আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পূর্ণিমা তিথিতে সুন্দরবন সাফারি (১২ - ১৬ ডিসেম্বর'১৩)



সুন্দরবন নামটি শুনলেই নিশ্চিতভাবে সবার মনে যে কথাটি সবার আগে আসে সেটা হলো “রয়েল বেঙ্গল টাইগার”। রাজকীয় এ বাঘ সারা পৃথিবীতে সমাদৃত। এই বন পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। সুন্দরবনকে জালের মত জড়িয়ে রেখেছে সামুদ্রিক স্রোতধারা, কাদা চর এবং ম্যানগ্রোভ বনভূমির লবণাক্ততাসহ ছোট ছোট দ্বীপ। আমাদের বাংলাদেশের জন্য প্রাকৃতিক সুরক্ষা দেয়ালের মতো কাজ করছে সুন্দরবন।

বিভিন্ন ধরনের জীব জন্তুতে পরিপূর্ণ এ বন। ইকো ট্রাভেলার্স আয়োজন করেছে সুন্দরবন সাফারির। চলুন তাহলে সবাই মিলে ঘুরে আসি বাংলাদেশের সুন্দর এই বন সুন্দরবন, যেখানে প্রকৃতি তার সবটুকু রূপ নিয়ে অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। Facebook event চাঁদের অবস্থানের ওয়েব লিংক আমাদের সুন্দরবন ভ্রমণকালীন সময়ে চাঁদের অবস্থান ভ্রমণের সময়: ১২ ডিসেম্বর রাত হতে ১৬ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত খরচ : জন প্রতি ৯০০০ টাকা রেজিষ্টেশনের শেষ তারিখ: ৩০ নভেম্বর ২০১৩ রেজিষ্টেশন ও বিস্তারিত: ০১৭১৪৪৪৪৩৩০ যা দেখব: ** করমজল ** হাড়বাড়িয়া ** কচিখালি ** কটকা ** বাদামতলা ওয়াচ টাওয়ার ** জমতলা সি বিচ ** টাইগার পয়েন্ট ** দুবলার চর ** ডিমের চর ** মেহের আলী ** হিরণ পয়েন্ট ******** স্পট গুলো দেখা নির্ভরকরবে ,সময়,নিরাপত্তা ও আবহাওয়ার উপর,সময় থাকলে নতুন স্পট সংযোজন আর প্রয়োজনে স্পট বিয়োজন করা হবে*** যা করব: জঙ্গল ট্রাকিং, ছোট নৌকা নিয়ে সরু খালে ভ্রমণ,সমুদ্র স্নান আর স্পটগুলোতো আছেই। খরচ : জন প্রতি ৯০০০ টাকা - ১০ বছরের নীচে শিশুদের জন্য : বাবা/মার সাথে একই বেডে থাকলে ৪০০০টাকা।

আর পৃথক বেড নিলে ৯০০০টাকা। ছবিঃ সুন্দরবন নামকরণঃ বাংলায় "সুন্দরবন"-এর আক্ষরিক অর্থ "সুন্দর জঙ্গল" বা "সুন্দর বনভূমি"। সুন্দরী গাছ থেকে সুন্দরবনের নামকরণ হয়ে থাকতে পারে, যা সেখানে প্রচুর জন্মায়। অন্যান্য সম্ভাব্য ব্যাখ্যা এরকম হতে পারে যে, এর নামকরণ হয়তো হয়েছে "সমুদ্র বন" বা "চন্দ্র-বান্ধে (বাঁধে)" (প্রাচীন আদিবাসী) থেকে। সংক্ষেপে সুন্দরবনঃ বনভূমির বর্তমান আয়তন প্রায় ৪,১১০ বর্গ কি.মি.।

