আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিবর্তনবাদ কী বিলুপ্ত হওয়া উচিত?

আমরা এমন একটা পরিবেশ চাই, যেখানে শিশুরা তাদের পছন্দ-অপছন্দের ধাপগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে বড় হবে।

===ফয়সল সাইফ=== প্রাণের প্রাথমিক উৎপত্তি প্রাণের প্রাথমিক উৎপত্তি: বিবর্তনবাদের সমর্থক জেফরি বেটা নামক একজন জিওকেমিস্ট বলেছেন- Today, As we leave the 20th century, We still face the biggest problem that we had when we entered the 20th century: HOW DID LIFE ORIGINATE ON EARTH? [FROM – EARTH, FEBRUARY 1998]. আজ আমরা এই বিংশ শতাব্দী থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় এখনও সেই বিশাল সমস্যার মুখোমুখি হয়ে রয়েছি, যে সমস্যা বিংশ শতাব্দীতে প্রবেশের সময়ও ছিল। আর সেটা হলো- পৃথিবীতে কীভাবে প্রাণের উৎপত্তি হল? এই বাস্তাবতাটি মেনে নিয়ে হেনরি এম. মরিস (Henry M. Morris) উপসংহারে এসেছেন, যে আমাদের এমন কোনো পদ্ধতি বা প্রক্রিয়ার কথা জানা নেই, যাঁর দ্বারা প্রাকৃতিকভাবে প্রাণের উদ্ভব হতে পারে। এখানে প্রশ্ন হলো কেন তা জানা নেই? কারণ একটা জীবকোষ তৈরীতে প্রয়োজনীয় শর্তের পরিমান এত বিপুল, যে এটাকে যুগপৎ ঘটনায় সংঘটিত হওয়ার ব্যাখ্যা দেওয়া কঠিন। একটি কোষের গঠন কাঠামোতে যেসব প্রোটিন ব্লক হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তাঁদের প্রতিটি অ্যাভারেজে ৫০০ অ্যামাইনো এসিড নিয়ে গঠিত।

যুগপৎভাবে সংশ্লেষন প্রক্রিয়ায় সে প্রোটিনগুলোর তৈরী হওয়ার সম্ভাবনা ১০৯৫০ ভাগের একভাগ। অথচ গাণিতিকভাবে ১০৫০ ভাগের চেয়ে কম কিংবা ক্ষুদ্রতর যেকোনো সম্ভাবনা বাস্তবে অসম্ভব। তা ছাড়া কোষের কেন্দ্রে অবস্থিত ডিএনএ একটি অবিশ্বাস্য ডাটা ব্যাংক। ডিএনএ বংশগতির সব তথ্যাবলী বহন করে। গুনে দেখা গেছে, যে ডিএনএ তে যে পরিমাণ তথ্যাদি সংকলিত আছে তা যদি লিখে রাখার চেষ্টা করা হয়, তাহলে ৯০০ ভলিউম এনসাইক্লোপেডিয়ার এক বিশালাকায় লাইব্রেরী তৈরী করতে হবে।

যেখানে প্রতি ভলিউম এনসাইক্লোপেডিয়ার জন্য ৫০০ পৃষ্ঠা বরাদ্দ থাকে। উল্লেখ্য ডিএনএ কেবলমাত্র বিশেষ ধরণের কিছু প্রোটিনের (এনজাইম) সহায়তায় বিভাজিত হয়। আবার এ এনজাইমগুলো সংশ্লেষনের মাধ্যমে তৈরী হওয়ার যাবতীয় তথ্যাদি ডিএনএ’র গায়ে সংকলিত থাকে। আর এই তথ্যাদি থেকেই সংশ্লেষণ প্রক্রিয়াগুলো বুঝে নেওয়া যায়। তাই দেখা যাচ্ছে, দুটোই পরষ্পরের ওপর নির্ভরশীল।

ফলে কোষ বিভাজনের সময় তাঁদের এক সঙ্গে উপস্থিত থাকতে হবে। এ কারণেই প্রাণ নিজে থেকেই উৎপত্তি লাভ করবে- এমন কাল্পনিক সম্ভাবনাটি বালিত হয়ে যায়। ওপরে যা বিবৃত হয়েছে, এই পুরো ব্যাপারটির প্রকৃত রূপ কী? এখন আমরা সেটা দেখব- (Universal probability bound) বা বিশ্বজনীন সম্ভাব্যতার সীমা: এটার দ্বারা ডেম্বস্কি সম্ভাব্যতার সর্বোচ্ছ একটি সীমা নির্ধারণ করেছেন। ডেম্বস্কি বলেন- যে কেউ ফলপ্রসুভাবে বিশ্বজনীন সম্ভাব্যতার সীমার একটি ধনাত্নক মান বের করতে পারবে। এ ধরণের একটি সীমার অস্থিত্ব থাকার অর্থ হচ্ছে, কোনো একটি অনিয়ন্ত্রিত ও এলোমেলো ঘটনা কোনো ধরণের নিয়ন্ত্রণ ছাড়া ঘটতে পারবে কী না, তা নিশ্চিত করা।

