আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যৌতুকের বিরুদ্ধে আলেমদের ভূমিকা রাখতে হ÷

যৌতুক একটি ঘৃণিত প্রথা। বিয়ের সময় কনের পক্ষ থেকে যে অর্থ বা সামগ্রী বরপক্ষকে দিতে বাধ্য করা হয় তা যৌতুক নামে পরিচিত। যৌতুকের কথা সরাসরি কোরআন ও হাদিসে নেই। তৎকালীন আরব সমাজে অধঃপতন ঘটলেও সেখানেও এ ধরনের প্রথা প্রচলিত ছিল না। আমাদের দেশে অন্য ধর্মের কুসংস্কার থেকে মুসলমানদের মধ্যে এটা সংক্রমিত হয়েছে। আমাদের দেশের ভিন্নধর্মাবলম্বী সমাজের কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা এমনভাবে কন্যা বিদায় করেন মাতা-পিতার সম্পত্তিতে তার কোনো উত্তরাধিকার থাকে না। পবিত্র কোরআন ও হাদিসের মৌলিক নির্দেশনার আলোকে যৌতুক নিষিদ্ধ বিষয় বলে বিভিন্ন কারণে মূল্যায়িত হয়। ইসলাম নারীকে আর্থিক সামর্থ্য দানের লক্ষ্যে এবং তার সম্ভ্রমকে সম্মান জানানোর জন্য 'মাহর' নির্ধারিত করে দিয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, নারীদের তাদের মোহরানা সন্তুষ্টচিত্তে দিয়ে দাও।

মহানবী (সা.) বলেছেন, 'যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর মোহরানা নির্ধারণ করল পরিমাণে যাই হোক, কিন্তু মনে মনে তা পরিশোধের ইচ্ছা পোষণ করেনি, সে কিয়ামতের দিন ব্যভিচারী হিসেবে উঠবে।'

প্রচলিত যৌতুক প্রথার ক্ষেত্রে দেখা যায়, মাহর-এর স্থলে উল্টা কন্যাপক্ষকে স্বামীর অবৈধ আবদারের অর্থ ও সম্পদ পরিশোধ করতে হয়। এটা বিদায়াত। ইসলাম এ অন্যায়কে অনুমোদন করে না।

যৌতুক একটি জুলুম। নারীর অভিভাবকের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তার প্রতি যৌতুকের মাধ্যমে অন্যায় করা হয়। মহানবী (সা.) বলেছেন, 'সব জুলুমই হারাম'। সে হিসেবে যৌতুকও ধর্মীয় দৃষ্টিতে অবশ্যই হারাম।

যৌতুক নারী নির্যাতনের উপলক্ষ হিসেবে বিবেচিত। আমাদের দেশে কত নারী যে নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্দহত্যা করেছে তার ইয়ত্তা নেই। যৌতুকলোভী স্বামীদের দ্বারা অসংখ্য নারী নানাভাবে লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হচ্ছেন। অথচ আল্লাহর নির্দেশ, 'স্ত্রীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে'।

যৌতুকের নানা খারাপ দিক রয়েছে। সরকার আইন করেছে যৌতুক প্রথার বিরুদ্ধে। এটা এখন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু এ আইন পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে। যৌতুকের লেনদেনের কথা লিখিত থাকে না বিধায় প্রমাণ করাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। যৌতুক বন্ধে আলেম সমাজ অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারেন। যারা বিবাহ পড়ান এবং নিবন্ধন করেন, তাদের অনেকেই মসজিদের ইমাম। যারা মসজিদের ইমাম নন, তারাও আলেম হিসেবে অভিহিত হওয়ার মতো ধর্মীয় শিক্ষার অধিকারী। ফলে এ কুপ্রথা বন্ধে তারা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন। তারা যৌতুকের বিবাহ বয়কট এবং মুসলি্লদেরও এ বিষয়ে একটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে আসতে পারেন। যাতে যৌতুকলোভীরা সামাজিক প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। এটাই সময়ের দাবি।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.