আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হকির সংকট বাড়ছেই

হকিতে সংকট কাটছেই না। নতুন নতুন সমস্যা দেখা দেওয়াতে এ খেলার ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মধ্যে দোল খাচ্ছে। অবশ্য এর পেছনে বিশেষ এক মহলের ইন্ধন রয়েছে। যারা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হকিতে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। যাক এমন সংকটের মধ্যেও নির্বাচিত কমিটি বসে নেই।

বড় ধরনের স্পন্সর জোগাড় ছাড়া বিভিন্ন টুর্নামেন্ট মাঠে নামাচ্ছেন। সামনে জাঁকজমকভাবে স্কুল টুর্নামেন্ট পর্দা ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে। আসলে যতই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হোক না কেন, প্রিমিয়ার লিগ মাঠে না নামলে হকির প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যাবে না। কারণ দেশের হকির মূল আকর্ষণই হচ্ছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। এতদিনে এ আসর শেষ হওয়ার কথা ছিল।

অথচ এবার তা হবে কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে লিগ না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলা যায়। এক্ষেত্রে ফেডারেশনকে দোষ দেওয়া যাবে না। জুলাই মাসে দলবদলের তারিখ নির্ধারণ ছিল। কিন্তু মোহামেডান, মেরিনার্সসহ ছয় ক্লাবের আপত্তির কারণে তা হতে পারেনি।

লিগে অংশ নেয় ১০/১২টি ক্লাব। সেখানে যদি ৬ ক্লাবই না খেলার ঘোষণা দেয় তাহলেতো অনিশ্চয়তা দেখা দেবেই। ৬ ক্লাব বরাবরই বলে আসছে তারা বর্তমান কমিটি থাকা অবস্থায় ফেডারেশনের কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেবে না। কেন নেবে না এ ব্যাপারে তারা যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারেনি। তবে এটা স্পষ্ট যে ফেডারেশনের চেয়ারে বসতে না পেরে সেই আক্ষেপে এ পথ বেছে নিয়েছে।

তাদের কেউ কেউতো নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন, শেষ মুহূর্তে বয়কট করাতে অন্যরা নিয়মমাফিক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। অর্থাৎ এটা পরিষ্কার যে ক্ষমতার লোভে বিশেষ মহলটি হকিকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। ১৫ নভেম্বর থেকে প্রিমিয়ার লিগের দলবদলের সাতদিনব্যাপী তারিখ নির্ধারণ করে। আগেই ধারণা করা হয়েছিল এ দলবদল জমবে না। কারণ এখানেও বড় ধরনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

দেশ পরিচিত খেলোয়াড়রা যাতে দলবদলে অংশ না নিতে পারেন সে জন্য তাদের অধিকাংশকে অগ্রিম পেমেন্ট দিয়ে আটকিয়ে রেখেছে। তারা খেলবে না ভালো কথা, কিন্তু আরও ক্লাবতো আছে তারাতো চাইছে অবিলম্বে প্রিমিয়ার লিগ মাঠে নামুক। এখন বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্রে দলবদলে তারাতো খেলোয়াড়ই খুঁজে পাচ্ছে না। তারপর আবার ফেডারেশনের বর্তমান কমিটির অপসারণ চেয়ে সভাপতি এয়ার মার্শাল ইনামুল বারি কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছে। বলা হচ্ছে হকির অচলাবস্থা দূর করতে খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি ও সংগঠকরা এ উদ্যোগ নিয়েছে ।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সামনে তাদের মিছিল করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। বাস্তবে কিন্তু খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতিকে ব্যবহার কর চিহ্নিত ক'জন সুবিধাবাদী সংগঠক এই পথ বেছে নিয়েছে বলে অনেকের ধারণা। এই অবস্থায় হকি যে কোন পথে যাবে তা নিয়ে ক্রীড়াপ্রেমীরা শঙ্কিত। স্মারকলিপি প্রসঙ্গে খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সভাপতি রাসেল খান বাপ্পি বলেন, কারোর ইন্ধন বা ষড়যন্ত্র নয়, আমরা চাই হকির মঙ্গল। তাছাড়া আমরাতো পুরো কমিটির বিলুপ্তি চাচ্ছি না।

শুধুমাত্র সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহর অপসারণ চাচ্ছি। কারণ হকির যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে এটা পুরোটা দায় রহমতউল্লাহ ভাইয়ের। উনি নিজে একজন পরিচিত খেলোয়াড় ছিলেন, অথচ উন্নয়নের বদলে তার হঠকারিতার সিদ্ধান্তে দেশের হকি এখন মরতে বসেছে। আমাদের বিশ্বাস সভাপতি নিজেও ব্যাপারটি উপলব্ধি করছেন। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাধারণ সম্পাদককে সরিয়ে সভাপতি হকির অচলাবস্থা দূর করবেন বলে আশা রাখি।

যদি সভাপতি তাদের প্রত্যাখ্যান করেন, তাহলে কি করবেন? বাপ্পি বলেন, পরবর্তীতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। তবে এতটুকু বলতে পারি রহমতউল্লাহ ভাই সরে যাওয়া না পর্যন্ত আমরা ঘর ফিরব না। ক্রীড়া পরিষদের সামনে আমরা মিছিল করব। এরপর আমরা ও ক্লাব কর্মকর্তারা মিলে আন্দোলন আরও জোরদার করব। কারণ একটা লোকের জন্য দেশের হকি ধ্বংস করা যায় না।

এ ব্যাপারে খাজা রহমতউল্লাহর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, স্মারকলিপি দিতেই পারে। কিন্তু এখানে বাপ্পির উপস্থিতি বা তার বক্তব্য নিয়ে আমার নয় পুরো ফেডারেশনের আপত্তি রয়েছে। কেননা ওতো বিশৃঙ্খলার অভিযোগে হকি অঙ্গন থেকে বহিষ্কৃত। সুতরাং বহিষ্কৃৃত ব্যক্তিরা স্মারকলিপির সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। রহমতউল্লাহ বলেন, আমি ব্যর্থ বা হকিকে ধ্বংস করে দিচ্ছি তা কোনোভাবেই মানবো না।

আমার কাজে সন্তুষ্ট বলেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছি। এখনো আশিরভাগ কাউন্সিলর আমার পক্ষে রয়েছে। সুতরাং কে বা কারা আমার পদত্যাগ চাইছে তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.