এর প্রায় ১,৭০০ বর্গ কি.মি. এলাকা জলাভূমি। এখানে আছে চারটি প্রশাসনিক রেঞ্জ; বুড়িগোয়ালিনি, খুলনা, চাঁদপাই এবং শরণখোলা। ফরেস্ট স্টেশন আছে ১৬ টি। ১৮৭৫ সালে প্রথম এই বনকে সংরক্ষিত বন হিসাবে ঘোষণা করা হয়। সুন্দরবনের প্রায় ৩২,৪০০ হেক্টর এলাকাকে অভয়ারণ্য হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এখানে আছে প্রায় ৫০ প্রাজাতির স্তন্যপায়ী, ৩২০ প্রজাতির আবাসিক ও পরিযাযী পাখি, প্রায় ৫০ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর এবং প্রায় ৪০০ প্রজাতির মাছ। সুন্দরবন মেঘনা নদী যেখানে সাগরে মিশেছে তার পশ্চিম উপকূল থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত। ১৯৯৭ সালে সুন্দরবন ইউনেস্কো ওয়ার্ড হেরিটেজের মর্যাদা পায়। যদিও সুন্দরবন একটি অখন্ড বনভূমি কিন্তু ইউনেস্কো ওয়ার্ড হেরিটেজে বাংলাদেশের অংশটি সুন্দরবন আর ভারতীয় অংশটি সুন্দরবন ন্যাশনাল পার্ক নামে চিহ্নিত। আমাদের যাত্রাপথঃ  ১২ডিসেম্বর’২০১৩, বৃহস্পতিবারঃ রাত ০৯.০০ টায় বাস যোগে মংলার উদ্দেশ্যে রওনা।

 ১৩ডিসেম্বর’২০১৩, শুক্রবারঃ সকালে মংলা পৌঁছানো। দ্রুত জাহাজে আরোহণ। শুরু হবে আমাদের জাহাজ যোগে সুন্দরবন সাফারি। প্রথমে যাবো করমজল। সেখান থেকে হাড়বাড়িয়া হয়ে কচিখালি।

কচিখালিতে রাত্রি যাপন।  ১৪ডিসেম্বর’২০১৩, শনিবারঃ ভোরবেলা শুরু হবে কচিখালি থেকে জঙ্গল ট্রাকিং কের কটকা । যাবার পথে দেখবো কটকা বন, বাদামতলা ওয়াচ টাওয়ার, জামতলা সী বিচ, টাইগার পয়েন্ট। কটকা থেকে যাবো দুবলার চর। এরপর ডিমের চর, মেহের আলী হয়ে হিরণ পয়েন্ট।

হিরণ পয়েন্টে আমরা রাতে থাকবো।  ১৫ডিসেম্বর’২০১৩, রবিবারঃ হিরণ পয়েন্টে বেড়িয়ে আমরা রওনা দেবো খুলনার উদ্দেশ্যে। বাসে রওনা দেবো ঢাকার পথে।  ১৬ডিসেম্বর’২০১৩, সোমবারঃ সকালে ঢাকা পৌঁছাবো। ছবিঃ সুন্দরবন কি কি দেখব আমরাঃ করমজলঃ সুন্দরবনের পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের অধীনে করমজল পর্যটন কেন্দ্র।

নদী পথে খুলনা থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার এবং মংলা থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে এ পর্যটন কেন্দ্রটির অবস্থান। একটি ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র ছাড়াও এখানে আছে হরিণ ও কুমির প্রজণন ও লালন পালন কেন্দ্র। দিনে দিনে যারা সুন্দরবন ভ্রমণ করতে চান তাদের জন্য আদর্শ জায়গা এটি। মংলা থেকে ইঞ্জিন নৌকায় চড়লে করমজলের জেটিতে পৌঁছা যাবে এক থেকে দেড় ঘন্টায়। পর্যটন কেন্দ্রটির শুরতেই মাটিতে শোয়ানো বিশাল আকৃতির মানচিত্র সুন্দরবন সম্পর্কে সাম্যক ধারণা দেবে।

মানচিত্রটিকে পেছনে ফেলে বনের মধ্যে দক্ষিণে চলে গেছে আঁকা-বাঁকা কাঠের তৈরি হাঁটা পথ। পথটির নাম মাঙ্কি ট্রেইল। এই নামের স্বার্থকতা খুঁজে পাওয়া যায় ট্রেইলে পা ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই। পুরো ট্রেইল জুড়েই দেখা মিলবে সুন্দরবনের অন্যতম বাসিন্দা রেসাস বানরের। পথের দুই ধারে ঘন জঙ্গল।

এ বনে বাইন গাছের সংখ্যাধিক্য। কাঠের পথটি কিছু দূর যাবার পরে হাতের বাঁয়ে শাখা পথ গিয়ে থেমেছে পশুরের তীরে। শেষ মাথায় নদীর তীরে বেঞ্চ পাতানো শেড। মূল পথটি আরো প্রায় আধা কিলোমিটার দক্ষিণে গিয়ে ছোট খালের পাড়ে থেমেছে। পথের মাথায় এখানেও গোলপাতার ছাউনি দেয়া আরো একটি শেড।