যদি ওই এলোমেলো ঘটনার সম্ভাব্যতা ইউনিভার্সাল প্রভাবিলিটি বাউন্ডের বাইরে চলে যায়, তবে বুঝতে হবে যে সেই ঘটনাটি অনিয়ন্ত্রিত কোনো প্রক্রিয়া দ্বারা ঘটা অসম্ভব। এই সীমাটি ব্যবহার করে ডেম্বস্কি আরো বলেন- প্রকৃতিতে ঘটা কিছু নির্দিষ্ট ঘটনাকে আমরা শুধুমাত্র চান্স বা ভাগ্যের ওপরে ছেড়ে দিতে পারব না। তাই এই তত্ত্বকে এলোমেলো ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে প্রাণের সূচনা এবং একই সাথে এলোমেলো ও অনিয়ন্ত্রিত বিবর্তনের বিরুদ্ধেও কাজে লাগানো যায়। এক্ষেত্রে তিনটি হিসাব রয়েছে- (১) বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বে আছে প্রায় ১০^৮০টি প্রাথমিক কণা। যেখানে ১০^৮০’র মানে হলো ১ এর পরে ৮০টি শূণ্যসমেত একটি সংখ্যা।

তবে, প্রতিনিয়ত সম্প্রসারিত এই মহাবিশ্বে এমন কণার সংখ্যা ঠিক কতটি তা আমরা জানি না। তবে, যতটুকু ধারণায় আছে ততটুকুই হিসাবের খাতায় তুললাম। (২) প্লাঙ্ক টাইম হলো- শূণ্যস্থানে এক প্লাঙ্ক দূরত্ব অতিক্রম করতে আলোর যতটুকু সময় প্রয়োজন হয়, তা। প্রতিটি এলিমেন্টারি পদার্থ রূপান্তরের সর্বনিম্ন সময় হলো এক প্লাঙ্ক টাইম। এটি সময়ের অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটি একক।

অনেক পদার্থবিদেরা এটাকে সময়ের সর্বনিম্ন একক বলে থাকেন। এটি কোনো নির্দিষ্ট পদার্থের মধ্যে প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ কী পরিমাণ বা কতগুলো পরিবর্তন ঘটতে পারে, তা নির্দেশ করে। (৩) সেকেন্ডকে একক ধরে, মহাবিশ্বে মহা বিস্ফোরণ বা (BIG BANG) এর পরে ঠিক কত সময় অতিক্রম হয়েছে, তার একটি হিসাব করা হয়েছে। সারাধরণত এত বিশাল স্কেলের হিসাবগুলো কখনোই আনুমানিক বা কাছাকাছির বেশি বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে তুলে ধরা অসম্ভব। এখন আমরা প্রোভাবিলিটির হিসাবটা দেখি: ইউনিভার্সাল প্রোভাবিলিটি বাউন্ড=অবজারভেবল ইউনিভার্সের সর্বোচ্ছ অ্যানপ্রক্সিমেট এলিমেন্টারি পার্টিক্যাল × প্রতি সেকেন্ডে পদার্থের রূপান্তরের সর্বোচ্ছ পরিমাণ × সেকেন্ডের হিসাবে আমাদের মহাবিশ্বের বয়স =১০^৮০×১০^৪৫×১০^২৫ =১০^১৫০ এই হিসাবের দ্বারা বুঝা যায়, যে মানুষের পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বে, সৃষ্টির শুরু থেকেই প্রতি সেকেন্ডে যদি পদার্থের সর্বোচ্ছ পরিমাণ রূপান্তর বা পরিবর্তন হয়; অর্থাৎ প্রতিটি কণা যদি প্লাঙ্ক সেকেন্ডে পরষ্পরের সাথে মিথস্ক্রিয়া (Interaction) করে, তাহলে তাঁরা বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় সর্বোচ্ছ ১০^১৫০ মিথস্ক্রিয়া (Interaction) ঘটাতে পারবে।

