আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৯৭১ নয়, ২০১৩ কাশ্মীর নয়, বাংলাদেশ

নিরপেক্ষ বলে এই পৃথিবীতে কোন মানুষ নেই কিন্তু কিছু লোক নিরপেক্ষতার ভান ধরে। :-বাংলার তৌহিদ

দৈনিক শুকতারা ভবনে পৌছেই সম্পাদক শামীম তার রুমে ডেকে পাঠালো নিউজ এডিটর মেরি, চিফ রিপোর্টার ফয়েজ এবং অ্যাসিসট্যান্ট এডিটর শরিফকে। ওদের সবাইকে চিন্তাচ্ছন্ন দেখাচ্ছিল। কি হয়েছে? তোমরা এত ডিপ্রেসড কেন? ডুমস ডে কি খুব কাছেই? রোজ কেয়ামত কি ঘনিয়ে এল? শামীম তার স্বভাবসুলভ রসিকতায় জানতে চাইল সহকর্মীদের বিমর্ষ হবার কারণ। সহকর্মীরা কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর ফয়েজ বলা শুরু করল।

পরপর দুই সপ্তাহে দেশ জুড়ে দুটি টানা ষাট ঘণ্টার হরতাল হয়ে গেল। রোববার ২৭ অক্টোবর সকাল থেকে মঙ্গলবার ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রথমটি। তারপর সোমবার ৪ নভেম্বর সকাল থেকে বুধবার ৬ নভেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত দ্বিতীয়টি। রাজপথের শক্তি পরীক্ষায় আওয়ামী লীগ সরকার এবং আওয়ামী লীগ যে পিছু হটেছে সেটা স্পষ্ট। হরতালকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশি জুলুমের মাত্রা কিছুটা হলেও কমেছে।

কিছু উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার গোপনে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন। কিছু পুলিশ অফিসারের টিভি উপস্থিতি কমে গিয়েছে। রাজধানীর বাইরে প্রায় প্রতিটি শহরে পুলিশ দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু এই দুটি টানা ষাট ঘণ্টার হরতাল আওয়ামী লীগের জন্য দুটি বিপদ সংকেত হলেও বিএনপির সব মহলে সন্তোষ বিরাজ করে নি। মফস্বলে বিএনপির নেতাÑকর্মীরা তাদের জীবনের ঝুকি নিয়ে হরতাল অভূতপূর্বভাবে সফল করলেও তারা কিছুটা হতাশ হয়েছে দ্বিতীয় ষাট ঘণ্টার হরতালে ঢাকায় বিএনপি নেতাদের নিষ্ক্রিয়তা দেখে।

সোমবার ৪ নভেম্বরে ঢাকায় মোটামুটিভাবে জোরালো হরতাল হলেও মঙ্গলবারে ঢাকায় সেটা শিথিল হয়ে যায়। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ও রাতে বিএনপি কর্মীরা আবার সক্রিয় হয়ে ওঠার পরে বুধবার ঢাকায় ৬ নভেম্বরে হরতাল কিছুটা চাঙ্গা হয়ে ওঠে। বিএনপির কর্মীÑসমর্থকরা এখন চিন্তায় আছে যে পরবর্তী হরতাল, সেটা ২৪ ঘণ্টারই হোক বা ৬০ ঘণ্টারই হোক, কতখানি সফল হবে? আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির এই দ্বন্দ্বের মাঝখানে বিপদে পড়েছে পাবলিক বা দেশ জুড়ে সাধারণ মানুষ। তারা জানে না এই বিপদ থেকে কবে উদ্ধার পাবে। সাধারণ মানুষ সাধারণ চিন্তায় মনে করেছিল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক, সকল সূচকই যখন পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয় নির্দেশক, তখন আওয়ামী লীগ সরকার এসব রায় বিবেচনা করে বিরোধী দলীয় জোটের দাবি মেনে নিয়ে একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেবে।

