আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মতিঝিলে আ.লীগ নেতা খুন

রাজধানীর মতিঝিলে সমবায় ব্যাংক ভবনে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের নেতা ও পরিবহন ব্যবসায়ী খায়রুল আলম মোল্লাকে (৪৭) ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পরিবারের অভিযোগ, সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনালের টোল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জের ধরে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
খায়রুল হত্যার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীতে কোনো বাস চলবে না। একই সময়ে সায়েদাবাদ থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যাবে না।

এ ছাড়া বেলা দুইটা পর্যন্ত গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনেরা জানান, নিহত খায়রুল আলম মোল্লা যাত্রাবাড়ী-ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সায়েদাবাদ আন্তজেলা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মতিঝিল থানার পুলিশ সূত্র জানায়, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে মতিঝিলে সমবায় ব্যাংকের দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে চার দুর্বৃত্ত পরিবহন ব্যবসায়ী খায়রুলকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও যুবলীগের নেতা আলী আকবর প্রথম আলোকে বলেন, সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও যুবলীগের নেতা মহিউদ্দিন আহমেদের তৃতীয় তলার কার্যালয় থেকে তিনি ও খায়রুল বের হয়ে নিচে নামছিলেন।

তাঁরা দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে নামলে ৭৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা তৈয়ব আলী কথা আছে জানিয়ে খায়রুলকে দাঁড়াতে বলেন। তিনি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে যান। এ সময় খায়রুল চিৎকার করে বলেন, ‘আমাকে ছুরি মেরেছে। ’ চিৎকার শুনে তিনি দৌড়ে সেখানে গিয়ে সিঁড়িতে রক্তাক্ত খায়রুলকে ছটফট করতে দেখেন। অন্য কেউ তখন সেখানে ছিলেন না।

তিনি ও তাঁর বন্ধু মহিউদ্দিন আহমেদ (বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান) খায়রুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর তৈয়বকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, তিনি, আলী আকবর ও খায়রুল ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দীর্ঘদিন তাঁরা একসঙ্গে যুবলীগের রাজনীতি করেছেন। মাঝেমধ্যে খায়রুল ও অন্য বন্ধুরা তাঁর কার্যালয়ে এসে গল্প করতেন।

গতকাল মাগরিবের নামাজের পর তিনি কার্যালয়ে ঢুকে খায়রুলকে দেখতে পান। খায়রুল সেখান থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর চিৎকার শুনে দৌড়ে গিয়ে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাতে দেখেন। হত্যার কারণ সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।

খবর শুনে খায়রুলের স্ত্রী, সন্তান ও স্বজনেরা হাসপাতালে ছুটে যান। খায়রুলের স্ত্রী শেফালী আলম বিলাপ করছিলেন।

তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তৈয়ব আলীকে ধরলে হত্যার কারণ জানা যাবে। তৈয়ব আমার বাসায় এসে অনেক খেয়েছে। ওর জন্য আমি আজ স্বামীহারা। ’

খায়রুলের ভাগনে মো. রাজীব বলেন, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের টোল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তৈয়ব আলীর সঙ্গে তাঁর মামার বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে তৈয়ব তাঁর সহযোগীদের নিয়ে মামাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছেন।

পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার এস এম মেহেদী হাসান বলেন, হত্যার কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে। খুনিদের গ্রেপ্তারে থানার পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ মাঠে নেমেছে।

খায়রুলের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। তাঁর বাসা ২৪৩/এ দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী।  



সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.