তার মানে মহাবিশ্বে এখনো পর্যন্ত মোট প্রায় ১০^১৫০টি মৌলিক ঘটনা ঘটেছে। এবার দেখা যাক, এই বিষয়টি কীভাবে এলোমেলো ও অনিয়ন্ত্রিত প্রাণের বিকাশ ঘটাকে অসম্ভব হিসাবে প্রমাণ করে: ডগলাস এক্স’এর করা হিসাব মতে অ্যামিনো এসিড সম্পন্ন একটি মাত্র প্রোটিন অণুকে এলোমেলো ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে তৈরী হওয়ার সম্ভাব্যতা হল ১/১০^১৬৪। অর্থাৎ ১৫০টি অ্যামিনো এসিড দ্বারা একটি প্রোটিন অণু তৈরী হওয়াটা হলো ১০^১৬৪টি ঘটনার মধ্যে মাত্র একটি ঘটনা। আর এ পর্যন্ত মানুষের পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বে মৌলিক ঘটনা ঘটার সংখ্যা তাঁর চেয়ে কম, ১০^১৫০টি। তা ছাড়া এখানে আর একটি বিষয় বিবেচ্য, যে সম্ভাব্যতার দিক দিয়ে যে ঘটনাগুলো সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময়, সেগুলোই আগে ঘটার কথা।

এক্ষেত্রে এলোমেলো ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে তৈরী হওয়া প্রোটিন অণুর সম্ভাব্যতা ‘১০^১৬৪টি’ হলো সবচেয়ে কম সম্ভাবনাময়। আর এই প্রোভাবিলিটি বাউন্ড অনুসারে প্রথম ঘটা ঘটনাগুলো পুনরায় ঘটার সম্ভাবন আছে। সেক্ষেত্রে যদি তাই হয়, তাহলে সময়টা আরো পিছিয়ে যাবে। তাই প্রোভাবিলিটি বাউন্ড অনুসারে ৩.৫ বা ৪ বিলিয়ন বছর আগে কেন, এই মুহুর্তেও ১৫০টি অ্যামিনো এসিড বিশিষ্ট ১টি প্রোটিন অণু সৃষ্টি হওয়ার কথা নয়। আর প্রাণ তো দূরের কথা।

সুযোগ বিবর্তনবাদীরা বলে থাকে যে সুযোগ (CHANCE) বা ভাগ্যের কারণে এই পৃথিবীতে প্রাণ সৃষ্টি হয়েছে। তবে, এক্ষেত্রে স্যার ফ্রেড হোয়েলের মতামত হলো- Belief in the chemical evolution of the first cell from lifeless chemicals is equivalent to believing that a tornado could sweep through a junkyard and form a Boeing 747. অর্থাৎ, প্রাণহীন রাসায়নিক দ্রব্যাদি থেকে প্রথম কোষের রাসায়নিক বিবর্তনের ওপর বিশ্বাস করা হল- একটি টর্নেডোর প্রচুর আবর্জনা ভর্তি একটি স্থান থেকে বোয়িং ৭৪৭ তৈরী করতে পারার ওপর বিশ্বাস করার সমান। মানে, ব্যাপারটা হলো- কোনো তীব্র ঝড়, ময়লা আবর্জনা ভর্তি একটি স্থান দিয়ে যাওয়ার সময় সঠিক অংশগুলো খুঁজে বের করে একটি বোয়িং-৭৪৭ তৈরী করে দিল; এই কথাটি বিশ্বাস করা আর রাসায়নিক বিবর্তনের মাধ্যমে প্রাণহীন বস্তু থেকে প্রথম কোষের উদ্ভব হয়েছে, কথাটি বিশ্বাস করা একই কথা। তবুও দেখা যাক, (CHANCE) বা ভাগ্যের কারণে অ্যামিনো এসিড সম্বলিত ১টি প্রোটিন অণু তৈরী হওয়া সম্ভব কী’না? এক্ষেত্রে (CHANCE) বা ভাগ্যের মাধ্যমে ২০০টি অ্যামিনো এসিড অণু সম্বলিত শুধুমাত্র ১টি প্রোটিন অণু গঠিত হওয়ার সম্ভাবনা হল ১/১০^২৬০। এই হিসাবটা করা হয়েছে, বর্তমানে পাওয়া প্রোটিনের সংখ্যা ২০ এর ওপর বর্তমানে পাওয়া অ্যামিনো এসিডের সংখ্যা ২০০ এর পাওয়ার দিয়ে।

অর্থাৎ ২০^২০০ থেকে এই হিসাবটি পাওয়া যায়। এই সম্ভাবনাটি এতোই সামান্য যে সারা মহাবিশ্বও যদি অ্যামিনো এসিড দ্বারা ভর্তি করা হয় এবং তাঁরা যদি ১ বিলিয়ন বছর ধরেও একটি আর একটির সাথে সংযুক্ত হতে থাকে, তবুও ২০০ অ্যামিনো এসিড সম্বলিত ১টি প্রোটিন অণুও গঠিত হওয়ার কথা নয়। এবার দেখুন, দেহের অভ্যন্তরের প্রোটিন তৈরী হয় কোষের জিন দ্বারা। আমাদের বর্তমান জ্ঞান অনুসারে মানুষের প্রতিটি জিনে গড়ে প্রায় ৩০০০টি করে বেস থাকে। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বেস সম্বলিত যে জিন পাওয়া গেছে সেখানে বেস আছে সর্বমোট ২৪০ কোটি।