অতিরিক্ত আশাবাদীরা মনে করেছিলেন নাটকপ্রিয় আওয়ামী নেত্রী শেখ হাসিনা হয়তো ২৬ অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার টেলি সংলাপের এক পর্যায়ে আচমকা ঘোষণা দেবেন তিনি সর্বদলীয় সরকার নয় - নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নিয়ে অচিরেই প্রধানমন্ত্রীর পদটি ছেড়ে দেবেন। সেটা শেখ হাসিনা বলেন নি। তারপর দিন থেকে শুরু হয়ে যায় টানা ষাট ঘণ্টার হরতাল। জনজীবনে প্রচণ্ড অসুবিধা সৃষ্টি হলেও মানুষ বুঝতে পারে ওই টেলি সংলাপে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের কোনো আগ্রহ ছিল না হাসিনার। জনগণ বোঝে, আসন্ন হরতাল বন্ধ করার লক্ষ্যে তিনি ফোনালাপ করেছিলেন এবং সেটা করতে গিয়ে তিনি গণভবনে সমবেত টিভি ক্যামেরার সামনে একাধিক মিথ্যা কথা বলেছেন।

শুধু তাই নয়, ওই নিষ্ফল সংলাপের পর হাসিনা বিভিন্ন জনসভায় আবার খালেদা ও তার পরিবারের প্রতি মিথ্যা এবং অশালীন, হিংসাত্মক এবং অভদ্র ভাষায় একের পর এক ভাষণ দিতে থাকেন। সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে এই আচরণের ফলে সমঝোতার পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হাসিনা প্রধানমন্ত্রীত্ব আকড়ে ধরে রাখবেনই। সুতরাং, বিএনপির পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আরো কোনো পথ খোলা থাকছে না। উদ্বিগ্ন মানুষের মনে প্রশ্ন এসেছে আগামী দিনগুলোতে হরতাল কি তাহলে প্রতি সপ্তাহে টানা ষাট ঘণ্টারই হবে? অথবা টানা তিন দিনের বদলে চারদিন? পাচ দিন? ছয় দিন? সেক্ষেত্রে মানুষের দৈনন্দিন জীবন চলবে কি করে? হরতালের পর আসতে পারে অবরোধ এবং রাজধানীকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা।

তখন কি হবে? ইতিমধ্যে ছাত্রÑছাত্রীদের বিভিন্ন পরীক্ষা ব্যাহত হয়েছে, নির্ধারিত দিনের বদলে অন্য দিনে তাদের পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। সমষ্টিগতভাবে এ রকম সমস্যার সমাধান করা গেলেও ব্যক্তিগতভাবে বহু সমস্যার সমাধান হয় না হরতালে। এয়ারপোর্ট, বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল, হসপিটাল, ডাক্তারের চেমবার, ফার্মাসি প্রভৃতিতে যাতায়াত, বিদেশের ভিসা সংগ্রহ, চাকরির ইন্টারভিউ, বিয়েÑবৌভাতের আয়োজন, আরো কতো কিছু কতো সমস্যার মধ্যে পড়ে যায় হরতালের কারণে। মানুষ তখন রাজনৈতিক দলগুলোকে ভাবে জনশত্রু। কিন্তু তারপরেও মানুষ সীমিত সংখ্যক দিনে, সীমিত ঘণ্টার হরতাল মেনে নেয়, দেশের স্বার্থে, জনস্বার্থেই।

