশে তত্ত্বাবধায়ক এসেছে। তখন তারা মনে করেছিল তত্ত্বাবধায়ক খুবই প্রয়োজনীয়।

এখন মনে করছে প্রয়োজনীয় নয়। অন্যরা কী ভাবছে তাও তো দেখতে হবে। যতোই সুষ্ঠ নির্বাচন দেই না কেন প্রধান বিরোধী দলের যদি ওই প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা না থাকে তাহলে প্রক্রিয়া সংশোধন করতেই হবে। নির্বাচন আস্থার বিষয়। তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচনগুলো কিছুটা ত্রুটিপূর্ণ হলেও বেশিরভাগ মানুষের আস্থা অর্জন করেছে।

আমার মনে হয় সরকার যে সর্বদলীয় সরকারের কথা বলছে তাতেও বিএনপি রাজি হবে যদি ওই সরকারের প্রধানের বিষয়টা মিমাংসা হয়। শেখ হাসিনাতো বলেছেন তিনি সর্বোচ্চ ত্যাগ করার জন্য প্রস্তুত। সর্বোচ্চ ত্যাগ যদি হয় প্রধানমন্ত্রিত্ব তাহলে শেখ হাসিনার যে বিরাট রাজনৈতিক ঐতিহ্য তাতে উনি দেশের কল্যানের কথা চিন্তুা করে এ জায়গাটায়ও সমঝোতায় আসতে পারেন।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.