সেখান থেকে পশ্চিম মূখী ইট বাঁধানো একটি সরু পথ চলে গেছে বনের ভেতর। আগেই বলা হয়েছে কাঠের পথটি চলতে চলতে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়বে বানরদের চঞ্চলতা। এখানকার বানরেরা পর্যটকদের খুব কাছাকাছি চলে আসে। তবে ওদের বিরক্ত করতে নেই। তাহলে উপর চড়াও হয়ে বসতে পারে যে কারো উপরে।

ছবিঃ করমজল মাঙ্কি ট্রেইল কাঠের তৈরি ট্রেইলে ভ্রমণ শেষে এবার একই পথে ফিরে আসুন মাঙ্কি ট্রেইলে প্রবেশ পথের গোড়ায়। সেখান থেকে সামান্য পশ্চিম দিকে হরিণ ও কুমিরের প্রজণন কেন্দ্র। শুরতেই চোখে পড়বে চিড়িয়াখানার মতো খাঁচায় ঘেরা খোলা জায়গা। ভেতরে কতগুলি চিত্রা হরিণ। খাঁচার ভেতরে পশ্চিম কোনে ছোট আরেকটি খাঁচা।

ভেতরে কয়েকটি রেসাস বানর। সামনেই ছোট ছোট অনেকগুলি চৌবচ্চা। কোনটিতে ডিম ফুটে বের হওয়া কুমির ছানা, কোনটিতে মাঝারি আকৃতির আবার কোনটিতে আরো একটু বড় বয়সের লোনা জলের কুমিরের বাচ্চা। একেবারে দক্ষিণ পাশে দেয়াল ঘেরা বড় পুকুরটিতে বয়সী কুমির আবাস। পুকুরের পশ্চিম পাশের দেয়ালেই বাইরে ছোট্ট একটি ওয়াচ টাওয়ার, উপর থেকে এসব দেখবার জন্য।

ছবিঃ হাড়বাড়িয়া ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র হাড়বাড়িয়াঃ পশুর নদীর তীরে হাড়বাড়িয়ার অবস্থান। হাড়বাড়িয়া হলো সুন্দরবনের সবচেয়ে সাজানো-গোছানো ফরেস্ট অফিস। বন বিভাগের এমন সুন্দর অফিস খুব একটা চোখে পড়ে না। এখানে ট্যুরিস্টদের জন্য বর্ণিল ছাউনি অপেক্ষা করছে সবুজ গালিচা বিছিয়ে। এখানে রয়েছে অসংখ্য ফল-ভর্তি গোলপাতা, গেওয়া ফলের বিশাল সমাহার।

এখানে কাঠের ব্রিজটা দিয়ে হাড়বাড়িয়ার মূল বনে প্রবেশ করতে হবে। এটা বাঘের রাজ্য। হাড়বাড়িয়ার মূল সৌন্দর্য হলো ওয়াচ টাওয়ার, যেটায় উঠলে পুরো হাড়বাড়িয়া একসঙ্গে দেখা যায়। দেখে মনে হবে, যেন বিমান থেকে সুন্দরবন দেখছেন। টাওয়ারটির দুই পাশ দিয়ে বনের ভেতরে ঢোকার জন্য সরকারিভাবেই দুটো রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে, সেগুলো দেখে কার না লোভ জাগে বাঘ-হরিণের সুন্দরবনে হারিয়ে যেতে! কথিত আছে, এই টাওয়ারের নিচে নাকি বাঘ বিশ্রাম নিতে আসে।

এই বনটা আসলেই অসাধারণ সুন্দর। যেদিকে তাকানো যাই শুধু সুন্দরী গাছ, মাথার ওপর সুন্দরী গাছের ছায়া, হাতে-গালে ডালের আলতো ছোঁয়া নিমিষেই ভয়ডর সব ঝেঁটিয়ে দূর সাগরে নিয়ে ফেলবে। প্রায় দুই ছবিঃ হাড়বাড়িয়া কাঠের ব্রিজ কিলোমিটার লম্বা এই রাস্তা মূলত কাঠের একটা সেতু। চোরাই যে সুন্দরী কাঠগুলো বন বিভাগ আটক করে, সেগুলো দিয়েই বানানো হয়েছে নয়নাভিরাম এই পথটি, যাতে করে বনের মাটিতে পা না রেখেও আপনি অনায়াসে ঘুরতে পারেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ম্যানগ্রোভ বনে। এ পথ দিয়ে যেতে যেতে আপনার একবারও মনে হবে না যে আপনার ঠিক পেছনেই বাঘ থাকতে পারে।