যেমনটা মানুষ মেনে নিয়েছিল ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত চার বছরে আওয়ামী শাসন আমলে বিএনপি আহূত মোট উনিশ দিনের হরতাল। মানুষ মনে করেছিল সেই সংখ্যা ছিল যৌক্তিক এবং তাদের কাছে সহনীয়। কিন্তু টানা ষাট ঘণ্টার পর পর দুটি হরতাল অনেক মানুষের কাছেই অসহনীয় মনে হয়েছে এবং তারা উদ্বিগ্ন হয়ে ভাবতে বাধ্য হয়েছে এরপর বিরোধীদলের কি কর্মসূচি আসবে? সেই কঠোর কর্মসূচির জন্য দায়ী কে? প্রধানমন্ত্রীর পদে হাসিনার ২০২১ সাল পর্যন্ত থাকার অদম্য বাসনা? নাকি ২০০৪ থেকে দেশে সর্বিক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে খালেদার দৃঢ় সংকল্প? কে দায়ী? কে বেশি দায়ী? এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খেয়ে গেছে সাধারণ মানুষের মনে। তারা ভেবেছে হাসিনাÑখালেদার সংলাপ তো শেষ। হাসিনা বলেছেন সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করবেন তিনি।

অর্থাৎ, তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদটি ছাড়বেন না। খালেদা বলেছেন নির্দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। অর্থাৎ, আন্দোলনের পথ থেকে তিনি সরে আসবেন না। এই দুই নেত্রীর মধ্যে আর কোনো আলোচনায় কি লাভ হবে? তারা দুজন যা বলার তাতো বলেই দিয়েছেন। এখন? এখন কি হবে? আওয়ামী লীগ তার সাজানো নির্বাচন করে ফেলবে? বিএনপি ও তার সহযাত্রীরা সেই নিবাচনে যে বাধা দেবে? সারা দেশে অরাজকতা, বিশৃংখলা ও অনিশ্চয়তা চলতে থাকবে।

গুলিতে নিহত, হত্যা, ইনজুরি, গাড়ি ও বাস ভাংচুর ও আগুন লাগানো, টিয়ার গ্যাস, জলকামান, লাঠিপেটা, রেল লাইন উপড়ে ফেলা, গাছ কেটে আন্তঃজেলা পথ বন্ধ হওয়া, থানা ঘেরাও, দোকানপাট বন্ধ Ñ এ সবই চলতে থাকবে। এর মধ্য থেকে দেশ কিভাবে বেরিয়ে আসবে? কিভাবে সংকটের সমাধান হবে? আমার রিপোর্টাররা বলছে এটাই এই মুহূর্তের প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর আমরা কেউ দিতে পারছি না। আর সেজন্যই আমরা সবাই বিমর্ষ, মীম ভাই। আপনার ভাষায় ডিপ্রেসড।

ফয়েজ বলল। আর কিছু? শামীমের মুখে হাসি চলে গিয়েছিল। গম্ভীরভাবে সব শুনে প্রশ্ন করল। যারা আওয়ামী লীগপন্থী, তাদের কেউ কেউ বলছেন, পচাত্তরে শেখ মুজিব নিহত হবার পরে দেশ এত বড় সংকটে আর পড়েনি। শরিফ বলল।

আর যারা আওয়ামী লীগ পন্থী নন, তারা কি বলছেন? শামীম জানতে চাইল। তাদের কেউ কেউ বলছেন একাশিতে জিয়া নিহত হওবার পরে বিএনপি সরকার চালু ছিল। সুতরাং তখন দেশে একটা অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হলেও, এত গভীর সংকট সৃষ্টি হয়নি। তাদের মতে একাত্তরের মার্চে ইয়াহিয়াÑমুজিবÑভুট্টো সংলাপ নিষ্ফল হবার পরে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছিল, তার পরে বাংলাদেশ এখন সবচেয়ে বড় সংকটে পড়েছে। শরিফ বলল।

