আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এটাকে সর্বদলীয় সরকার বলা অনৈতিক

বর্তমানে যে সরকার গঠিত হয়েছে তাকে সর্বদলীয় বলা সম্পূর্ণ অসত্য। সর্বদলীয় সরকারে বিরোধী দলের সদস্য থাকতেই হবে। এখানে বিরোধী দলের একটি সদস্যও নেই। সংবিধানে কোথাও লেখা নেই যে, বিরোধী দল ছাড়া সর্বদলীয় সরকার হতে পারে। আগের মহাজোট সরকারই আছে, শুধু এরশাদ সাহেব তার মন্ত্রীর সংখ্যা বাড়িয়ে নিয়েছেন।

এটাকে সর্বদলীয় সরকার বলা অনৈতিক। গত মঙ্গলবার একুশে টেলিভিশনের টকশো 'একুশের রাত'-এ সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্প ধারার সভাপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এ কথা বলেন।

মনির হায়দারের উপস্থাপনায় তিনি বলেন, যখন পাকিস্তান-ভারত জন্ম নিল তখন মুসলিম লীগ ও কংগ্রেস প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সরকার হয়েছিল। ওইটা ছিল সর্বদলীয়। এখানে যে মহাজোট সরকার আগে ছিল সেই মহাজোট সরকার আজও আছে।

শুধু সম্প্রসারণ ঘটেছে এইচএম এরশাদ সাহেবের দলের। এটা তার রাজনৈতিক কৌশলের ব্যাপার। তিনি বলেন, গোলমালটা প্রধানমন্ত্রী নিজেই বাধালেন। নিয়ম হলো- যখন মন্ত্রীরা পদত্যাগপত্র দাখিল করবেন সেই মুহূর্ত থেকে তার পদ শূন্য হবে। এটাই সংবিধানের কথা।

প্রধানমন্ত্রী সেটা অস্বীকার করলেন। তিনি বললেন- না, তারা এখনো মন্ত্রী আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র না দেবেন ততক্ষণ তারা মন্ত্রী থাকবেন। এটা উনার নিজস্ব ব্যাখ্যা। উনি রাজনৈতিকভাকে বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিতে পারেন।

তবে প্রধানমন্ত্রী হয়ে নিজের মতো করে সংবিধানের ভুল ব্যাখ্যা দিলে সেটা তার জন্য ভালো হবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জোর গলায় বার বার বলেছেন, কোনো অনির্বাচিত সরকার তিনি মানবেন না। একচুলও নড়বেন না। এখন উনি যে তথাকথিত সর্বদলীয় সরকার গঠন করেছেন তার মধ্যে দুইজন অনির্বাচিত ব্যক্তি আছেন। একজন 'প্রাক্তন' আইনমন্ত্রী, আরেকজন 'প্রাক্তন' শিল্পমন্ত্রী।

একজন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এতটা খেলো হওয়া উচিত নয়। বললেন কিছুতেই অনির্বাচিত মানবেন না। ঠিকই অনির্বাচিতদের নিয়ে সরকার গঠন করলেন। বর্তমান মন্ত্রীদের প্রাক্তন বলার কারণ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংবিধানে দেখেছি পদত্যাগপত্র দিলেই পদ শূন্য হয়ে যায়। সেই হিসেবে তারা প্রাক্তন মন্ত্রী।

শুধু তা-ই নয়, তারা যদি একদিনের বেতনও বেশি নেয় তার ব্যবস্থা হবে ভবিষ্যতে। এপিএস, গাড়ির পেট্রলসহ সব সুযোগ-সুবিধা একসময় প্রশ্নের মুখে পড়বে। সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে বিকল্প ধারার সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবই হয়। এইচ এম এরশাদ সাহেব বলেছিলেন, আমি বেঈমানি করে নির্বাচনে গেলে লোকে আমাকে থুথু দেবে। এখন বললেন, না গেলে থুথু দেবে।

অর্থাৎ, তাকে দেখলে থুথু আসবেই। গেলেও আসবে, না গেলেও আসবে। উনার এই সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টা আগেই আমাদের সঙ্গে বৈঠকে কয়েকবার বলেছেন, আওয়ামী লীগ এদেশের সবচেয়ে ঘৃণিত দল। ইংরেজিতে বলেছিলেন। অন্য কারও মুখ থেকে শুনিনি।

উনিই বলেছেন ঘৃণিত আবার সেই ঘৃণিত দলের সঙ্গেই সমঝোতায় চলে গেলেন! এগুলো দেশের লোকজন বোঝে। বিভিন্ন জায়গায় ঝাড়ু মিছিল বের হয়েছে। এই প্রতিক্রিয়া উনার বোঝা উচিত। অনেক অনেক কথা এসেছে যা রাজনীতিবিদদের জন্য লজ্জাজনক। অবশ্য যার নীতিবোধ নেই, অনৈতিকতা তার গায়েই লাগে না।

সে একটা রাজহাঁসের মতো- 'কাঁদার মধ্যে ডুব দিয়া উঠিয়া গেল, কাঁদার পানি সব ঝরিয়া গেল। ' এই লোকটা যদি অনুতপ্ত হয়ে এসে বলেন যে আমি স্বৈরাচার ছিলাম, সেই কলঙ্ক ঘুচাতে চাই। দেশের জন্য কাজ করতে চাই। তাকে কি চট করে অবিশ্বাস করা যায়?

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.