মানুষের দেহে প্রায় ৩০ হাজার জিন আছে। মানুষের জেনোমে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডিএনএ বেস পেয়ার আছে। শুধুমাত্র পরিণত লাল রক্ত কোষগুলো ছাড়া মানুষের প্রত্যেক কোষে জেনোম সম্পূর্ণভাবে রয়েছে। প্রতি কোষে প্রটিউম আছে যা প্রোটিন থেকেই আসে। জেনোম সাধারণত কখনো পরিবর্তিত হয় না।

কিন্তু পরিবেশের বিভিন্ন রকম প্রায় ১০ হাজার সিগনাল পেয়ে, প্রটিউম প্রতি মিনিটেই পরিবর্তিত হয়। মানব দেহে প্রায় ২ মিলিয়ন প্রোটিন আছে, যাঁর প্রত্যেকটি বিভিন্ন ধরণের কাজ করে। কিন্তু যেখানে মহাবিশ্ব অ্যামিনো এসিড দ্বারা পূর্ণ থাকলেও ১ বিলিয়ন বছরে (CHANCE) বা ভাগ্যের সহায়তা দ্বারা ১টি প্রোটিন অণু গঠিত হয় কী’না সন্দেহ; সেখানে ২ মিলিয়ন প্রোটিন অণু এবং আরো অসংখ্যা সুক্ষ অংশ সম্বলিত এতো জটিল এবং কর্মক্ষম একটি মানবদেহ কী’না এসেছে (CHANCE) বা ভাগ্যের কারণে??? কোষ কী সরল? একটি কোষের জীবিত থাকার জন্য এবং অঙ্গাণুগুলো চালনা করার জন্য শক্তির প্রয়োজন। তাই কোষের মধ্যে শক্তি উৎপাদনের একটা প্রক্রিয়া থাকা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে শক্তি উৎপাদনের জন্য শক্তি উৎপাদক বস্তু সনাক্তকরণ, গ্রহণ ও প্রক্রিয়াজতকরন থাকা প্রয়োজন।

তারপর এই শক্তিকে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। সংরক্ষিত শক্তিকে প্রয়োজন অনুসারে সমগ্র কোষদেহে সরবরাহ করার সিস্টেম থাকা প্রয়োজন। খাদ্য বা শক্তি উৎপাদক দ্রব্য প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় বর্জও উৎপন্ন হবে। এই অপ্রয়োজনীয় বর্জ নিষ্কাশনের প্রক্রিয়া থাকা প্রয়োজন। কারণ কোষের ভেতর অসীম জায়গা নেই।

কোষের বংশবৃদ্ধির জন্য একটা বিভাজন প্রক্রিয়া থাকা প্রয়োজন। এ সব কাজকে নিয়ন্ত্রণের জন্য একটা নিয়ন্ত্রক থাকা প্রয়োজন। তা না হলে কোষের অঙ্গাণুগুলো উল্টাপাল্টা আচরণ করতে শুরু করবে। যেহেতু ডিএনএ হলো কোষের গঠন ও কার্যকলাপের মৌলিক নির্দেশনা, তাই কেন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রকে ডিএনএ বিদ্যমান থাকবে; অথবা ডিএনএ নিজেই হবে কেন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রক। এর পরও কী বলবেন, একটা কোষ সরল? বিবর্তনবাদের মূল কথাই হলো বিবর্তনের মাধ্যমে সরল থেকে জটিল গঠনের দিকে যাওয়া।

যদি একটি সরল অঙ্গাণু থেকে কোষের শুরু করতে হয়, তাহলে তাঁর সাথে অন্যকোনো অঙ্গানু যুক্ত হওয়ার পূর্বে বা তাঁর থেকে অন্য কোনো অঙ্গাণু সৃষ্টি হওয়ার পূর্বেই তাঁর অস্থিত্ব ধ্বংস হয়ে যাবে। কারণ কোষ সরল নয়। তাহলে, এখানে (CHANCE) বা ভাগ্যের কারণে স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎপন্ন সরল কোষ থেকে জীবনের শুরুর কথা আসে কীসের ভিত্তিতে? এখানে বিবর্তনবাদীদের বর্তমান থিওরি হলো- অত্যন্ত সরল প্রকৃতির কোনো কোষ সর্বপ্রথম সৃষ্টি হয়। সেটা এতই সরল ছিল, যে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে সরল কোষটিও সেই আদি সরল কোষের তুলনায় প্রচন্ড জটিল। যাই হোক, পৃথিবীর সকল জীব কোষের মধ্যেই গঠনগত দিক দিয়ে কিছু মিল বিদ্যমান।