সুন্দরীগাছ নিজেকে সাজিয়ে রেখেছে লোভনীয় করে। লম্বা এই রাস্তায় মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নেওয়ারও নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। রাস্তার শেষ মাথায় মাটির যে পথটি চলে গেছে বনের ভেতরে, সেদিকে যাওয়া বারণ। মাটির রাস্তায় একটা সাইনবোর্ড লেখা আছে ‘বাঘ হইতে সাবধান’। হাড়বাড়িয়ায় একটা বিশাল পুকুর আছে, পুকুরের ওপর আছে ট্যুরিস্টদের জন্য বিশ্রামের জায়গা, কাঠের ব্রিজ দিয়ে কিছুক্ষণ হেঁটে সেই ছাউনিতে যেতে হয়।

নানা রকমের ফুল আর নারকেলগাছে সাজানো শান বাঁধানো এই পুকুরে গোসল করা নিষেধ, কারণ এই পুকুরে বাঘ প্রায় প্রতিদিনই পানি খেতে আসে। ভাগ্য ভালো হলে সুন্দরবনের বিখ্যাত চিত্রা হরিণও নজরে পড়বে আপনার। ছবিঃ হাড়বাড়িয়া ওয়াচ টাওয়ার কচিখালিঃ কচিখালি মংলা থেকে প্রায় ১০০কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত। এটি কটকার পাশাপাশি একটি অন্যতম আকর্ষনীয় স্থান। সমুদ্র সৈকত এর প্রধান আকর্ষন ।

এ স্থানে চলতে গেলে সাধারনতঃ একটু ভয় ভয় মনে হবে, কিন্তু দুঃসাহসী পর্যটকদের জন্য খুব মনোমুগ্ধকর ও আকর্ষনীয়। এখানে রয়েছে একটি অভাবনীয় সুন্দর ছবিঃ কচিখালি ও নিরিবিলি সমুদ্র সৈকত যার সৈন্দর্য বর্ণনাতীত। মাঝে মাঝে এ সৈকতে বাঘের বিচরন লক্ষ করা যায়। পর্যটকদের সুবিধার জন্য এখানে বন বিভাগের একটি রেষ্ট হাউস আছে যা পর্যটকগণ ভাড়া দিয়ে ব্যবহার করে থাকেন। জামতলা সী বিচঃ জামতলা সৈকতটি নির্জন এবং পরিচ্ছন্ন।

পথের মধ্যে বিভিন্ন আকারের অনেক জাম গাছ দেখা যায়, যা থেকে সৈকতটির নামকরণের সার্থকতা পাওয়া যায়। । বেলাভূমি জুড়ে দেখা যায় কাঁকড়াদের শিল্পকর্ম। ছবিঃ জামতলা সী বিচ বাদামতলাঃ বাদামতলা একটি ছোট সী বিচ। জামতলা ওয়াচ টাওয়ার থেকে এর দূরত্ব ৩কি.মি.।

বাদামতলা অত্যন্ত নির্জন এক সমুদ্র সৈকত। সেখানে আছড়ে পড়া সামুদ্রিক ঢেউ পর্যটকদের মন কাড়বে। শীতকালে বাদামতলার সৈকতে অজস্ত্র বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায়। বাদামতলায় পরিবেশ বিভাগের আওতায় একটি ক্যাম্প নির্মিত হয়েছে। শীত মওসুমে এখানে সন সংগ্রহের জন্য শ্রমিক সমাগম ঘটে, তারা সন ক্ষেতের মাঝেই অস্থায়ী ভাবে অবস্থান করে থাকে।

এখানে বানর ও হরিণের দেখা মেলে। ছবিঃ বাদামতলা ডিমের চরঃ কচিখালি থেকে পূর্ব- দক্ষিণে তাকালে গাছে ভরপুর দূরে যে ছোট্ট দ্বীপটি দেখা যায় তার নাম ডিমের চর। ডিম্বাকৃতি বলেই এর নাম ডিমের চর। এখানে দেখা মেলে বিভিন্ন রকমের পাখি। কয়েক বছর হলো এখানে চলে এসেছে হরিণেরাও।

