আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুইডেনে কয়েদি না থাকায় কারাগার বন্ধ

কয়েদির অভাবে কারাগার বন্ধ একথা কি বিশ্বাস করা যায়? হ্যাঁ যায় কারন সুইডেনের কারাগারগুলোতে এমন ঘটনাই ঘটেছে। কোন কয়েদি নাই তাদের কারাগারে।

এমন ঘটনা যদি আমাদের দেশে ঘটতো। তাহলে আমরা কত শান্তিতে বসবাস করতে পারতাম। থাকতো না কোন হিংসা-বিদ্বেষ।

থাকতো না চুরি-ডাকাতি, খুন-খারাবি। কাওকে গাড়ির মধ্যে জীবন্ত দগ্ধ হতে হতো না। কোন শিশুকে অকালে প্রাণ হারাতে হতো না। কোন বধুকে পুড়িয়ে মারা হতো না।

কিন্তু আমাদের দেশের প্রতিটি কারাগার ধারণ ক্ষমতার বাইরে।

কারণ একটিই তা হলো অপরাধীর সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছেই। এমন কোন দিন নেই পত্রিকার পাতায় হত্যা, নির্যাতন, চুরি, ডাকাতির খবর পাওয়া যায় না।

কয়েক বছর ধরেই সুইডেনের কারাগারগুলোতে কয়েদির সংখ্যা কমছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে হঠাৎ করে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্য রকম কমেছে। এ অবস্থায় বাড়তি কারাগার রাখা প্রয়োজন মনে করছে না সেদেশের সরকার।

ইতিমধ্যে কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু কারাগার বন্ধ করে দিয়েছেন।

কারাগারে কয়েদি কমার বিষয়ে স্টকহোম ইউনিভার্সিটির অপরাধ বিজ্ঞানবিষয়ক অধ্যাপক হানস ভন হোফার জানান, প্রথমবার চুরি, মাদক গ্রহণ কিংবা সহিংসতার মতো ছোটখাটো অপরাধের লঘু শাস্তির সরকারি নীতি কয়েদি সংখ্যা কমার একটা বড় কারণ হতে পারে। ২০০৪ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সুইডেনে যত কয়েদি কমেছে তার মধ্যে ৩৬ শতাংশ চুরি সংক্রান্ত অপরাধের, ২৫ শতাংশ মাদকসংক্রান্ত ও ১২ শতাংশ সহিংস কার্যক্রম সংক্রান্ত। সরকারি হিসাবে, ২০০৪ সালে সুইডেনে কয়েদির সংখ্যা সর্বোচ্চ ছিল ৫ হাজার ৭২২ জন। ২০১২ সালে তা কমে চার হাজার ৮৫২ জনে দাঁড়ায়।

কারাগার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি বছর তারা ৪টি কারাগার বন্ধ করে দিচ্ছে। কারাপ্রধান নিলস ওবার্গ বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, কয়েদির সংখ্যা স্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। এখন আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে কারাগার আংশিক বন্ধ করে দেয়ার। এগুলো এখন আমাদের দরকার নেই। ’

কারাপ্রধান ওবার্গ আরও জানান, সুইডেনে কারাগারের সংখ্যা ২০০৪ সাল থেকে প্রতি বছর প্রায় ১ শতাংশ কমছিল।

২০১১ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে কমার হার বেড়ে ৬ শতাংশে দাঁড়ায়। চলতি বছর ও আগামী বছরগুলোতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

ওবার্গ বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবেই মনে করি, কয়েদিদের পুনর্বাসন ও তাদের অপরাধে পুনরায় লিপ্ত হওয়া প্রতিরোধে আমরা যে ব্যবস্থা নিয়েছি তার একটা প্রভাব রয়েছে। ’ ওবার্ড আরো জানান, ভবিষ্যতে কয়েদির সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে তারা দুটি কারাগার হাতে রেখেছে। এগুলো প্রয়োজনে আবারও চালু করা হবে।

সুইডেনের উদার কারাব্যবস্থা এবং কয়েদিদের পুনর্বাসনের প্রতি বিশেষ নজর কয়েদিদের সংখ্যা কমার পেছনে আংশিক হলেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সুইডেনের সুপ্রিম কোর্ট ২০১১ সালে এক রায়ে মাদকসংক্রান্ত অপরাধের লঘু শান্তির বিধান দেয়।  

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.