উদ্ভিদ কোষ, প্রাণী কোষ, ইউক্যরিউটিক কোষ, প্রোক্যারিউটিক কোষ- সকল প্রকারের জীবদেহ গঠনকারী কোষের মধ্যেই কিছু কমন অঙ্গাণু আছে, যেগুলো কোষের জন্য শুধু গুরুত্বপূর্ণই নয়; বরং অপরিহার্য। এ ধরণের চারটি অংশ আছে, যেগুলো পৃথিবীর সকল কোষেই পাওয়া যায়। (১) সাইটোপ্লাজমিক মেমব্রেন: সাইটোপ্লাজমিক মেমব্রেন অথবা প্লাজমা মেমব্রেন হলো- মূলত ফসফোলিপিড এবং প্রোটিনের সমন্বয়ে গঠিত এক প্রকারের পর্দা। এটি লিপিড বাই লেয়ার দ্বারা গঠিত। এই মেমব্রেন কোষের সাইটোপ্লাজমকে চারদিক থেকে ঘিরে রাখে।

এর অভ্যন্তরের কিছু প্রোটিন আবার এর ভেতর বা ওপরের অংশে নাড়াচাড়া করে। প্লাজমা মেমব্রেন কোষের বাইরে থেকে ভেতরে এবং ভেতর থেকে বাইরে রাসায়নিক পদার্থসমূহের যাওয়া আসা নিয়ন্ত্রণ করে। এই নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এটি কোষকে বাইরের পরিবেশের সাথে রীতিমত বাছাই করে মিথস্ক্রিয়া করতে সাহায্য করে। এর অভ্যন্তরের প্রোটিনসমূহ কোষকে বাইরের পরিবেশের সাথে যোগাযোগ করতে সাহায্য করে। এই যোগাযোগের মধ্যে অন্যান্য কোষের সাথে রাসায়নিক সংকেত বা ক্যামিক্যাল সিগন্যালের আদান-প্রদান এবং বিভিন্ন ধরণের কোষের সাথে মিথস্ক্রিয়া হতে পারে।

প্লাজমা মেমব্রেন অত্যন্ত রকমের সুশৃঙ্খল এবং দুটি দিক বিশিষ্ট ও অসদৃশ্য। এর প্রত্যেক দিকেরই ভিন্ন ভিন্ন পৃষ্ঠ রয়েছে। যাঁদের রয়েছে আলাদা আলাদা কাজকর্ম। এছাড়াও এসব মেমব্রেন অত্যন্ত সক্রিয় থাকে এবং ভিন্ন ভিন্ন অবস্থার সাতে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। (২) সাইটোপ্লাজম: সাইটোপ্লাজম বা প্রোটেপ্লাজম হলো- মূলত জেলির মত এক ধরণের পদার্থ।

যাঁর প্রধানতম অংশ হলো পানি। এছাড়াও এতে রয়েছে- এনজাইম, লবণ, পুষ্টিদায়ক পদার্থ, বর্জ্য ও বিভিন্ন কোষ অঙ্গাণু। যেমন: ক্রোমোজোম, রাইবোজোম, প্লাজমিড এবং বিভিন্ন ধরণের জৈবিক অণু ইত্যাদি। সাইটোপ্লাজমেই কোষের বৃদ্ধি, রাসায়নিক রূপান্তর, বিপাকীয় ক্রিয়া এবং রেপ্লিকেসন বা প্রতিলিপন সৃষ্টি ইত্যাদি ঘটে থাকে। সাইটোপ্লাজমে বিভিন্ন ধরনের কোষ অঙ্গাণু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে।

এখানে সকল কোষ অঙ্গাণুসমূহ এবং ডিএনএ ভেসে থাকে। সাইটোপ্লাজমকে প্রাণের ভৌত ভিত্তি হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। (৩) রাইবসোম: রাইবসোম মূলত- নিউক্লিয়িক এসিড ও প্রোটিনের সমন্বয়ে গঠিত। এ জন্য এদেরকে বলা হয়, রাইবো-নিউক্লিয়িক প্রোটিন পারটিকল বা আরএনপি। কোষের মধ্যে এদেরকে দেখতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার মতো মনে হয়।