এদের কথাই ঠিক। চুয়াত্তরে দুর্ভিক্ষে প্রায় পনের লক্ষ মানুষের মৃত্যু এবং তারপরে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু, শেখ মুজিবের ক্ষমতায় স্থায়ী থাকার প্রচেষ্টা, পত্রপত্রিকার স্বাধীনতা হরণ প্রভৃতির পর পচাত্তরে সংকটের সমাধান হয়েছিল, যদিও সমাধানের পথটি ছিল রক্তাক্ত ও দুঃখজনক। কিন্তু এর আগে একাত্তরে ইয়াহিয়াÑমুজিবÑভুট্টো সংলাপ ব্যর্থ হয়ে যাবার পর তেইশ মার্চ থেকে গোটা দেশবাসী পড়েছিল গভীর হতাশা ও তীব্র অনিশ্চয়তায় ছয় দফা আদায়ের দাবিতে মার্চের গোড়া থেকেই দেশ জুড়ে চলছিল আওয়ামী লীগের আন্দোলন, হরতাল, অসহযোগ, জনসভা, পথসভা ইত্যাদি। তেইশ মার্চ থেকে সাধারণ মানুষ চরম উদ্বেগে পড়ে যায়। তারা কেউ অনুমান করতে পারছিল না এর পর কি হবে? তারা বুঝতে পারছিল তাদের অস্তিত্বের সংকটে তারা পড়েছে এবং হয়তো বা অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই দাবি আদায়ে বিজয়ী না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতেই হবে।

একাত্তরে পরবর্তী সাড়ে আট মাস জুড়ে সেই সংকট ছিল। হ্যা, বলতে পার, একাত্তরের পরে এখন এই ভূখণ্ড আবার তার অস্তিত্ব রক্ষার সংকটে পড়েছে। তবে তফাৎটা এই যে, একাত্তরে অস্তিত্ব রক্ষায় যে দেশটি সবচেয়ে বেশি এগিয়ে এসেছিল, আজ বিয়াল্লিশ বছর পরে সেই দেশটিই, অর্থাৎ, ইনডিয়া আমাদের অস্তিত্ব বিপন্নের সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। শামীম বলল। আমরা সবাই সেটা বুঝতে পারছি।

দেশের সচেতন মানুষরাও সেটা বুঝত পারছে। আমার মনে হয় আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনাও সেটা বুঝেছেন। তবে না বোঝার ভান করে অভিনয় করে যাচ্ছেন। তার কারণ তিনি তার প্রতি ইনডিয়ার পূর্ণ সমর্থন পেয়ে গেছেন। শরিফ বলল।

শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ সরকারকে ইনডিয়ার পূর্ণ সমর্থন দেওয়া যে উচিত সে বিষয়ে প্রভাবশালী ইনডিয়ান পত্রপত্রিকাগুলোতে এখন লেখালেখি হচ্ছে। যেমন কলকাতার আনন্দ বাজার পত্রিকাতে। দিল্লির টাইমস অফ ইনডিয়াতে। ১ নভেম্বরে টাইমস অফ ইনডিয়াতে সুবীর ভৌমিক সরাসরি লিখেছেন, “বাংলাদেশ যখন একটি সাংঘর্ষিক জটিল অবস্থার দিকে গড়িয়ে যাচ্ছে তখন ইনডিয়াকে নার্ভাস মনে হচ্ছে। ইনডিয়ার পূর্ব এবং উত্তরÑপূর্বাঞ্চলে সহিংস বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এবং নাশকতামূলক ক্রিয়াকর্মের ভবিষ্যত কি হবে সে বিষয়ে ইনডিয়া চিন্তিত।

তাই ঢাকাতে একটি শত্রুমনোভাব সম্পন্ন সরকার ইনডিয়া কিছুতে চাইতে পারে না। অন্যভাবে বলা চলে একাত্তরÑপূর্ববর্তী দৃশ্যগুলোর কথাই এখন মনে করিয়ে দিচ্ছে। তখন একই ধরনের পরিস্থিতি ইনডিয়াকে বাধ্য করেছিল বাঙালি বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন জানাতে এবং পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক অভিযান চালাতে। তখন আমেরিকান নৌবাহিনীর হস্তক্ষেপের হুমকি উপেক্ষা করেছিল ইনডিয়া। ” শামীম বলল।