সাম্প্রতিক সময়ে বাঘের পায়ের ছাপও দেখেছেন কেউ কেউ। কটকাঃ সুন্দরবনের দক্ষিণ পূর্বকোণে অবস্থিত কটকা। সুন্দর বনের আকর্ষনীয় স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম এ কটকা। মংলাবন্দর থেকে প্রায় ৯০কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত । এখানে বন বিভাগের একটি রেস্ট হাউস আছে।

সামনেই দেখা যায় সাগরের অথৈ জল রাশির বিশাল বিশাল ঢেউ। এর আশ পাশে রয়েছে অসংখ্য ছোট বড় খাল। এসব খালে নৌকা নিয়ে ভ্রমন খুবই মজাদার। প্রকৃতির রূপ ও বিচিত্র রহস্যময় অভিজ্ঞতা অর্জনের এক অপুর্ব সুযোগ। খালের ধারে দেখা যায় দলে দলে চিত্রল হরিণ চরে বেড়াতে।

এছাড়া বানর, উদবিড়াল ও বন মোরগ দেখা যায়। মাঝে মাঝে বাঘের গর্জনও শোনা যায়। অন্ধকার রাতে লক্ষ কোটি জোনাকীর আলোর মেলা মুগ্ধ ও ছবিঃ কটকা বিমোহিত করে তোলে। সব মিলিয়ে কটকা একটি সৌন্দর্য উপভোগ করার স্থান । দুবলার চরঃ চাঁদপাই রেঞ্জের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দুবলার চর।

কুঙ্গা ও মরা পশুর নদের মাঝে দুবলা একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। এখানে লাল বুক মাছরাঙা, মদনটাক পাখির দেখা মেলে। এখানকার সৌন্দর্যের একটি দিক হচ্ছে হরিণের ঘাস খাবার দৃশ্য। ছবিঃ দুবলার চরে শুঁটকি শোকানোর দৃশ্য দুবলার চর মূলত জেলে গ্রাম। মাছ ধরার সঙ্গে চলে শুঁটকি শোকানোর কাজ।

বর্ষা মৌসুমের ইলিশ শিকারের পর বহু জেলে চার মাসের জন্য সুদূর কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বাগেরহাট, পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা থেকে ডেরা বেঁধে সাময়িক বসতি গড়ে সেখানে। মেহেরআলীর খাল, আলোরকোল, মাঝেরচর, অফিসকেল্লা, নারিকেলবাড়িয়া, মানিকখালী, ছাফরাখালী ও শ্যালারচর ইত্যাদি এলাকায় জেলে পল্লী স্থাপিত হয়। এই চার মাস তারা মাছকে শুঁটকি বানাতে ব্যস্ত থাকেন। এখান থেকে আহরিত শুঁটকি চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জের পাইকারী বাজারে মজুদ ও বিক্রয় করা হয়। সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের সদর দপ্তর বাগেরহাট থেকে মাছ সংগ্রহের পূর্বানুমতিসাপেক্ষে বহরদার ও জেলেরা দুবলার চরে প্রবেশ করে থাকেন।

দুবলার চর থেকে সরকার নিয়মিত হারে রাজস্ব পেয়ে থাকে। প্রতি বছর বিএলসি বা বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট, ডিএফসি বা ডেইলি ফুয়েল (জ্বালানি কাঠ) কঞ্জামশন ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় বন বিভাগকে রাজস্ব প্রদান করে মৎস্য ব্যবসায়ীগণ সুন্দরবনে ঢোকার অনুমতি পান, এছাড়া আহরিত শুঁটকি মাছ পরিমাপ করে নিয়ে ফিরে আসার সময় মাছভেদে প্রদান করেন নির্ধারিত রাজস্ব। ছবিঃ দুবলার চরে হরিণের ঘাস খাবার দৃশ্য প্রতি বছর কার্ত্তিক মাসে (খ্রিস্টীয় নভেম্বর) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাসমেলা এবং পূণ্যস্নানের জন্যও দ্বীপটি বিখ্যাত। যদিও বলা হয়ে থাকে, ২০০ বছর ধরে এ রাসমেলা হয়ে চলেছে , তবে জানা যায়, ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে হরিচাঁদ ঠাকুরের এক বনবাসী ভক্ত, নাম হরিভজন (১৮২৯—১৯২৩), এই মেলা চালু করেন। প্রতিবছর অসংখ্য পুণ্যার্থী রাসপূর্ণিমাকে উপলক্ষ করে এখানে সমুদ্রস্নান করতে আসেন।

