আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ষণ এবং ধর্ষণ-হত্যার মহামারী:প্রতিকার কি কিছু আছে?

১)ভারতে ধর্ষণ এবং ধর্ষণ-হত্যা মহামারী রূপ নিয়েছে(বাংলাদেশেও এর প্রকোপের কমতি নেই)। এ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও উত্তাপ ছড়াচ্ছে। কেউ মেয়েদের পোষাক ও চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের পক্ষে মত দিচ্ছেন;আবার অন্যেরা নারীর অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে এর বিরুদ্ধে বলছেন। এই যখন অবস্থা,তখন এর সুরাহা কি উপায়ে হতে পারে। অনেকে অনেক রকম পথ বাতলাতে চাইবেন;যেমন কেউ কেউ ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড বা তাকে খোজা করে দেয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন;কিন্তু তাতে কি সুরাহা নিশ্চিত হতে পারবে?আপনাদের মতে এ বিপদের উত্তরণ কিভাবে হতে পারে? ২)ভারতে ব্যাপকহারে কন্যাশিশু ভ্রুণ বিনাশকে আরেকটি নিষ্ঠুরতা হিসাবে দেখা হয়।

আমি অনাগত কন্যাটির দিক থেকে এটাকে ইতিবাচকই মনে করি। কারণ সেই মেয়েটিকে পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্র বোঝা মনে তো করেই;এমনকি সে নিজেকেই নিজের বোঝা মনে করতে পারে। কোন গ্যারান্টি নেই যে কন্যাশিশুটিকে দামিনীর ভাগ্য বরণ করতে হবে না। তাহলে এই ভ্রুণ বিনাশে সে কিন্তু যাবতীয় সম্ভাব্য প্রতিকূলতা ও বিপর্যয় থেকে পরিত্রাণ পেয়ে গেল। ভ্রুণ বিনাশকে আমি সমর্থন করি না মায়ের শারীরিক নেতিবাচকতা বিবেচনায়।

কারণ গর্ভধারণের যে পর্যায়ে লিঙ্গ নির্ধারণ সম্ভব হয়,সে ‍অবস্থায় গর্ভপাত ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। শুধু এ কারণেই আমি লিঙ্গ-পরিচয়সম্পন্ন ভ্রুণ বা যে কোন ভ্রুণ বিনাশের ঘোর বিরোধী। তাছাড়া ভ্রুণকে আমি কোন জীব মনে করি না-আমার কোন অনুভূতিও নেই। তাহলে পুরষ এবং নারীর শরীরের যাবতীয় শুক্রাণূ-ডিম্বাণূর জন্যও আমাকে আহাজারি করতে হয়। ৩)নারীর গর্ভধারণরোধই এই বিপর্যয়রোধের পরম উপায়।

তাহলে দেখুন কোন মেয়েকে আর ধর্ষিতার ভাগ্য বরণের ঝুঁকিতে পড়তে হবে না। আপনি প্রশ্ন করবেন তাহলে তো পুরুষসন্তান জন্মও তো বন্ধ হয়ে যাবে। আরে সেটা তো আরও ভাল হলো। কোন সম্ভাব্য ধর্ষক-হন্তারকও আর জন্ম নেয়ার চান্সই পেল না। ৪)এমন আইনের কথা বলা হয় যে,ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড অথবা খোজা করে দেয়া যায়।

ধর্ষণ বা ধর্ষণ-হত্যা ঘটে যাওয়ার পরে এই ব্যবস্থা ভিকটিমটির কোন কাজে আসবে?সে কি পুর্বাবস্থা ফিরে পাবে? ৫)নারীর পোষাক এবং চাল-চলন বিষয়ক স্বাধীনতা এক্ষেত্রে বিতর্কের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। স্পোর্টস এবং সিনেমা-নাচ ইত্যাদিতে নারীর আকর্ষণীয় দেহ সৌষ্ঠবকে আবৃত করার চেয়ে বিপজ্জনকভাবে অনাবৃত এবং উদ্ভাসিত করার জন্যই পোষাকের যে পরা এবং না পরা তার বিপরীতে পুরুষের অনাকর্ষণীয় রুক্ষ দেহকে নাচ-গান সিনেমাতে হাত আর মুখ বাদে সবকিছুকে ঢেকে দেয়া এবং স্পোর্টসেও শরীরের ‍অনেকাংশই ঢেকে রাখাকে এক রকম লজ্জায় লুকিয়ে পড়ার মতেই মনে হয়;যেখানে নারী সদর্পে তার দেহবল্লরীর উদ্ভাসে উন্মুখ। আমি খুবই কনফিউজড যে নারীর এই দেহ ‍অনাবৃতকরণময় এবং পুরুষের ঢাকাঢাকিময় পোষাকের নির্ধারক কে বা কারা?যদি এটা সংশ্লিষ্ট ক্ষমতাবানদের বিশেষ করে পুরুষের চাপিয়ে দেয়া হয় এবং নারী সাগ্রহে বা বাধ্য হয়ে সেটাতে সমর্পিত হয় তাহলে যেমন কিছু বলার নেই, আবার নিজেকে আকর্ষণীয় ও লোভনীয় করার জন্য স্বেচ্ছায় সাগ্রহে সাজগোজের নামে এহেন স্বাধীনতার আশ্রয় নেয় তাহলেও কিছু করার বা বলার নেই বলেই আমি মনে করি। কারণ আমি ব্যক্তি ও নারী-স্বাধীনতাকেও সমুন্নত দেখতে চাই। তাহলে নারীর প্রতি সহিংসতা নিরসনের উপায় কি? ৬)যদি পুরষকে মৃত্যুদণ্ড বা খোজা করা একটা সমাধান হয়, তবে যেহেতু কোন পুরুষটি একাজ করবে তা চিহ্নিত করার উপায় নেই বা ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে যে ব্যবস্থাই নেয়া হোক না কেন ভিকটিমের তো কোন remedy হওয়ার উপায় নেই,তাই ক)ধর্ষণক্ষম প্রত্যেক পুরুষকে খোজা করে দেয়া যেতে পারে;খ)তা যখন সম্ভব নয় তখন প্রত্যেক পুরুষশিশুকে জন্মের সাথে সাথে খৎনার মতো খোজা করে দেয়া যেতে পারে;কিন্ত বাস্তবে তাও সম্ভব নয়।

৭)তাহলে সমাধান কি?এই সমাধান পরমভাবে নারীর নিয়ন্ত্রনে। এই একটি মাত্র ভুবন যেখানে সে একচ্ছত্র ‍অধিস্ঠাত্রী। জরায়ূর অধিকার নারীর একান্ত নিজস্ব। তাকে গর্ভধারণ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাহলে কোন ধর্ষিতাও খুজে পাওয়া যাবে না;কোন ধর্ষকও আর জন্ম নেবে না।

৮)তা হলে আমেরিকার স্কুলে বেপরোয়া গুলিবর্ষণে কোন কিশোরও কুড়িটি শিশুসহ সাতাশটি মানবসন্তানকে খুন করে নিজেও খুন হবে না। এ ঘটনাটিই সেখানে প্রথম নয়। কিশোরটি স্কুলে যায় তার মাকে খুন করতে-যে সেখানে শিক্ষক। সন্তানের জন্য পিতা-মাতাকে বা পিতা-মাতার জন্য সন্তানকে হত্যা করা মোটেই অস্বভাবিক কোন ব্যাপার নয় বলে আমি মনে করি। শুধু দরকার পরিস্থিতির।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।