তারা মানে, ইনডিয়াতেও মনে করা হচ্ছে একাত্তরের পরে ইনডিয়ানদের জন্য এটাই বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সংকট। মেরি বলল। হ্যা। তবে সুবীর ভৌমিকের বিশ্লেষণ আংশিক এবং ভুল। একাত্তরে ইনডিয়া এই ভূখণ্ডে এসেছিল তদানীন্তন একটি বৈধ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে এবং এই ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী মানুষের দাবির প্রতি সমর্থন জানাতে।

আর এখন ইনডিয়া চাইতে পারে একটি মেয়াদ উত্তীর্ণ অবৈধ সরকারের প্রতি সমর্থন জানাতে এবং অধিকাংশ মানুষের দাবির বিরোধিতা করতে। এই সহজ সত্যটা না বুঝে ইনডিয়া যদি বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পূর্ণটাই নিয়ন্ত্রণ করতে চায় তাহলে সেটা হবে চরম রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা এবং তার ফলে যে কোনো ইনডিয়ান সামরিক হস্তক্ষেপই হবে রক্তক্ষয়ী কিন্তু অমীমাংসিত। পারমানবিক শক্তির অধিকারী ইনডিয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কোনো যুদ্ধে জয়ী হবে না। অন্যদিকে ১৯৭১ থেকে স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়া ষোলো কোটি বাঙালিকে পরাধীন করা সম্ভব হবে না। ১৯৪৭ থেকে কাশ্মীর একটি বিতর্কিত দেশ যেটা শাসন করছে ইনডিয়া, পাকিস্তান ও চায়না।

কাশ্মীরি জনগণ আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। বাংলাদেশের জনগণ এখন চার দশক ধরে আত্মনিয়ন্ত্রণে অভ্যস্ত। স্বাধীনতা যে অপার আনন্দ, প্রয়োজনীয় আত্মসম্মান বোধ এবং গভীর আত্মবিশ্বাস জাতীয় জীবনে এনে দেয় সেটা বাংলাদেশের মানুষ বুঝেছে। তাই বাংলাদেশে ইনডিয়ান সেনা অভিযানের ফল হবে ইনডিয়ার জন্যই ভয়ংকর। ইনডিয়ার স্বাধীনতাকামী পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিক্ষুব্ধ ইনডিয়ানদের সঙ্গে যুক্ত হবে স্বাধীনতা রক্ষাকামী বাংলাদেশি।

বাদবাকি ইনডিয়ার মার্জিনালাইজড আঠার কোটি মুসলিমদের সঙ্গে যুক্ত হবে বাংলাদেশের মার্জিন অতিক্রমকারী অন্ততপক্ষে পনের কোটি মুসলিম। এই আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশিরা জাগিয়ে তুলবে ঘুমন্ত ইনডিয়ান মুসলিমদের। তখন মোট তেত্রিশ কোটি জাগ্রত মুসলিমকে মোকাবিলা করা ইনডিয়ার পক্ষে সম্ভব হবে না। ইনডিয়াতে অনেক শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন পলিটিশিয়ান, বুরোক্র্যাট, মিলিটারি ও মিডিয়ামেন আছেন। আশা করি তারা এসব বিবেচনা করবেন।

অনেক ঝড়ঝাপটার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে গিয়েছে এবং নিজের স্বাধীনতা বজায় রেখেছে। এখন শেখ হাসিনা যদি নিজের ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন করেন তাহলে এবং এই দেশের চূড়ান্ত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার ইনডিয়াকে দেন, তাহলে তিনি তার জীবনের শেষ ভুলটা করবেন। শামীম বলল। (বানান রীতি লেখকের নিজস্ব) শফিক রেহমান: প্রখ্যাত সাংবাদিক, টিভি অ্যাঙকর, বিবিসির সাবেক কর্মী (১৯৫৭-১৯৯১), লন্ডনে বহুভাষাভিত্তিক স্পেকট্রাম রেডিও-র প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।