এরা কখনো কখনো এককভাবে আবার কখনো কখনো একাধিক রাইবসোম চেইনের আকারে বা গুচ্ছাকারে ভাসমান অবস্থায় থাকে। এদেরকে আবার এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলামের গায়েও লেগে থাকতে দেখা যায়। অনেক সময় এরা নিউক্লিয় আবরণীর গায়েও লেগে থাকতে পারে। রাইবসোম প্রোটিন সংশ্লেষণে সাহায্য করে। এটি সংশ্লেষিত প্রোটিনকে গলিজ দ্রব্যে প্রেরণেও সাহায্য করে।

(৪) জেনেটিক মেটেরিয়াল (ডিএনএ এবং আরএনএ): কোষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চারটি অংশের মধ্যে জেনেটিক মেটেরিয়াল হলো সবচেয়ে জটিল ও সুক্ষ গঠনের অধিকারী। এটি কোষের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই জেনেটিক মেটেরিয়াল ২টি অংশের দ্বারা গঠিত। সেগুলো হলো- ডিএনএ এবং আরএনএ। ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড): সজীব কোষে অবস্থিত স্বপ্রজননশীল, পরিব্যক্তিক্ষম, সকল প্রকার জৈবনিক কাজের নিয়ন্ত্রক এবং বংশগত বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক যে নিউক্লিক এসিড তাকেই ডিএনএ বলে।

জেনেটিক মেটেরিয়ালের দুটি অংশের মধ্যে এই অংশটিই সবচেয়ে জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ। এই ডিএনএ ছাড়া জীবন্ত কোষের অস্থিত্ব অসম্ভব। ডিএনএ’র ভৌত গঠন: (১) ইউক্যারিউটিক কোষের ডিএনএ’র আকার সূত্রাকার সোজা এবং শাখাহীন। প্রোক্যারিউটিক কোষে মাইটোকন্ড্রিয়া ও প্লাস্টিডের ডিএনএ’র আকার গোলাকার। (২) ওয়াটসন ও ক্রিকের মডেল অনুসারে ডিএনএ দ্বিসূত্রক।

দেখতে পেঁচানো সিঁড়ির মত। (৩) সিঁড়ির এক একটি প্যাচের দৈর্ঘ্য ৩.৪ ন্যানোমিটার। (৪) সিঁড়ির এক একটির মধ্যে ১০টি করে নাইট্রোজেন বেসের ধাপ থাকে। (৫) দুটি ধাপের মধ্যবর্তী দূরত্ব ০.৩৪ ন্যানোমিটার। (৬) সিঁড়ির দুই পাশের দুটি সূত্রের মধ্যের দূরত্ব ২ ন্যানোমিটার।

(৭) সূত্র দুটির একটি ঊর্ধ্বমূখী এবং অপরটি নিম্নমূখী। অর্থাৎ একটি ৩-৫´ হলে অপরটি ৫-৩´। (৮) মানুষের দেহকোষে ডিএনএ’র দৈর্ঘ্য সাধারণত ১৭৪ সে.মি. এবং ব্যাকটেরিয়াতে এর দৈর্ঘ্য সাধারণত ১.৪ মি.মি.। (৯) ডিএনএ’র আণবিক ওজন ১০^৬ থেকে ১০^৯ এর মধ্যে। ডিএনএ’র রাসায়নিক গঠন: (১) ডিএনএ একটি বৃহৎ অণু, যা হাইড্রোজেনের চেয়ে কয়েক কোটি গুন বড়।

(২) ডিএনএ গঠিত হয় ৫টি কার্বন বিশিষ্ট ডিঅক্সিরাইবোজ শর্করা, অজৈব ফসফেট এবং অ্যাডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও থাইমিন নামক নাইট্রোজেন বেস দ্বারা। (৩) প্রতিটি ডিএনএ অণু দুটি সূত্র নিয়ে গঠিত এবং এই সূত্র ডিঅক্সিরাইবোজ শর্করা ও অজৈব ফসফেট দ্বারা তৈরী। (৪) সূত্র দুটির মাঝখানের ধাপগুলো বেস দিয়ে তৈরী। (৫) সাইটোসিন ও থাইমিনকে বলা হয় পাইরিমিডিন এবং অ্যাডেনিন ও গুয়ানিনকে বলা হয় পিউরিন। (৬) অ্যাডেনিন ও থাইমিন দুটি হাইড্রোজেন বন্ডের মাধ্যমে এবং গুয়ানিন ও সাইটেসিন তিনটি হাইড্রোজেন বন্ডের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে।

(৭) একটি ডিঅক্সিরাইবোজ শর্করা ও একটি নাইট্রোজেন বেস মিলে গঠন করে একটি নিউক্লিউসাইট। (৮) একটি নিউক্লিউসাইট ও একটি অজৈব ফসফেট মিলে গঠন করে একটি নিউক্লিউটাইড। ডিএনএ’র কাজ: (১) ডিএনএ বংশগতির বৈশিষ্ট্যাবলীর ধারক ও বাহক। (২) দেহের সব ধরনের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে। (৩) কোষের জন্য নির্দিষ্ট ধরনের প্রোটিন সংশ্লেষ করে।