দুবলার চরে সূর্যোদয় দেখে ভক্তরা সমুদ্রের জলে ফল ভাসিয়ে দেন। কেউবা আবার বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ভজন-কীর্তন গেয়ে মুখরিত করেন চারপাশ। দুবলার চরের রাসমেলায় স্থানীয় লোকজন ছাড়াও দূর-দূরান্তের শহরবাসী এমনকি বিদেশি পর্যটকেরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে থাকেন। তিনদিনব্যাপী এ মেলায় অনেক বিদেশী পর্যটকেরও সমাগম হয়। হিরণ পয়েন্টঃ হিরণ পয়েন্ট, সুন্দরবনের দক্ষিণাংশের একটি সংরক্ষিত অভয়ারণ্য।

এর আরেক নাম নীলকমল। প্রমত্তা কুঙ্গা নদীর পশ্চিম তীরে, খুলনা রেঞ্জে এর অবস্থান। হিরণ পয়েন্ট ইউনেস্কো ঘোষিত অন্যতম একটি বিশ্ব ঐতিহ্য। হিরণ পয়েন্ট একটি অভয়ারণ্য হওয়ায় এই স্থান অনেক বাঘ, হরিণ, বানর, পাখি এবং সরিসৃপের নিরাপদ আবসস্থল। সুন্দরবন এলাকায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখার অন্যতম একটি স্থান হলো এই হিরণ পয়েন্ট।

এখানে দেখা পাওয়া যায় চিত্রা হরিণ, বন্য শুকরের; পাখিদের মধ্যে ছবিঃ হিরণ পয়েন্টে চিত্রা হরিণ আছে সাদা বুক মাছরাঙা, হলুদ বুক মাছরাঙা, কালোমাথা মাছরাঙা, লার্জ এগ্রেট, কাঁদা খোঁচা, ধ্যানী বক প্রভৃতি। এছাড়া আছে প্রচুর কাঁকড়ার আবাস। আর আছে রঙ-বেরঙের প্রজাপতি। হিরণ পয়েন্ট থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে কেওড়াসুঠিতে রয়েছে একটি ওয়াচ ছবিঃ হিরণ পয়েন্টে কুমির ছবিঃ হিরণ পয়েন্টে মাছরাঙা সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষায় যা করতে হবে ভ্রমণের সময়ঃ  সুন্দরবন “No Plastic Zone”, তাই কোন প্রকার প্লাস্টিক সাথে নেবেন না।  খাবারের উচ্ছিষ্ট, যে কোন ধরনের প্যাকেট, ময়লা নদী বা বনে ফেলবেন না।

ময়লা- আবর্জনা জাহাজের নির্দিষ্ট স্থানে ফেলবেন।  উচ্চ মাত্রার কোন শব্দ (মাইক/ স্পিকার ব্যবহার) করবেন না।  দলছুট হয়ে বনের ভিতরে প্রবেশ করবেন না।  যথাযথ অনুমতি ছাড়া বনের গভীরে প্রবেশ করবেন না।  কোন প্রাণিকে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না।

 কোন প্রাণিকে বিরক্ত করবেন না।  কোন প্রাণিকে শিকারের চেষ্টা করবেন না। ছবিঃ সুন্দরবনের সন্ধ্যা কি কি নেবেন আপনার সাথেঃ ১. ব্যাগ ২. গামছা ৩. কম্বল, শীতের কাপড় ৪. অতিরিক্ত দুই সেট কাপড় ৫. পানির বোতল ৬. ক্যাপ ৭. কেডস/ বুট/ স্যান্ডেল, মোটা মোজা ৯. গ্লাভস ১০. সানগ্লাস ১১. সানব্লক ক্রিম ১২. টুথপেস্ট, সাবান, শ্যম্পু, টিস্যু ১৩. ব্যক্তিগত ঔষধ ১৪. টর্চ লাইট, অতিরিক্ত ব্যাটারি ১৫. ক্যামেরা, ব্যাটারি, চার্জার ১৬. ছোট মাল্টিপ্লাগ Organized by: Eco Travelers Tropical Tropicana Tower 7/G, 7th Floor, 45 Topkhana Road, Dhaka. Contact No.: +8801714444330 Facebook Grop ওয়েব সাইট

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।