আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাবাস বাংলাদেশ! পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়

কৃষি কাজ করি যে দেশ দূর্নীতিতে ১৩ তম, এই বৈশ্বিক মন্দার মাঝেও তার জিডিপি ৬!! যে দেশের ৩৩ ভাগ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে, গার্ডিয়ান বলছে সে দেশ আর ২০ বছরের মধ্যে ইউরোপের সবগুলো দেশকে ছাড়িয়ে যাবে!! যে দেশের ৩ কোটি ৭৩ লক্ষ মানুষ নিরক্ষর, সেদেশে বছরের প্রথম দিনে পাঠ্যপুস্তক উৎসব হয়!! তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ, অথচ বিশ্বের ১১তম সুখী দেশ!! সারা পৃথিবী অর্থনীতি নিয়ে মাথায় ঘাম পায়ে ঝড়াচ্ছে, আর গেল বছরে এদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার সারা দুনিয়ায় ৫ম!! আমেরিকার মত দেশ এখন বিদেশী সাহায্যের জন্যে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বাড়ছে। কানাডার মত দেশ খাদ্যের জন্যে অন্যের দুয়ারে দুয়ারে হাত পাতছে, আর আমার দেশ এখন খাদ্যে ৯৩% স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা দৃঢ় কন্ঠে বলি, এই বছর অক্টোবরের মাঝে আমরা খাদ্যে শতভাগ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যাব। নেদারল্যান্ডের মানুষ এখন আমার দেশের আলু খায়।

কানাডা আমার দেশের মাঠের ভুট্টা দিয়ে খাবার তৈরি করে। ইংল্যান্ডের মানুষ আমার দেশের জলে জন্মানো মাছ খায়। আমাদের সম্বল খুব কম। পান থেকে চুন খসলেই আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস লেগেই আছে।

কিন্তু তবু কিন্তু আমরা দাঁড়িয়ে আছি। আর ওদিকে দেখ, বড় বড় দেশগুলো একটা মাঝারি শক্তির ঝড় হলেই হাপিয়ে যায়। আমাদের দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা লেগেই আছে। তবু বিদেশীরা আমাদের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাঁকিয়ে থাকতে বাধ্য হয়, যখন দেখে সারা দুনিয়া মন্দন কমাতে ব্যস্ত আর এই দেশ ত্বরণ বাড়াচ্ছে। এখন আর আমার দেশের মানুষ না খেয়ে মরে না।

আমার দেশের মানুষ রাতে রাস্তায় ঘুমায়, কিন্তু তবু পেটে একমুঠো হলেও ভাত পড়ে। আমার দেশের স্কুলে একটা ভাল ল্যাব নেই, ক্লাস হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশানজট লেগেই আছে। কিন্তু এই দেশের ভাঙ্গা কলসির তলায় ঝুলে থাকা একটা ছাত্র যখন বিশ্বের ১ নম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, ওদের ছাত্রদের চেয়ে নিমিষেই অনেক সামনে এগিয়ে যায়। আমার দেশে কোন প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় নেই, কিন্তু আবুল বারাকাতের মত অর্থনীতিবিদ এখানেই জন্মায়, যাকে নিয়ে সারা দুনিয়া টানাহ্যাচড়া করে।

আমার দেশের ক্লাস টু পর্যন্ত পড়া ছেলে পানি দিয়ে তড়িৎ উৎপাদন করতে পারে (ওকে রাশিয়া নিয়ে গেছে এখন। )। আমার দেশের ছেলেরা ব্যায়ামের যন্ত্র দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবার পদ্ধতি বের করেছে। আমার দেশে দামী দামী ওষুধ তৈরী হয় না, কিন্তু ডাক্তার খালি হাতেই চিকিৎসা করতে পারেন। মুমূর্ষু রোগীর জীবন ফিরিয়ে আনতে পারেন কাড়ি কাড়ি টাকা দিয়ে কেনা লাইফ সাপোর্টিং মেশিন ছাড়াই।

আমার দেশ বিশ্বের কৃষিতে নতুন বিপ্লব দেখাচ্ছে দুনিয়াকে। এইদেশের ১ একর জমি থেকে ১১১ মণ চাল আসে। জাপানের ১৩% তরুন হতাশায় সুইসাইড অ্যাটেম্পট করে (৬০+ বয়স্কদের কথা বলছি না) কর্ম না পেয়ে। আর আমার দেশের ২৭% তরুন এখন ভাবে তারা চাকরি করবে না, চাকরি দেবে!! আমরা চিৎকার করে বলতে পারি, "আমরা বড্ড বেশি আশাবাদী"!! আমার দেশের মানুষ কোনকিছুর উপরই অতিনির্ভরশীল না। একটা হারালে অন্যপথ খুঁজে নিতে চেষ্টা করতে জানে।

আর ওদিকে চেয়ে দেখ, সম্পূর্ণ কম্পিউটারাইজড জার্মানিতে একটা ট্রেন ২.৩৫ মিনিট দেরী করাতে পরের ২ দিন ট্রেনই চলে না, ৩য় দিনেও কোন ট্রেনের শিডিউল মেলে না। আর আমার অ্যানালগ দেশের একটা ট্রেন ৪ ঘন্টা দেরী করলে পরদিন আবার সেটা ১৫ মিনিটে নেমে আসে। উন্নত মেশিনপত্র নাই আমাদের, কিন্তু তারপরও গার্মেন্টস শিল্পে আমরা সারা পৃথিবীতে ২ নম্বর স্থানে আছি। কোন কাঁচামালই নাই, নাই কোন উন্নত ডক-ইয়ার্ড। এক হাতে অক্সি-অ্যাসিটিলিনের শিখা আর আরেক হাতে স্টিলের পাত চেপে ধরে আধুনিক জাহাজ-লঞ্চ বানাই আমরা।

তারপরও আমরা পৃথিবীর ১৭ তম জাহাজ নির্মাণকারী দেশ। অথচ আমরা আধুনিক জাহাজ বানাতে শিখেছি ২ বছরও হয় নি। আমরা যুদ্ধ জাহাজ বানানোও শিখে গেছি!! তাঁকিয়ে দেখ, ভাল করে চোঁখ মেলে দেখ!! আমরা এখনও অনেক ছোট, কেবল হাঁটতে শিখছি। অনেক ভুল-ত্রুটি আমাদের আছে। এটা থাকবেই।

কিন্তু বন্ধু, স্বীকার কর বা নাই কর, আমার দেশ দূর্বার গতিতে সামনে এগিয়ে চলেছে। আমরা এখন বুঝতে শিখছি, কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না। আমি বারবার বলি, "একটি বাংলাদেশ - তুমি জাগ্রত জনতার, সারা বিশ্বের বিষ্ময়, তুমি আমার অহংকার"  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.