(৪) আরএনএ সংশ্লেষ করে। (৫) জীব জগতে ভ্যারিয়েশন সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। (৬) প্রতিরূপ সৃষ্টি করে কোষ বিভাজনে সাহায্য করে। আরএনএ (রাইবো নিউক্লিক এসিড): সাইটোপ্লাজম, রাইবসোম, নিউক্লিউলাস এবং ডিএনএ’র সহযোগী হিসেবে ক্রোমোজোমে যে নিউক্লিক এসিড থাকে, তাঁকেই আরএনএ বলে। এটি ডিএনএ’র তুলনায় অনেক কম জটিলতাপূর্ণ এবং এর গুরুত্বও তুলনামূলক সামান্য কম।

আরএনএ’র ভৌত গঠন: আরএনএ এক সূত্রক চেইনের মতো। এটি স্থানে স্থানে কুন্ডলিত অবস্থায় থাকে। এর গঠনে একাধিক ইউ আকৃতির ফাঁস থাকে। আরএনএ’র রাসায়নিক গঠন: (১) ৫টি কার্বন বিশিষ্ট রাইবোজ সুগার। (২) নাইট্রোজেন বেস- অ্যাডেনিন, গুয়ানিন, ইউরোসিল এবং সাইটোসিন।

(৩) ফসফেট। (৪) এছাড়াও কোনো কোনো ক্ষেত্রে অন্য বেসও থাকতে পারে। আরএনএ’র এর প্রকারভেদ: একটি কোষে সাধারণত ৩ প্রকার আরএনএ পাওয়া যায়। যথা- (১) ট্রান্সফার আরএনএ (২) রাইবোসোমাল আরএনএ (৩) মেসেঞ্জার আরএনএ। উপরোক্ত ৩ প্রকারের আরএনএ ছাড়াও আরো এক প্রকারের আরএনএ প্রকৃতিতে দেখতে পাওয়া যায়।

সেটি হলো জেনেটিক আরএনএ। আরএনএ’র কাজ: আরএনএ’র প্রধান কাজ হচ্ছে মূলত প্রোটিন প্রস্তুত করা। তবে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে বংশগতির বস্তু হিসেবেও কাজ করে। যেমন টিএমভি। যেহেতু কোষের এই চারটি অংশ কমন, তাই ধরে নিলাম যে ওপরে বর্ণিত কোষের এই নূন্যতম অংশগুলো; এমনকি শুধু যদি অপরিহার্য অংশগুলো দিয়েও একটি কোষ গঠন করা হয়, তবুও কোষের গঠন যথেষ্ট জটিল হয়।

আর আদিতে সত্যিকারের কোষের গঠন কী পরিমাণ জটিল হতে পারে, তা এই সামান্য বর্ণনাতেই কিছুটা অনুমান করা যায়। তাহলে এখানে বিবর্তনবাদীদের বর্তমান থিওরি অনুযায়ী, অত্যন্ত সরল প্রকৃতির কোনো কোষ সর্বপ্রথম সৃষ্টি হয়- এই দাবীর কোনো ভিত্তিই থাকে না। ঠিক এখান থেকেই নাছোড় বিবর্তনবাদীরা দিতে শুরু করেছেন, আর এক মজার ব্যাখ্যা। তাঁরা কেউই প্রাণের প্রাথমিক উৎপত্তি কীভাবে হয়েছে? সেই ব্যাপারে সমাধান দিতে সক্ষম হননি। যদিও গত দেড়শ বছরে, নিজে থেকেই প্রাণের উৎপত্তির ধারণা সম্পর্কে তাঁরা ভিন্ন ভিন্ন অসংখ্য থিওরি দিয়েছেন।

যাঁর প্রত্যেকটাই অসম্পূর্ণ এবং বিতর্কিত থেকে গেছে। এর ফলে বিবর্তনবাদের ব্যাপারে অতি উৎসাহীরা এ নিয়ে আলোচনার সময়, নিজে থেকে প্রাণের উৎপত্তি বা ABIOGENESIS’র সাথে বিবর্তনবাদের সম্পর্ককে অস্বীকার করা শুরু করেন। এক্ষেত্রে তাঁদের নতুন দাবী, চার্লস ডারউইন তাঁর বিবর্তনবাদে প্রাণের উৎপত্তির সম্পর্কে তেমন কোনো কথাই উল্লেখ করেন নি। তবে, তখন তাঁরা এটা ভূলে যান যে, ডারউইনের সময়ে মনে করা হতো- প্রাণের উৎপত্তি স্বতঃস্ফূর্তভাবে হতে পারে। একে বলা হয় Spontaneous Generation।

তো এখানে প্রাণের উৎপত্তি নিয়ে ডারউইনের নতুন করে আর মাথা ঘামানোর দরকারটা কোথায় ছিল? যাই হোক, কথা হলো- প্রাণের উৎপত্তি স্বতঃস্ফূর্তভাবে হতে পারে না বা কীভাবে হওয়া সম্ভব, এর সমাধান কারো কাছে নেই। তাহলে, এখানে একটা প্রশ্ন রেখে দেই- যদি প্রাণের উৎপত্তি স্বতঃস্ফূর্তভাবে হতে না পারে, সেক্ষেত্রে প্রাণের স্বতঃস্ফূর্ত ক্রমবিকাশ কতটা যুক্তিযুক্ত? যদি একজন সৃষ্টিকর্তা একজন মানুষ সৃষ্টি করতে পারেন, তাঁর পক্ষে একটি কুকুর সৃষ্টি করতে বিবর্তনবাদের সহায়তা নিতে হবে কেন? ‘প্রাণের ক্রমবিকাশ’ না ‘প্রাণের ঠিকে থাকা-জনিত দক্ষতার ক্রমবিকাশ’ এই দুটি প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদের সর্বপ্রথম দুটো বিষয় আলাদা করে বুঝতে হবে। প্রথমটি হলো বহুল আলোচিত ‘প্রাণের ক্রমবিকাশ’ আর দ্বিতীয়টি হলো একেবারেই নতুন ‘প্রাণের ঠিকে থাকা-জনিত দক্ষতার ক্রমবিকাশ’। প্রাণের ক্রমবিকাশ বা EVOLUTION: প্রাণের ক্রমবিকাশ নিয়ে উৎসাহী মানুষগুলোর ধারণা, যে সব প্রাণীই একটি নির্দিষ্ট পূর্বপুরুষ বা COMMON ANCESTOR থেকে কোটি কোটি বছরের বিবর্তনের ধারায় বর্তমানের এই পর্যায়ে এসেছে। এবং প্রতিনিয়ত এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রজাতির সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।

যেমন: একটি ভাল্লুক শিকারের খোঁজে পানিতে নামতে নামতে অবশেষে তিমি হয়ে যায়। ফলে প্রকৃতিতে ভাল্লুক থেকে ‘ভাল্লুক’ এবং ‘তিমি’ নামক দুটো প্রজাতির সৃষ্টি হয়। এভাবে একটি থেকে আর একটি- হতে হতে ক্রমেই পৃথিবীতে প্রজাতির সংখ্যা বেড়েই চলছে। এটাই হলো প্রাণের ক্রমায়ণে বেড়ে চলা বা বিকাশ যাত্রা। যাকে বলা হয় প্রাণের ক্রমবিকাশ।

প্রাণের ঠিকে থাকা-জনিত দক্ষতার ক্রমবিকাশ বা SURVIVAL DEVELOPMENT OF LIFE SKILLS: এটার সাথে প্রজাতি থেকে নতুন প্রজাতির উৎপত্তির ফলে প্রকৃতিতে প্রজাতির সংখ্যা বেড়ে চলার কোনো সম্পর্ক নেই। প্রাণের ঠিকে থাকা-জনিত দক্ষতার ক্রমবিকাশ- শুধু প্রত্যেকটি স্বতন্ত্র প্রজাতির ঠিকে থাকার কৌশলের গতিময় অথবা মন্থরভাবে, অবিরাম উন্নতি সাধন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে। যেমন মানুষের কথাই ধরা যাক, এক সময় সে তাঁর চাহিদা মেটানোর জন্য একটি জমিতে যতটুকু ফসল উৎপাদন করত, এখন চাহিদা বাড়ার কারণে সেই জমিতে তিন-চারগুন বেশি ফসল উৎপাদনের পদ্ধতি বের করেছে। এটা তাঁর ঠিকে থাকা জনিত দক্ষতার ক্রমবিকাশ। এ জন্য কিন্তু মানুষটি ঘাস খেয়ে চাহিদা নিবারণের জন্য গরু হয়ে যায় নি, বা সমূদ্রে শিকারের খোঁজে হাঙর হয়ে যায় নি।

বিঃদ্রঃ প্রাণের ঠিকে থাকা-জনিত দক্ষতার ক্রমবিকাশ বা SURVIVAL DEVELOPMENT OF LIFE SKILLS নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করার আছে। পরবর্তী কোনো এক লেখায় সেই চেষ্টা করব, ইনশাল্লাহ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.